বিশ্বের কোনো ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ক্ষমতা নেই এই 'মৃতু্যদূত'কে রুখে দেওয়ার। ইউক্রেন যুদ্ধে এই প্রথম 'জিরকন' ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করল রুশ বাহিনী। সোমবার এমনটাই দাবি করেছেন কিয়েভ সায়েন্টিফিক-রিসার্চ ইন্সটিটিউটের প্রধান ওলেকজান্ডার রুভিন। উলেস্নখ্য, বাতাসে শব্দের গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে ৩৪৩ কিলোমিটার আর '৩এম২২ জিরকন' শব্দের চেয়ে ৯ গুণ গতিসম্পন্ন। অর্থাৎ, প্রতি সেকেন্ডে এই ক্ষেপণাস্ত্র তিন হাজার ৮৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সক্ষম। তথ্যসূত্র : রয়টার্স
আগামী ২৪ ফেব্রম্নয়ারি দুই বছর পূর্ণ হতে চলেছে রাশিয়া বনাম ইউক্রেন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের। গত কয়েক মাসে ইউক্রেনে হামলার ঝাঁঝ বাড়িয়েছে মস্কো। আক্রমণের ধার তীব্র করতে নতুন নতুন অস্ত্র ব্যবহার করছে রুশ বাহিনী। তবে এই প্রথম তারা জিরকন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করল। গত সপ্তাহে কিয়েভে আছড়ে পড়েছিল রাশিয়ার 'ব্রহ্মাস্ত্র'টি। সমর বিশ্লেষকদের মতে, কিয়েভে যদি জিরকন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রমাণিত হয়, তাহলে এই যুদ্ধাস্ত্রের মোকাবিলা করা আগামী দিনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর কাছে।
সোমবার 'টেলিগ্রামে' এই হামলার কথা জানান ওলেকজান্ডার রুভিন। ক্ষেপণাস্ত্রের টুকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার প্রাথমিক ধারণা, ক্ষেপণাস্ত্রটি গত ৭ ফেব্রম্নয়ারি ইউক্রেনে আঘাত হেনেছিল। রুভিন ক্ষেপণাস্ত্রটির বিভিন্ন টুকরা একত্রিত করে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। কয়েকটি অংশ চিহ্নিত করে তিনি দাবি করেন, উপাদানগুলো ৩এম২২ জিরকন ক্ষেপণাস্ত্রেই অংশ। যদিও রাশিয়া এখন পর্যন্ত এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নিয়ে মুখ খোলেনি। ৭ ফেব্রম্নয়ারির ওই হামলায় অন্তত পাঁচজনের মৃতু্য হয়েছে। একাধিক বাড়ি ও বৈদু্যতিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন ২০১৯ সালে প্রথমবার এই ক্ষেপণাস্ত্রটির কথা জনসম্মুখে জানিয়েছিলেন। তার দাবি ছিল, এই ক্ষেপণাস্ত্র কার্যত 'অজেয়'। সর্বোচ্চ মাক-৯ (ঘণ্টায় ৯ হাজার কিলোমিটার) গতিবেগে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম জিরকন মিসাইল। রুশ রণতরী ও সাবমেরিনগুলোতে মোতায়েন থাকবে এই ক্ষেপণাস্ত্র। এরপর ২০২১ সালের জুলাই মাসে জিরকন হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইলের সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করে রুশ সেনাবাহিনী। গত দুই বছরে রাশিয়া এই অস্ত্র প্রয়োগ করেনি। কিন্তু এবার নাকি ইউক্রেনকে চাপে ফেলতে এই অস্ত্রই ব্যবহার করেছে মস্কো।