গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন
রাফাহ রক্ষার অনুরোধ নাকচ করল আন্তর্জাতিক বিচার আদালত
প্রচন্ড ক্ষুধায় ভয়াবহ হয়ে উঠছে রাফাহ শহরের পরিস্থিতি
প্রকাশ | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরকে রক্ষা করার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য যে আহ্বান জানিয়েছে, তা নাকচ করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত- আইসিজে। ইসরাইল মারাত্মক ঘনবসতিপূর্ণ রাফাহ শহরে স্থল অভিযান চালানোর সব প্রস্তুতি যখন সম্পন্ন করেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে, তখন দক্ষিণ আফ্রিকা রাফাহ রক্ষার আন্তর্জাতিক আদালতে ওই অনুরোধ জানানো হয়। তথ্যসূত্র : পার্স টুডে, এএফপি, আল-জাজিরা
আন্তর্জাতিক বিচার আদালত শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, রাফাহ শহরের বিপজ্জনক পরিস্থিতি দ্রম্নত ও কার্যকর ব্যবস্থা বাস্তবায়নের দাবি করে, যা এই আদালত গত ২৬ জানুয়ারির আদেশে বলেছে। এখন আর নতুন কোনো আদেশের প্রয়োজন নেই, কারণ রাফাহ শহরের বিদ্যমান অবস্থা পুরো গাজা উপত্যকাজুড়েই বিরাজমান। গাজা উপত্যকার জন্য যে আদেশ দেওয়া হয়েছে, তা রাফাহ শহরের জন্যও প্রযোজ্য। আদালত বলেছে, গণহত্যা-বিষয়ক কনভেনশনের আওতায় ইসরাইল আইসিজের আদেশ পালনে বাধ্য। এই আদেশে ইসরাইলকে সব ধরনের হত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ এবং গাজায় গণহত্যার মতো পদক্ষেপ বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
কিন্তু ইসরাইল আইসিজের এই আদেশ এ পর্যন্ত মোটেই বাস্তবায়ন করেনি বরং গত সপ্তাহে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রাফাহ শহর থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে সেখানে স্থল অভিযান চালানো যায়।
ভয়াবহ হয়ে উঠছে রাফাহ
শহরের পরিস্থিতি
এদিকে, রাফাহ শহরের পরিস্থিতি দিন দিন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। সেখানকার মানুষ প্রচন্ড ক্ষুধার্ত। তারা খাবারের জন্য মরিয়া হয়ে ?উঠেছে। জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা-ওসিএইচএ তাদের সর্বশেষ দৈনিক আপডেটে জানিয়েছে, রাফাহ শহরের লোকজন খাবারের জন্য এমন করুণ পরিস্থিতিতে রয়েছে যে, তারা খাবারের জন্য আর অপেক্ষা করতে পারছে না। তারা ত্রাণবাহী ট্রাক দেখলে সেগুলো থামাচ্ছে, যেন সঙ্গে সঙ্গেই সেখান থেকে খাবার নিয়ে খেতে পারে।
ওসিএইচএ বলছে, দক্ষিণ গাজার ওই জনবহুল শহরে মানবিক সংকট নিয়ে আতঙ্কিত অবস্থার মধ্যেই খাদ্য সংকটের কারণে লোকজন মরিয়া হয়ে উঠেছে এবং তাদের মধ্যে তীব্র হতাশা তৈরি হয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, গাজায় অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে জনাকীর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এবং সেখানকার লোকজনের জরুরি ভিত্তিতে খাবার প্রয়োজন। তারা ক্ষুধার্ত এবং আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। ওসিএইচএ জানিয়েছে, গাজায় আরও ত্রাণবাহী ট্রাকে খাবার সরবরাহ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সেখানকার লোকজনের পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা নিশ্চিত করতে হবে।
শুধুমাত্র রাফাহ ও কেরেম শালোম (কারেম আবু সালেম) ক্রসিং দিয়ে ত্রাণ সহায়তা গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করতে পারছে। ফলে মধ্য এবং উত্তর গাজায় খাদ্য সরবরাহ করতে হলে প্রথমে রাফাহ দিয়েই প্রবেশ করতে হয়। এদিকে, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ আশদোদ বন্দর দিয়ে গাজা উপত্যকার জন্য পাঠানো আটার একটি বড় চালান আটকে দিয়েছে।