রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বলছে আইএমএফ

রাশিয়ার যুদ্ধকালীন অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আমেরিকাকে ছাড়িয়ে যাবে

যাযাদি ডেস্ক
  ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
রাশিয়ার যুদ্ধকালীন অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আমেরিকাকে ছাড়িয়ে যাবে

ইউক্রেনে প্রায় তিন বছর ধরে যুদ্ধে লিপ্ত রাশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আমেরিকাকে ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তাদের মতে, তিন মাস আগে দেওয়া পূর্বাভাসের চেয়েও দ্রম্নততম গতিতে ঘটবে এই প্রবৃদ্ধি। রুশ অর্থনীতির এমন অগ্রগতি দেশটির ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তথ্যসূত্র : নিউজউইক

আইএমএফ বলেছে, ২০২৪ সালে রাশিয়ার অর্থনীতি দুই দশমিক ছয় শতাংশ বৃদ্ধি পাবে, যা দেশটির অক্টোবরের জিডিপি বৃদ্ধির চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। তখন দেশটির মোট জিডিপি এক দশমিক এক শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল।

অন্যদিকে, আইএমএফের পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছর মার্কিন অর্থনীতি মাত্র দুই দশমিক এক শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। গত মঙ্গলবার আইএমএফ প্রকাশিত 'ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকে' দেখা গেছে, রাশিয়ার এই প্রবৃদ্ধি অন্য যে কোনো দেশের অর্থনীতির চেয়ে অনেক বেশি।

গত নভেম্বরে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধির যে পূর্বাভাস দিয়েছিল, এর তুলনায় আইএমএফ-এর এই পূর্বাভাস আরও বেশি ইতিবাচক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছিল, দেশটির প্রবৃদ্ধি শূন্য দশমিক পাঁচ থেকে এক দশমিক পাঁচ শতাংশের মধ্যে হতে পারে। চলতি বছর দুই দশমিক তিন শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে রাশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন-বিষয়ক মন্ত্রণালয়। গত জানুয়ারিতে বিশ্ব ব্যাংকের দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, ২০২৪ সালে রাশিয়ায় এক দশমিক তিন এবং ২০২৫ সালে শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।

'ইনভেস্ট ডট কনটক্সিয়া ডট কম'র বাজার বিশ্লেষক জারগ্রোস দ্রজড বলেছেন, 'আইএমএফ ঘোষণা দিয়েছে, রাশিয়ার অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আগের পূর্বাভাসের চেয়েও দ্রম্নতগতিতে বৃদ্ধি পাবে এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো দেশটির এই অগ্রগতি ঠেকাতে পারবে না। এতে অবশ্য আমাদের অবাক হওয়ার কিছু নেই।'

ইউক্রেনের সর্বাত্মক আক্রমণের পর বিশ্ব অর্থনীতি থেকে রাশিয়াকে একঘরে করার লক্ষ্যে আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলো দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তখন মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক রাশিয়ার তিন হাজার কোটি ডলার জব্দ করেছিল। এরপর রাশিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্য তেল ও গ্যাসকে লক্ষ্যবস্তু করে তারা।

এর প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় রাশিয়া। তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যে মনোযোগ দেয় দেশটি। ব্যবসায়িক কৌশলের অংশ হিসেবে জ্বালানি পণ্য রপ্তানিতে ছাড়ের ঘোষণা দেয় মস্কো। এতে অপরিশোধিত জ্বালানি পণ্য ক্রয় করে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে চীন ও ভারত। দ্রজড বলেন, 'এই নিষেধাজ্ঞা রাশিয়া নয়; বরং পশ্চিমাদের ওপরই প্রভাব ফেলেছে। তারা তেল ও গ্যাসের মতো স্বল্পমূল্যের জ্বালানি উৎস থেকে উলেস্নখযোগ্যভাবে বঞ্চিত হয়েছে।'

তবে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসের পাশাপাশি কিছু বিষয়ে সতর্কও করেছে আইএমএফ। সংস্থাটির প্রধান অর্থনীতিবিদ জানিয়েছেন, প্রাথমিক তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তবে তারা রাশিয়ার পরিসংখ্যানের তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের চেষ্টা করছেন।

ইউরোপীয় কাউন্সিল অব ফরেন রিলেশনসের (ইসিএফআর) ভূ-অর্থনীতির নীতিবিষয়ক জ্যেষ্ঠ গবেষক আগাথে ডেমারেজ। ২০২৩ সালের মার্চে ফরেন পলিসি সাময়িকীতে এক নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, রাশিয়ার অর্থনীতির উন্নয়ন-বিষয়ক ক্রেমলিনের পরিসংখ্যান 'বিশ্বাস করা যায় না'।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে