শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
পাকিস্তানে সরকার গঠন

পিপিপির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে নওয়াজ শরিফের দল

দুই দলের নেতৃত্বকে সতর্ক করে দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী
যাযাদি ডেস্ক
  ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
পিপিপির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে নওয়াজ শরিফের দল

পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) অভ্যন্তরীণ একটি সূত্র স্বীকার করেছেন, তারা সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লিগের প্রস্তাবে রাজি হওয়ার জন্য দলটি 'ব্যাপক চাপের' সম্মুখীন হচ্ছে। ওই সূত্রটি সন্দেহ প্রকাশ করেছে, জোট সরকারে যোগদানে পিপিপিকে বাধ্য করার জন্য সেনাবাহিনীর মাধ্যমে নিজেদের প্রভাবকে কাজে লাগাতে পারে পিএমএল-এন। তথ্যসূত্র : এএফপি. ডন

এমন চাপের মুখে পিপিপি কী করতে পারে, সে বিষয়ে ওই নেতা বলেন, এই উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় দলটি পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা কম। সেক্ষেত্রে পিপিপির সামনে আরেকটি সুযোগ আসতে পারে, তা হলো দলের কাউকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব। তিনি বলেন, পিপিপি নেতারা হয়তো জনসম্মুখে বলেছেন, তারা প্রধানমন্ত্রিত্ব চান না। কিন্তু এই সুযোগ যদি নিজেই তাদের সামনে এসে হাজির হয়, তাহলে সেটি হাতছাড়া করার সম্ভাবনা কম।

পাকিস্তানে নির্বাচন হয়েছে প্রায় দুই সপ্তাহ হতে চলল। এখনো নিশ্চিত হয়নি কারা আসবে সরকারে। কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় জোট গঠনই হয়ে উঠেছে ক্ষমতায় যাওয়ার একমাত্র উপায়। এই আলোচনায় এগিয়ে রয়েছে নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পিপিপি। তবে ক্ষমতা ভাগাভাগির কৌশল নিয়ে এখনো একমত হতে পারেনি তারা।

পাকিস্তানি দৈনিক 'এক্সপ্রেস ট্রিবিউন'র তথ্যমতে, গত ৮ ফেব্রম্নয়ারির নির্বাচনে এককভাবে সর্বোচ্চ ৯৩ আসনে জয়ী হয়েছেন ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৪ আসনে জিতেছে পিএমএল-এন। ৫৪ আসন পেয়ে তৃতীয় হয়েছে পিপিপি। এ অবস্থায় ১৩ ফেব্রম্নয়ারি আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে নতুন জোটের ঘোষণা দেন পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট, বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির বাবা ও পিপিপি নেতা আসিফ আলি জারদারি। এ সময় তার পাশে ছিলেন দলীয় অন্য নেতারাও।

জারদারি জানান, জোটবদ্ধ হয়ে পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় সরকার গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ছয়টি দল। সেগুলো হলো- পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন), পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি), মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তান (এমকিউএম-পি), পাকিস্তান মুসলিম লিগ-কায়েদ (পিএমএল-কিউ), বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টি (বিএপি) ও ইস্তেহাকাম-ই-পাকিস্তান পার্টি (আইপিপি)।

তবে এরপর প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো চূড়ান্ত ঘোষণা দিতে পারেনি এই জোট। সরকার ও সাংবিধানিক পদগুলোর কে কোনটি দখলে রাখবে তা নিয়ে চলছে তীব্র দর কষাকষি। প্রেসিডেন্ট, জাতীয় পরিষদের স্পিকারসহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক পদে নিজেদের লোক বসাতে চায় পিপিপি। তবে কোনো মন্ত্রিত্ব নিতে রাজি নয় তারা।

বিপরীতে, পিএমএল-এন চায় প্রধানমন্ত্রীর পদ তাদের থাকুক। পাশাপাশি, জোট সরকারের মন্ত্রিসভায় অংশ নিক পিপিপি। মূলত এগুলো নিয়েই এখনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি পিএমএল-এন এবং পিপিপি। এ অবস্থায় বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, জোট সরকার গঠনে সময়ক্ষেপণের 'পরিণতি' সম্পর্কে পিপিপি এবং পিএমএল-এন নেতৃত্বকে সতর্ক করে দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।

জোট গড়ল পিটিআই ও সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিল

পাকিস্তানের কেন্দ্রে ও পাঞ্জাব প্রদেশে সরকার গঠনের প্রচেষ্টায় সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের (এসআইসি) সঙ্গে জোট গঠন করেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)।

মাত্র দুই দিন আগে পিটিআই পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় আইনসভায় বিরোধীদলীয় বেঞ্চে বসার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল। এরপর ৮ ফেব্রম্নয়ারির নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে অভিযোগ করে দেশব্যাপী বিক্ষোভ করেছিল। কিন্তু রোববার নতুন জোট গঠনের মাধ্যমে ফের সরকার গঠনের প্রচেষ্টা শুরু করেছে দেশটির জাতীয় নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়া ইমরানের অনুসারীরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে