ইসরাইল-হামাস সংঘাত
যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে মধ্যপ্রাচ্যে দৌড়ঝাঁপ বিস্নংকেনের
প্রকাশ | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর ও একটি দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য আবারও মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরু করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বিস্নংকেন। সফরের অংশ হিসেবে তিনি কাতার, ইসরাইল ও মিসর সফর করছেন। এর আগেও একই ইসু্যতে তিনি বেশ কয়েকবার মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, রয়টার্স, এএফপি
সোমবার বিস্নংকেন সৌদি আরবের রিয়াদে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন। যদিও বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, সে বিষয়ে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি। তবে সৌদি আরবে যাওয়ার পথে ফ্লাইটে আমেরিকার একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, 'আমরা কোনো সাফল্য পাবো কিনা, পেলেও সেটা কখন পাবো, সে বিষয়ে আগে থেকে কিছু বলা অসম্ভব। কারণ, বল এই মুহূর্তে হামাসের কোর্টে।'
বিস্নংকেন-মোহাম্মদ বৈঠকের বিষয়ে আমেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, বিস্নংকেন এবং যুবরাজ সংকটের 'একটি স্থায়ী সমাধান' অর্জনের জন্য আঞ্চলিক সমন্বয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় মানবিক চাহিদা পূরণ এবং সংঘাতের আরও বিস্তার রোধ করার গুরুত্বের ওপরও জোর দিয়েছেন।
এদিকে, বিস্নংকেনের এবারের সফরে গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ইতিবাচক কোনো সিদ্ধান্ত আসার অপেক্ষায় রয়েছেন বিপর্যস্ত ফিলিস্তিনিরা। তাদের আশা, রাফাহতে ইসরাইলের অভিযান শুরুর আগেই যুদ্ধবিরতি হবে। উলেস্নখ্য, গাজার প্রায় অর্ধেক ফিলিস্তিনি বর্তমানে মিসর সীমান্তবর্তী অঞ্চল রাফাহতে আশ্রয় নিয়েছে। রাফাহ গাজার দক্ষিণাংশে অবস্থিত। দক্ষিণের সবচেয়ে বড় নগরী খান ইউনিস ঘিরে ইসরাইলের পদাতিক বাহিনী কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইল রাফাহতেও যে কোনো সময় হামলার হুমকি দিয়ে রেখেছে। যদিও ফিলিস্তিনিরা জানিয়েছেন, সেখানে ইসরাইলি ট্যাংকের গোলাবর্ষণ এবং বিমান হামলা হয়েছে। ইসরাইলি হামলায় একটি বাড়িতে দুটি মেয়ে শিশু নিহত হয়েছে। শোকার্তরা যখন মৃত শিশুদের বিদায় জানাচ্ছেন, তখন মোহাম্মদ কালুব নামে তাদের একজন আত্মীয় বলেন, রাফাহ-এর আল-সালাম পাড়ায় নারী ও শিশুতে ভরা একটি ঘরে বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
এই অবস্থায় বিস্নংকেন মঙ্গলবার মিসরে গেছেন। এরপর তিনি কাতারের আমিরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাবেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এবারের সফর শেষ হবে ইসরাইল সফরের মাধ্যমে। হামাস-ইসরাইল লড়াই শুরু হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যে এটি বিস্নংকেনের পঞ্চম সফর।
ইসরাইলি বাহিনীর ওপর হামাসের
হামলা, ধরে রাখছে নিয়ন্ত্রণও
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। তবে ইসরাইলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার চার মাস পরও গাজায় কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে হামাস। এমনকি নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার পাশাপাশি গাজার প্রধান শহরগুলোতে ইসরাইলি বাহিনীকে আক্রমণও করে চলেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী এই সশস্ত্র গোষ্ঠী।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীরা রোববার গাজা উপত্যকার দুটি প্রধান শহরে ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়েছে। সেনা ও ট্যাংকের বিশাল বহর নিয়ে ইসরাইলি বাহিনী এগুলো দখল করার কয়েক সপ্তাহ পরও এমন হামলা চলছে। আর এতেই বোঝা যায়, যে কোনো সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির আগে হামাস এখনো কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। মূলত ইসরাইলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার চার মাস পরও ঘনবসতিপূর্ণ এই ভূখন্ডের উত্তরে অবস্থিত গাজা শহরে এবং দক্ষিণে খান ইউনিসে অবিরাম লড়াই চলছে।
ইসরাইলি মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকে রোববার প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসের ২৪টি যুদ্ধ ব্যাটালিয়নের মধ্যে ১৭টিকে চূর্ণ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বাকিদের বেশিরভাগই দক্ষিণ গাজার রাফাহ-সহ ভূখন্ডটির মিসরীয় সীমান্তে রয়েছে। নেতানিয়াহুর অফিসের দেওয়া একটি বিবৃতি অনুসারে তিনি বলেছেন, 'আমরা তাদেরও দেখে নেব।' অবশ্য, হামাস কখনো তাদের ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করে না।