ভারত-বিরোধী অবস্থানে অটল রয়েছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু। তিনি জানিয়েছেন, ভারতীয় সেনারা আগামী মে মাসের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপ দেশ ছেড়ে যাবে। এ বিষয়ে দিলিস্ন ও মালে একমত হয়েছে। এমনকি অন্য কোনো দেশকে মালদ্বীপের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ বা তা খাটো করতে দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। তথ্যসূত্র : এনডিটিভি. বিবিসি
নিজের ভারত-বিরোধী অবস্থানে অটল থেকে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু সোমবার পার্লামেন্টে বলেছেন, মালদ্বীপ 'কোনো দেশকে আমাদের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ বা তা ক্ষুণ্ন করতে' অনুমতি দেবে না।
স্থানীয় মিডিয়ার রিপোর্ট অনুসারে ভারতীয় সেনারা আগামী ১০ মে'র মধ্যে মালদ্বীপ ত্যাগ করবে এবং এ বিষয়ে দিলিস্ন ও মালে একমত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। সোমবার দেশটির পার্লামেন্টে ভাষণ দেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। বিরোধী দলগুলোর যারা মুইজ্জুর ভারত-বিরোধী অবস্থানের সমালোচনা করে থাকেন, তারা এদিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য বয়কট করেন।
ভাষণে এদিন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু জানান, মালদ্বীপে তিনটি বিমান চলাচল পস্ন্যাটফর্ম রয়েছে। তার মধ্যে একটি থেকে আগামী ১০ মার্চের মধ্যে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার করা হবে। আর আগামী মে মাসের ১০ তারিখের মধ্যে বাকি দুটি পস্ন্যাটফর্ম থেকেও ভারতীয় সেনা সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু আরও বলেন, 'মালদ্বীপ ভারতের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করবে না। আমরা অন্য কোনো দেশকে আমাদের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ বা এটাকে খাটো করতে দেব না।'
মালদ্বীপের বন্দরে যাচ্ছে চীনা জাহাজ, উদ্বেগে ভারত
এদিকে, চীনের একটি গবেষণা জাহাজের চলতি সপ্তাহে মালদ্বীপের একটি বন্দরে ভেড়ার কথা, যা নিয়ে বেইজিং, দিলিস্ন ও মালের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। দাপ্তরিকভাবে চীনা জাহাজ 'শিয়াং ইয়াং হং ৩' মালদ্বীপের বন্দরে যাচ্ছে 'পোর্ট কলে'। ওই বন্দরে ভেড়ার পর জাহাজটির কর্মীদের একাংশ জাহাজটি ছাড়াবেন, তাদের জায়গায় নতুন আরেকদল কর্মী তাতে উঠবেন আর জাহাজটি তাদের শেষ হয়ে আসা রসদ পূরণ করে নেবে।
সাগরে দীর্ঘ ভ্রমণে থাকা জাহাজগুলোর ক্ষেত্রে নিকটবর্তী বন্দরে যাত্রাবিরতি করা নিয়মিত ঘটনা হলেও চীনা জাহাজটি ক্ষেত্রে এটিকে 'নিরীহ যাত্রাবিরতি' হিসেবে দেখছে না দিলিস্ন। বরং এটিকে কম করে হলেও 'কূটনৈতিক উপেক্ষা' হিসেবে বিবেচনা করছে তারা। তবে দিলিস্নর কারও কারও আশঙ্কা, এটি গবেষণার নামে তথ্য সংগ্রহের একটি মিশন হতে পারে, যা পরে চীনের সামরিক বাহিনী তাদের ডুবোজাহাজ চালানোর কাজে ব্যবহার করবে।
চীনের বিশেষজ্ঞরা অবশ্য দিলিস্নর এসব উদ্বেগ উড়িয়ে দিয়েছেন। চীনের সামরিক বাহিনী 'গণমুক্তি ফৌজ'র সাবেক কর্নেল জউ বো বলেন, 'চীনের জাহাজটি ভারত মহাসাগরে বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালনা করছে। এটি পুরোপুরি বৈধভাবে গভীর সাগরে এসব কাজ করছে।'
ভারত মহাসাগরে প্রভাব বিস্তারের জন্য দিলিস্নর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে বেইজিং। উত্তরে হিমালয় অঞ্চলের সীমান্ত নিয়েও দুই দেশের মধ্যে বিরোধ আছে। এর আগে ২০১৪ সালে চীনের নৌবাহিনীর দুটি ডুবোজাহাজ শ্রীলংকার কলম্বো বন্দরে নোঙর করেছিল। গত দুই বছরে চীনের দুটি গবেষণা জাহাজ শ্রীলংকায় গিয়েছিল। এসব নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিল ভারত।