দাবি মানা হয়নি

দিলিস্ন অভিমুখে আবারও পদযাত্রা ভারতীয় কৃষকদের

দুই হাজার গাড়ি, ছয় মাসের খাবার নিয়ে কৃষকদের যাত্রা, ড্রোন থেকে কাঁদানে গ্যাস পুলিশের

প্রকাশ | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
কৃষকদের পদযাত্রা ঠেকাতে তাদের ওপর ড্রোন থেকে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। ছবিটি মঙ্গলবার পাঞ্জাব-হরিয়ানা সীমান্ত এলাকা থেকে তোলা -পিটিআই/আউটলুক ইনডিয়া
প্রতিশ্রম্নতি রক্ষা না করায় ভারতের কেন্দ্রে আসীন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে আবারও আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন ভারতীয় কৃষকরা। সেই কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুই হাজার গাড়ি, ছয় মাসের খাবার নিয়ে দিলিস্ন অভিমুখে পদযাত্রার ডাক দিয়েছেন তারা। এদিকে, মঙ্গলবার ব্যারিকেড ভেঙে দিলিস্ন প্রবেশের সময় উত্তর হরিয়ানা সীমান্ত পয়েন্টে কৃষকদের ওপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ ছাড়া বিক্ষোভকারী কৃষকদের ওপর ড্রোন থেকেও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে তারা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে কৃষকদের সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। বেশ কয়েকজন কৃষককে আটক করেছে পুলিশ। তথ্যসূত্র : এনডিটিভি, এপি ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশসহ বিভিন্ন রাজ্যে সক্রিয় কৃষক সংগঠনগুলোর দুই জোট কিষাণ মজদুর মোর্চা এবং সংযুক্ত কিষান মোর্চা এই পদযাত্রা কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। কিষাণ মজদুর মোর্চায় অন্তর্ভুক্ত সক্রিয় কৃষক সংগঠনের সংখ্যা ২৫০টি এবং সংযুক্ত কিষাণ মোর্চাভুক্ত সংগঠনের সংখ্যা ১৫০টি। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে নতুন কৃষি আইন প্রণয়ন করেছিল দিলিস্ন। এরপর সেই বছর নভেম্বর থেকে নতুন কৃষি আইন বাতিলসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলেন ভারতের কৃষকরা। প্রায় এক বছর ধরে দিলিস্নতে কৃষকদের অবস্থান, প্রতিবাদ কর্মসূচি এবং সাত শতাধিক কৃষকের মারা যাওয়ার পর ২০২১ সালের নভেম্বরে নতুন কৃষি আইন বাতিল করে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই সঙ্গে কৃষক সংগঠনগুলোর বিভিন্ন দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রম্নতিও প্রদান করে। কিষাণ মজদুর মোর্চা ও সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতারা জানিয়েছেন, ২০২০ সালের আন্দোলনের সময় নতুন কৃষি আইন বাতিলসহ তিনটি দাবি জানিয়েছিলেন কৃষকরা। এক. ফসলের নূ্যনতম ক্রয়মূল্য বৃদ্ধি। দুই. কৃষি ঋণের শর্ত সহজ করা ও সুদ মওকুফ। তিন. স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন। কৃষক নেতাদের অভিযোগ, দুই বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও প্রতিশ্রম্নতি বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। এবার এসব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজধানী দিলিস্নতে বিক্ষোভ করবেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। অন্যদিকে, শুক্রবার দেশজুড়ে ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছেন হাজারও কৃষক ও ট্রেড ইউনিয়নগুলোর নেতারা। কৃষকদের দাবির বিষয়ে সোমবার কেন্দ্রীয় সরকারের খাদ্য ও ভোক্তা অধিকার বিষয়ক মন্ত্রী পিযুষ গয়াল এবং কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডার সঙ্গে মধ্যরাত পর্যন্ত বৈঠক করেছেন কিষাণ মজদুর মোর্চা ও সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতারা। কিন্তু সেই বৈঠক থেকে কোনো মীমাংসা আসেনি। কিষাণ মজদুর মোর্চার অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা সারওয়ান সিং পান্ধের জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশের কৃষকরা পদযাত্রা ও ট্রাক্টরযাত্রা শুরু করেছেন। সারওয়ান সিং আরও বলেন, 'দুই বছর আগে সরকার লিখিতভাবে প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিল যে, আমাদের সব দাবি-দাওয়া তারা মেনে নেবে, আমরা ইসু্যটি শান্তিপূর্ণভাবে মীমাংসা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সরকারের এ ক্ষেত্রে আন্তরিকতার গুরুতর অভাব দেখা যাচ্ছে। তারা কেবল সময়ক্ষেপণ করতে চাইছে।' এদিকে, সোমবার কৃষকদের কর্মসূচি ঘোষণার পরপরই দিলিস্নতে সেই পদযাত্রার প্রবেশ বন্ধে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে দিলিস্ন পুলিশ। দিলিস্নর তিন সীমান্তপথ সিংঘু, তিকরি ও গাজীপুরের সড়কগুলোতে ব্যারিকেডসহ বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।