ভারতে লোকসভা নির্বাচনের আগে সবশেষ অন্তর্র্বর্তী বাজেট ঘোষণা করেছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। তবে বাজেটে দেশটির উত্তর ও দক্ষিণের রাজ্যগুলোর জন্য অর্থ বরাদ্দে ব্যাপক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। এই সমস্যার সমাধান না হলে দক্ষিণের রাজ্যগুলোর জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠন দরকার হবে বলে মন্তব্য করেছেন কর্ণাটকের একজন এমপি। তথ্যসূত্র : এনডিটিভি
গত বছরের নির্বাচনে জিতে কর্ণাটকের ক্ষমতা দখল করেছে কংগ্রেস। তারা অভিযোগ তুলেছে, কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে উপযুক্ত অর্থ পাচ্ছে না রাজ্যটি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করে আসছেন।
দক্ষিণ ভারত 'সব বিষয়ে সব পর্যায়ে অবিচারের শিকার' অভিযোগ করে কর্ণাটকের কংগ্রেস এমপি ডি কে সুরেশ কুমার বলেন, 'আমরা আমাদের অর্থ চাই। জিএসটি, কাস্টম বা প্রত্যক্ষ কর, যা-ই হোক না কেন, আমরা আমাদের ন্যায্য অংশ চাই... আমাদের উন্নয়নের অর্থের অংশ উত্তর ভারতে খরচ করা হচ্ছে।' বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, 'আমরা যদি আগামী দিনে এর নিন্দা না করি, হিন্দিভাষী অঞ্চল আমাদের ওপর যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে, তার ফলে আমাদের আলাদা দেশের দাবি জানাতে হবে।'
সুরেশের এই মন্তব্যের সমালোচনা করে বিজেপি বলছে, কংগ্রেস 'ভারত জোড়ো'র (ভারত জোড়া লাগাও) পরিবর্তে 'ভারত তোড়ো' (ভারত ভাঙো)-তে নজর দিয়েছে। কংগ্রেসের মানসিকতা দেশকে বিভক্ত করছে। তারা ১৯৪৭ সালেও এটি করেছিল। এই লোকগুলো উত্তর ও দক্ষিণ ভারতকে ভাগ করার কথা বলছে। তারা তো সংবিধানকে সমুন্নত রাখার এবং দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখার শপথ নিয়েছিলেন। এখন, এসব কী?
এর আগে, চলতি মাসের শুরুর দিকে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করে রাজ্য কংগ্রেস দাবি করে, ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম চালিকাশক্তি হলো কর্ণাটক। কিন্তু বিনিময়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে খুব সামান্যই পাচ্ছে তারা। রাজ্য কংগ্রেসের মুখপাত্র এম লক্ষ্ণনা জানান, করপোরেট ও অন্যান্য করের ক্ষেত্রে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কর্ণাটকের অবদান ছিল ২ দশমিক ২৫ লাখ কোটি রুপি। কিন্তু ট্যাক্স ডিভোলু্যশনের মাধ্যমে রাজ্যটি মাত্র ৩৭ হাজার ২৫২ কোটি রুপি পাওয়ার আশা করতে পারে। কংগ্রেসের দাবি, বিভিন্ন দিক থেকে প্রায় ৪ লাখ কোটি রুপি কর আদায় সত্ত্বেও নতুন অর্থবছরে কর্ণাটক সর্বোচ্চ ৫০ হাজার ২৫৭ কোটি রুপি পাবে। সেখানে তাদের নূ্যনতম ১ লাখ কোটি রুপি পাওয়া উচিত বলে দাবি করেছেন দলটির মুখপাত্র।
কর্ণাটকের মতো একই অভিযোগ এর আগে কেরালা থেকে এসেছিল। সম্প্রতি তামিলনাড়ুর এমকে স্ট্যালিনের নেতৃত্বাধীন ডিএমকে সরকারও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বাজেট বৈষম্যের অভিযোগ এনেছে।