আতঙ্কে গাজাবাসী
রাফাহতেও হামলা চালাবে ইসরাইল
গণকবরের সন্ধান, আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি ফিলিস্তিনিদের
প্রকাশ | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সর্বশেষ 'নিরাপদ অঞ্চল' রাফাহতেও হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন দখলদার ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্ত। শুক্রবার মাইক্রো বস্নগিং সাইট 'এক্সে' তিনি এমন ঘোষণা দেওয়ার পর চরম আতঙ্কে পড়েছেন গাজাবাসী। রাফাহকে নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল ইসরাইলই। তারা খান ইউনিসসহ অন্য অঞ্চলের বাসিন্দাদের রাফাহতে চলে যেতে বলেছিল। কিন্তু এখন সেখানেও হামলার অর্থ হলো- ইসরাইলি সেনারা নতুন গণহত্যা চালাবে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা
ছোট জনপদ রাফাহ শহরে বর্তমানে প্রায় ১৯ লাখ মানুষ বসবাস করছেন। বাড়ি-ঘর হারিয়ে সেখানে লাখ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। শুধু প্রাণ বাঁচানোর জন্য বর্তমানে ছোট্ট এই অঞ্চলে সর্বনিম্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী ছাড়াই গাদাগাদি করে থাকছেন মানুষ। কিন্তু এখন রাফাহতে দখলদার ইসরাইলের মন্ত্রী হামলা চালানোর হুমকি দেওয়ায় সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। কারণ তাদের যাওয়ার মতো আর কোনো জায়গা নেই।
রাফাহতে হামলার হুমকি দিয়ে ইয়োয়াভ গ্যালান্ত বলেছেন, 'হামাসের খান ইউনিস ব্রিগেডকে নির্মূল করা হয়েছে। আমরা সেখানে অভিযান শেষ করব এবং রাফাহতে এটি অব্যাহত রাখব। হামাসের ওপর আমরা যত চাপ প্রয়োগ করব, ততই জিম্মিদের কাছে পৌঁছাব, যা অন্য সবকিছুর চেয়ে বেশি। আমরা শেষ পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত রাখব। এ ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।'
গাজায় গণকবরের সন্ধান, আন্তর্জাতিক
তদন্তের দাবি ফিলিস্তিনিদের
গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের মধ্যেই একটি গণকবরের সন্ধান পাওয়ার পর আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। পশ্চিম তীরভিত্তিক ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, যেভাবে মানুষকে মৃতু্যদন্ড দেওয়া হয়, ঠিক সেভাবেই অসহায় ফিলিস্তিনি বেসামরিকদের হত্যা করছে ইসরাইলি সেনারা। আর গাজায় ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধরত ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিষয়টি নথিভুক্ত করার। মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে গণকবরের 'নথি' তৈরির আহ্বান জানিয়েছে গাজার শাসক গোষ্ঠী হামাসও। টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে একে 'জঘন্য অপরাধ' বলেছে ফিলিস্তিনের এই সশস্ত্র গোষ্ঠী।
উত্তর গাজার হামাদ স্কুলের কাছে 'কালো পস্নাস্টিকের ব্যাগে' চোখ বাঁধা ও হাতকড়া পরা ফিলিস্তিনি বন্দিদের অন্তত ৩০টি মৃতদেহ পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে মৃতদেহগুলোতে পচন ধরেছে। এ ঘটনাকে ইসরাইলি 'গণহত্যা' হিসেবে বর্ণনা করে, গত বুধবার আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 'গণহত্যার সত্যতা ও আমাদের জনগণ কী ধরনের ভীতিকর নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, তা খুঁজে বের করতে আন্তর্জাতিক তদন্ত দলকে গাজা পরিদর্শনের আহ্বান' জানানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ব্যাগে ভরার আগে বন্দিদের চোখ বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। তারপর হত্যা করা হয়। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, 'স্কুল পরিষ্কার করতে এসে স্কুল প্রাঙ্গণে ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই উঁচু ঢিবি দেখতে পাই। ওই ঢিবিটার খানিকটা মাটি সরাতেই কালো পস্নাস্টিক ব্যাগগুলো নজরে আসে। ব্যাগ খুলতেই চোখ আর হাত-পা বাঁধা পচা লাশ পাওয়া যায়। পস্নাস্টিকের দড়ি দিয়ে তাদের হাত-পা বাঁধা হয়েছিল। আর চোখ-মাথা ঢাকা ছিল কাপড় দিয়ে।'