গাজায় আগ্রাসন
আইসিজের রায় মানে না ইসরাইল
আন্তর্জাতিক আদালত ন্যায়বিচার চায় না, এটি ইহুদি জনগণের ওপর নিপীড়ন সমর্থন করে জাতিসংঘ আদালতের রায়ের পর নতুন ভিডিও প্রকাশ হামাসের
প্রকাশ | ২৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের আদেশ তার দেশ মানে না। তিনি বলেছেন, এই রায় শুধু মিথ্যাই নয় বরং আপত্তিকরও। ফিলিস্তিনের গাজায় বর্বর আক্রমণ ও গণহত্যার অভিযোগে ইসরাইলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের তথা আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই মামলার রায়ে শুক্রবার গাজায় গণহত্যার মতো অপরাধ ঠেকাতে এবং বেসামরিক ফিলিস্তিনদের সহায়তা দিতে ইসরাইলকে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত বলেছেন, গণহত্যা কনভেনশনের অনুচ্ছেদ-২ এর সব ধারা রক্ষায় ইসরাইলকে তার ক্ষমতার ব্যবহার করতে হবে। তথ্যসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, আরটি, আল-জাজিরা, এএফপি
গাজায় ইসরাইলি সামরিক পদক্ষেপ দ্রম্নত বন্ধের আদেশ ছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকা যা চেয়েছিল, তার বেশিরভাগই পূরণ হয়েছে রায়ে। আদালত ইসরাইলকে নির্দেশ দিয়েছে, গণহত্যা কনভেনশনের আওতায় পড়তে পারে, এমন যে কোনো কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। একই সঙ্গে গাজায় দেশটির সেনারা যাতে কোনো গণহত্যামূলক কাজ না করে সেটিও নিশ্চিত করতে বলেছে।
আন্তর্জাতিক আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিন। ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, আন্তর্জাতিক আদালতের এই রায় প্রমাণ করেছে, কোনো রাষ্ট্রই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
এদিকে, গাজায় গণহত্যা ইসু্যতে দক্ষিণ আফ্রিকার করা মামলায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) রায়কে ভন্ডামি বলেছেন ইসরাইলের উগ্রপন্থি জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গাভির। নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে অবস্থিত ওই আদালতকে কটাক্ষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 'এক্সে' এই উগ্রপন্থি ইহুদি নেতা লিখেছেন, 'হেগ শ্মাগ (শ্মাক)। হেগের ইহুদিবিদ্বেষী আদালতের রায় প্রমাণ করে- এই আদালত ন্যায়বিচার চায় না, বরং এটি ইহুদি জনগণের ওপর নিপীড়ন সমর্থন করে। হলোকাস্টের সময় তারা নীরব ছিল এবং আজ তারা তাদের ভন্ডামিতে আরও এক স্তর অগ্রসর হয়েছে।' আইসিজের রায়ের সমালোচনায় ইতামার বেন গাভির আরও বলেন, 'আমরা এ ধরনের বিপজ্জনক রায় মেনে চলতে পারি না, যা ইসরাইল রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ অস্তিত্বকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে। সম্পূর্ণ বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অবশ্যই শত্রম্নকে নির্মূল করতে হবে।'
জাতিসংঘ আদালতের রায়ের
পর নতুন ভিডিও হামাসের
এদিকে, জাতিসংঘের আদালতের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় নতুন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। ভিডিওটিতে তিন নারী জিম্মিকে কথা বলতে দেখা গেছে। শুক্রবার প্রকাশিত সেই ভিডিওটির দৈর্ঘ্য পাঁচ মিনিট। ভিডিওর নারীদের তিনজনই বয়সে তরুণী এবং তাদের মধ্যে দুইজন সেনা সদস্য এবং বাকি একজন সাধারণ নাগরিক। তরুণীরা জানিয়েছেন, গত ১০৭ দিন ধরে বন্দি রয়েছেন তারা।
ভিডিও ফুটেজে ওই তিন তরুণীর কেউই নিজেদের নাম-ঠিকানা বলেননি।
গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘোষিত মানবিক বিরতির সাত দিনে মোট ১০৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। বাকি ১৩২ জন এখনো তাদের হাতে আটক রয়েছেন। এই ১৩২ জিম্মির মধ্যে ভিডিওর তিন নারীও রয়েছেন।
শুক্রবারের রায়ে আন্তর্জাতিক আদালত গাজা উপত্যকায় বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার পাশাপাশি উপত্যকায় ত্রাণ সরবরাহ বৃদ্ধির নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছে। রায় ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভিডিওটি প্রকাশ করে হামাস। ধারণা করা হচ্ছে, গত রোববার সেটি ধারণ করা হয়েছিল। তবে কবে নাগাদ তাদের মুক্তি দেওয়া হবে, এ সংক্রান্ত কোনো ইঙ্গিত ভিডিওটিতে পাওয়া যায়নি।