বৈশ্বিক চাপ উপেক্ষা

রাফাহতে হামলা চালাবেই ইসরাইল

গাজায় অভিযানের মানবিক মূল্য হবে অসহনীয় : ম্যাখোঁ তারা বাতাসে অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে না : জার্মানি'

প্রকাশ | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। তবে এই অভিযানে বিপুল সংখ্যক বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে দেশটি। এবার ফিলিস্তিনের রাফাহ শহরে হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইল। আসন্ন এই হামলা বন্ধের দাবি বিশ্বজুড়ে জোরালো হলেও সব চাপ উপেক্ষা করে রাফাহ আক্রমণের পরিকল্পনা এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তথ্যসূত্র : বিবিসি সম্ভাব্য হামলা পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনার আন্তর্জাতিক আবেদনকে প্রত্যাখ্যান করে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেছেন, তার সেনারা গাজার রাফাহ শহরের দিকে অগ্রসর হবে। যদিও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ এই হামলার বিষয়ে সর্বশেষ নেতানিয়াহুকে সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গাজায় ইসরাইলের অভিযানের মানবিক মূল্য হবে 'অসহনীয়'। কিন্তু নেতানিয়াহু তার সেনাবাহিনীকে স্থল হামলার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে ঘর-বাড়ি হারিয়ে বাস্তুচু্যত প্রায় ১৪ লাখ ফিলিস্তিনি বর্তমানে রাফাহতে আশ্রয় নিয়েছেন। যদিও মিসর সীমান্তবর্তী এই শহরটি এরই মধ্যে ইসরাইলি বোমাবর্ষণের শিকার হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু 'জোরালো' আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন। একইসঙ্গে গাজা নিয়ন্ত্রণকারী দল হামাসকে অবশ্যই দক্ষিণাঞ্চলীয় এই শহর থেকে নির্মূল করতে হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। নেতানিয়াহু বলেন, 'সম্পূর্ণ বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আমরা লড়াই করব এবং এর মধ্যে রাফাহ শহরের বিষয়ে একটি শক্তিশালী পদক্ষেপও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আমরা বেসামরিক জনগণকে যুদ্ধের অঞ্চল ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার পর রাফাহতে ওই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।' অবশ্য ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ বুধবার নেতানিয়াহুকে ফোন করে বলেছেন, গাজায় ইসরাইলের অভিযান অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। তিনি রাফাহতে ইসরাইলি আক্রমণের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের দৃঢ় বিরোধিতার কথাও জানিয়ে দেন। ম্যাখোঁ বলেছেন, রাফাহতে ইসরাইলি আক্রমণ শুধুমাত্র নতুন মাত্রার মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবে। এছাড়া ইসরাইল সফররত জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, রাফাহ অঞ্চলের লোকদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। তারা 'বাতাসে অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে না'। স্পেন ও রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড ইইউকে বলেছে, বাণিজ্যের সঙ্গে সংযুক্ত অধিকার বিষয়ক চুক্তির অধীনে ইসরাইল গাজায় তার মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতাগুলো মেনে চলছে কিনা তা 'জরুরিভাবে' পরীক্ষা করতে হবে। ফিলিস্তিনের গাজা ভূখন্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরাইলের হামলার ফলে অন্তত ২৮ হাজার ৫৭৬ জন নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ। গত বছরের অক্টোবরে আগ্রাসন শুরুর দিনগুলোতে ফিলিস্তিনিদের রাফাহতে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইসরাইল। কারণ সে সময় ইসরাইলি সামরিক বাহিনী অবরুদ্ধ এই ভূখন্ডটির উত্তরের শহরগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছিল। আর এবার সেই রাফাহতেও আক্রমণের পরিকল্পনা করছে ইসরাইল।