নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা
যুদ্ধপরবর্তী গাজা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায় ইসরাইল, হামাসের 'না'
যে কোনো সময় ইসরাইলি সেনারা গাজায় হামলার অধিকার পাবে
প্রকাশ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
আগ্রাসনে বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন একটি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বৃহস্পতিবার যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার কাছে এ পরিকল্পনা উত্থাপন করেন তিনি। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গাজায় যাতে কোনো ধরনের সশস্ত্র গোষ্ঠীর উত্থান না ঘটতে পারে, সেজন্য যে কোনো সময় ইসরাইলি সেনারা সেখানে হামলা চালানোর অধিকার পাবে। গাজা অংশে নিরাপত্তা জোন তৈরি অব্যাহত থাকবে এবং যতদিন পর্যন্ত এই জোনের প্রয়োজনীয়তা থাকবে; ততদিন এটি থাকবে। এদিকে, ফিলিস্তিনি যোদ্ধা গ্রম্নপ হামাসের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা শুক্রবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর গাজা যুদ্ধপরবর্তী পরিকল্পনা কখনোই সফল হবে না। তিনি জায়নবাদী ভূখন্ডের এ নেতার পরিকল্পনার কঠোর নিন্দা করেছেন। তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইসরাইল, এএফপি
নেতানিয়াহুর ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, যতদিন পর্যন্ত হামাস ও ইসলামিক জিহাদের সামরিক সক্ষমতা নির্মূল করা হবে এবং সব জিম্মিকে ফিরিয়ে আনাসহ অন্যান্য লক্ষ্য অর্জিত না হবে, ততদিন গাজায় যুদ্ধ চলবে। যুদ্ধ শেষে স্থানীয় যেসব কর্মকর্তার সঙ্গে কথিত সন্ত্রাসবাদ সমর্থনকারী দেশ ও গোষ্ঠীর কোনো সম্পর্ক থাকবে না, তারা গাজা পরিচালনা করবেন। তবে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষকে (পিএ) এতে রাখা হবে কি না, তা এ পরিকল্পনায় স্পষ্ট করা হয়নি।
এতে আরও বলা হয়, ইসরাইল 'মৌলবাদ' দূরীকরণে সব ধর্মীয়, সামাজিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একটি প্রোগ্রাম পরিচালনা করবে। তাতে যুক্ত থাকবে আরব দেশগুলোও। গাজাকে সম্পূর্ণভাবে নিরস্ত্রীকরণ করা হবে। এমনকি, নিরাপত্তার স্বার্থে গাজার শাসকদের যে পরিমাণ অস্ত্রের প্রয়োজন, সেটিও রাখা হবে না। এসব বিষয় নিশ্চিতের পরেই গাজা পুনর্গঠনের কাজ শুরু করতে দেবে ইসরাইল।
প্রস্তাবে বলা হয়, দখলকৃত পশ্চিম তীর থেকে যেন কোনো ধরনের হামলা না চালানো যায়, সেজন্য জর্ডানের পশ্চিমাঞ্চলের স্থল, আকাশ ও সমুদ্রসহ পুরোটির নিয়ন্ত্রণ থাকবে ইসরাইলের হাতে।
তবে গাজা উপত্যকার ভবিষ্যৎ নিয়ে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী যে পরিকল্পনা সামনে এনেছেন, তা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিন। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় সূত্রে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তাতে ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে ইসরাইলের দখলদারিত্ব অব্যাহত থাকবে ও এর মাধ্যমে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনাহ বলেন, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অংশ থাকবে গাজা। এর রাজধানী হবে জেরুজালেম। এছাড়া অন্য যে কোনো পরিকল্পনা ব্যর্থ হবে। এর বাইরে ভূতাত্ত্বিক পরিবর্তনের যেকোনো ইসরাইলি প্রচেষ্টা সফল হবে না। এই অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা চাইলে ইসরাইলি হামলা বন্ধ করতে হবে ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে হবে। স্বাধীনতাকামী হামাসও দাবি করেছে, নেতানিয়াহু গাজা উপত্যকার ব্যাপারে এমন কিছু পরিকল্পনা উপস্থাপন করছেন, যা তিনি খুব ভালোভাবেই জানেন যে, তা কখনোই সফল হবে না।