কৃষকদের ওপর টিয়ারশেল, লাঠিচার্জ, কী চলছে দিলিস্নতে?
১৪৪ ধারা ভেঙে 'দিলিস্ন চল' রোডমার্চ
পেনশন, এফআইআর বাতিল ও শস্যবীমার দাবিতে ভারতের হাজার হাজার কৃষক রাস্তায়
প্রকাশ | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ফসলের নূ্যনতম দামের নিশ্চয়তা দিতে আইন, কৃষকদের জন্য পেনশন, তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর বাতিল ও শস্যবীমার দাবিতে ভারতের হাজার হাজার কৃষক রাস্তায় নেমেছেন। কৃষক আন্দোলন রুখতে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে দিলিস্ন পুলিশ। রোডমার্চ ঠেকাতে রাজধানী দিলিস্নকে নিরাপত্তা চাঁদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার থেকে দিলিস্নতে এক মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে পুলিশ। পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মধ্যবর্তী শম্ভু এলাকায় কৃষকদের 'দিলিস্ন চলো' রোডমার্চ কর্মসূচিতে ড্রোনের সাহায্যে টিয়ারশেল ছুড়েছে পুলিশ। কৃষকরা যাতে ট্রাক্টর, ট্রাক ও ট্রলি নিয়ে সড়কে নামতে না পারে সেজন্য জায়গায় জায়গায় বসানো হয়েছে ব্যারিকেড। নিষিদ্ধ করা হয়েছে যে কোনো জমায়েত ও সমাবেশ।
তবে এতকিছুর পরও দমেননি কৃষকরা। বুধবার সকাল থেকে আবারও পথে নেমেছেন তারা। তারা বলছেন, অধিকার বুঝে নিতে এসেছি। আমরা ফসলের ন্যায্য সহায়ক দামের আইনি নিশ্চয়তা, লখিমপুর-খেরিতে মৃতু্য হওয়া ভাইদের ক্ষতিপূরণ এবং ঋণ মওকুফের দাবিতে পথে নেমেছি। কৃষকদের পেনশন পাওয়া উচিত। আমরা আমাদের অধিকারের জন্য এসেছি।
ছাড় দেবে না পুলিশ
দিলিস্ন পুলিশ বলছে, কৃষকদের রোডমার্চ রাজধানীতে প্রবেশের সুযোগই দেওয়া যাবে না। দিলিস্ন-সোনিপত লাগোয়া সিঙ্ঘু সীমানা পেরিয়ে কৃষকরা যাতে রাজধানীতে ঢুকতে না পারে সেই দিকে নজর রেখেছে পুলিশ। হরিয়ানা-পাঞ্জাব থেকে কৃষকদের ট্র্যাক্টর দিলিস্ন ঢোকার আগেই আটকাবে পুলিশ।
বুধবার সকাল থেকেই সিঙ্ঘু সীমানায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গাজীপুর সীমান্তে বহুস্তরীয় ব্যারিকেড তৈরি করেছে পুলিশ। পুলিশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, 'দিলিস্ন চল' রোডমার্চ রুখে দিতে 'নমনীয় মনোভাব' দেখানো হবে না। কৃষকরা যদি আক্রমণাত্মক হয়, তবে তা কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
কৃষকদের রুখতে পাঞ্জাব-হরিয়ানা সীমানা এবং দিলিস্নতে ঢোকার সব প্রবেশপথে ব্যারিকেড ও কাঁটাতার দেওয়া হয়েছে। দিলিস্নর টিকরি সীমানার দিকে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে যানবাহন চলাচল।
অবরুদ্ধ যান চলাচল
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, দিলিস্ন-সোনিপত লাগোয়া সিঙ্ঘু ও দিলিস্ন-বাহাদুরগড় লাগোয়া টিকরি সীমানায় যানবাহন চলাচল অবরুদ্ধ। বহু মানুষ রাস্তায় আটকা পড়েছে।
কৃষকদের রুখতে মরিচগুঁড়ো
কৃষকরা রণমূর্তি ধারণ করলে তাদের আটকাতে মরিচগুঁড়ো ব্যবহার করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। দিলিস্ন পুলিশের ঘোষণা, কৃষকরা সীমানা পার করে আসার চেষ্টা করলে আমরা তাদের মোকাবিলা করব। দিলিস্নর পরিস্থিতি ঠিক রাখতে তাদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হবে।
রেলপথ অবরোধের ডাক
বৃহস্পতিবার পাঞ্জাবজুড়ে রেল অবরোধের ডাক দিয়েছে কৃষকদের সংগঠন 'ইন্ডিয়ান ফার্মার্স ইউনিয়ন (উগ্রাহা)'। দিলিস্ন যাওয়ার পথে কৃষকদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ছোড়া এবং লাঠিচার্জের প্রতিবাদে দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এই রেল অবরোধ চলবে বলে জানানো হয়েছে।
শুক্রবার 'ভারত বন্ধ'-এর ডাক
কৃষকদের দাবি মেনে না নেওয়া হলে শুক্রবার (১৬ ফেব্রম্নয়ারি) কৃষকদের 'ভারত বন্ধ' পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকাইত। তিনি বলেছেন, 'সরকার কৃষকদের দাবি মেনে না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়া হবে।'
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি, পিটিআই