রাশিয়ার কারাগারে মারা যাওয়া দেশটির প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিনের সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনির মরদেহ দুই সপ্তাহের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে না বলে জানানো হয়েছে তার পরিবারকে। নাভালনির একজন প্রতিনিধি জানান, তার মাকে জানানো হয়েছে, রাসায়নিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য মরদেহ দুই সপ্তাহ রাখা হবে। তথ্যসূত্র : বিবিসি
নাভালনির মরদেহটি ঠিক কোথায় রাখা হয়েছে, সে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত করেনি রুশ কর্তৃপক্ষ। সেটি জানতে চাওয়ার সব চেষ্টাই ব্যাহত করে দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে মরদেহ লুকানোর অভিযোগ করেছেন নাভালনির স্ত্রী। সোমবার এক ভিডিও বার্তায় নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া লাভালনায়া অঙ্গীকার করেছেন, তিনি তার তার স্বামীর 'মুক্ত রাশিয়া'র স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাবেন। এই ভিডিও বার্তায় স্বামীর মৃতু্যর জন্য সরাসরি প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিনকে দায়ী করেছেন তিনি। তিনি আরও অভিযোগ করেন, নাভালনির শরীর থেকে 'নোভিচক নার্ভ এজেন্ট'-এর চিহ্ন গায়েব করার জন্য মরদেহ লুকিয়ে রাখা হয়েছে।
নাভালনায়া যখন কথা বলছিলেন, তখন দুঃখ ও রাগে তার কণ্ঠস্বর কেঁপে কেঁপে উঠছিল। তিনি দর্শকদের তার পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন, 'যারা আমাদের ভবিষ্যৎকে হত্যা করার সাহস দেখিয়েছে, তাদের প্রতি ক্রোধ ও ঘৃণা প্রদর্শন করুন।'
গত এক দশক ধরে রুশবিরোধী দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা নাভালনি সাইবেরিয়া অঞ্চলের একটি কারাগারে ১৯ বছরের কারাদন্ড ভোগ করছিলেন। গত শুক্রবার (১৬ ফেব্রম্নয়ারি) তার মৃতু্য হয় বলে জানায় দেশটির কারা কর্তৃপক্ষ। রুশ কর্তৃপক্ষের দাবি, কারাগারে হাঁটাহাঁটি করার সময় হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়ে যান নাভালনি, এরপর আর জ্ঞান ফেরেনি তার। সোমবার ক্রেমলিন জানায়, নাভালনির মৃতু্যর বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং এখন পর্যন্ত তদন্ত থেকে কোনো ফল পাওয়া যায়নি।
পরে নাভালনির মুখপাত্র কিরা ইয়ারমিশ বলেন, তদন্তকারীরা নাভালনির মা লিউডমিলা নাভালনায়াকে বলেছেন, যেহেতু রাসায়নিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে, তাই তারা আগামী দুই সপ্তাহের মাঝে মরদেহ হস্তান্তর করতে পারবে না। কিরা ইয়ারমিশ আরও বলেন, 'আমরা নিশ্চিতভাবেই জানি, এটা কোনো স্বাভাবিক মৃতু্য নয়, এটা হত্যাকান্ড। তারা এখন হত্যার প্রমাণ লোপাট করতে চাইছে। যে কারণে তারা পরিবারের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করছে না। অথচ রাশিয়ার আইন অনুযায়ী কোনো কারাবন্দি মারা গেলে দুই দিনের মধ্যে তার মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করতে হয়।'