ভারতের ঝাড়খন্ডের মহাজোটের সরকারের পতন ঘটাতে চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু সরকার ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা'য় ঝাড়খন্ডে গিয়ে শনিবার এমনই দাবি করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। শুক্রবার রাহুলের 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা' পশ্চিমবঙ্গ থেকে ঝাড়খন্ডে ঢুকেছে। সেখানে এক জনসভায় বিজেপিকে 'একহাত' নিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এই অভিযোগ করেন। তথ্যসূত্র : এবিপি নিউজ
শুক্রবার ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন চম্পই সোরেন। তার সঙ্গে কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতা আলমগীর আলম এবং আরজেডির সত্যানন্দ ভোক্তা মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। নতুন সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, 'বিজেপি অর্থের শক্তি এবং তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহার করছে। তবে আমি বিজেপিকে ভয় পাই না।' তিনি আরও বলেন, "প্রথম 'ভারত জোড়ো যাত্রা' ছিল আরএসএস ও বিজেপির 'বিভাজনমূলক এজেন্ডা'র বিরুদ্ধে ছিল। এবারের যাত্রা দেশের মানুষের জন্য ন্যায়বিচার চেয়ে।"
এরপরই রাহুল বলেন, বিজেপি ঝাড়খন্ডে একটি নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু 'ইনডিয়া জোট' তা হতে দেয়নি। ঝাড়খন্ডে দাঁড়িয়ে দেশে 'মূল্যবৃদ্ধি এবং বেকারত্ব বৃদ্ধি'র ইসু্যকে তুলে ধরেছেন রাহুল। তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতে যুবদের কর্মসংস্থান পাওয়া অসম্ভব। দেশে (ভারত) বেকারত্বের হার ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।'
উলেস্নখ্য, গত বুধবার হেমন্ত সোরেন ইডির হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর ঝাড়খন্ডের রাজনৈতিক পটভূমিকা পাল্টে যায়। এরপরে কে ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসবেন, তা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা চলছিল। তবে শেষ পর্যন্ত জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডি-সিপিআইএমএল (লিবারেশন) জোট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে বেছে নেন চম্পই সোরেনকে। শুক্রবার ঝাড়খন্ডে নতুন সরকার গঠন করেন তিনি। তবে ১০ দিনের মধ্যে তার সরকারকে আস্থাভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে।
আগামী সোমবারই বিধানসভায় আস্থাভোট হবে। সেই ভোটের আগে দলের বিধায়কদের নিয়ে সর্তক বিহারের 'মহাজোট'। বিজেপি যাতে বিধায়ক 'কেনাবেচা' করতে না পারে, তাই শুক্রবার বিকালেই ঝাড়খন্ডের জোট ৪০ জন বিধায়ককে হায়দরাবাদে 'উড়িয়ে' নিয়ে যাওয়া হয়। গত বুধবার গ্রেপ্তারের আগে হেমন্ত সোরেন পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পরই ঝাড়খন্ডের রাজনীতিতে 'পালা বদলের' জল্পনা শুরু হয়েছিল। ওই রাজ্যের ৮১টি আসনের বিধানসভায় ৩৮টি এনডিএ জোটের দখলে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, বিজেপি নেতৃত্ব বিরোধী জোটের বিধায়ক ভাঙানোর চেষ্টা করতে পারেন। তাই স্থির হয় বৃহস্পতিবারই দলের বিধায়কদের পাঠিয়ে দেওয়া হবে কংগ্রেস শাসিত রাজ্য তেলেঙ্গনার হায়দরাবাদে। সেখানে কোনো একটি রিসোর্টে সব বিধায়ককে এক সঙ্গে রাখা হবে। তবে বৃহস্পতিবার তা সম্ভব না হলেও শুক্রবার হায়দরাবাদে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ৪০ বিধায়ককে। সেখানে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তেলেঙ্গনার পর্যবেক্ষক দীপা দাশ মুন্সি বিধায়কদের স্বাগত জানান। দিন-সাতেকের জন্য একটি রিসোর্ট ভাড়া করা হয়েছে। আস্থাভোটের আগেই ফের বিধায়কদের ঝাড়খন্ডে ফিরিয়ে আনা হবে।