নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে প্রথম মৃতু্যদন্ড কার্যকর আমেরিকায়
প্রকাশ | ২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
বিশ্বে প্রথমবারের মতো নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগের মাধ্যমে এক ব্যক্তির মৃতু্যদন্ড কার্যকর করা হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার আমেরিকার আলাবামায় 'ভয়ংকর' এই পদ্ধতিতে মৃতু্যদন্ড কার্যকর করা হয়। যদিও এভাবে মৃতু্যদন্ড কার্যকর নিয়ে আগেই সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছিল। তথ্যসূত্র : বিবিসি
প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন ব্যবহার করে সর্বোচ্চ সাজা কার্যকর করার পদ্ধতি চালু হওয়ার চার দশক পর এবার নতুন আরেকটি পদ্ধতি ব্যবহার করল আমেরিকা। এদিন আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত খুনি কেনেথ স্মিথের মৃতু্যদন্ড কার্যকর করা হয়।
ভাড়াটে খুনি স্মিথকে ১৯৮৮ সালে মৃতু্যদন্ড দেওয়া হয়। কিন্তু তার মৃতু্যদন্ড একবার কার্যকর করার চেষ্টা করা হলেও তিনি বেঁচে যান। বিরল ওই ঘটনাটি ঘটে ২০২২ সালের নভেম্বরে। ওই সময় তার দেহের শিরায় একটি সুঁই ঢোকানোর জন্য কয়েক ঘণ্টা চেষ্টা করা হলেও তা প্রবেশ করানো যায়নি। ওই ঘটনার পর আলাবামার কর্মকর্তারা প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন দিয়ে তার মৃতু্যদন্ড কার্যকর করা বাতিল করেন। এরপর অঙ্গরাজ্যটি নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগে মৃতু্যদন্ড কার্যকর করার পদ্ধতি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়। নতুন এই পদ্ধতিকে 'মানুষের জানা মৃতু্যদন্ড কার্যকরের সবচেয়ে কম যন্ত্রণাদায়ক ও মানবিক উপায়' বলে অভিহিত করেছিল তারা।
এর আগে নাইট্রোজেন গ্যাসের মাধ্যমে 'ভয়ংকর পদ্ধতিতে' মৃতু্যদন্ড কার্যকর আটকাতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কেনেথ স্মিথের আইনজীবীরা। কিন্তু মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট এবং নিম্ন আপিল আদালত এই আবেদন খারিজ করে দেয়। পরে কেনেথের আইনজীবীরা বলেছিলেন, এভাবে মৃতু্যদন্ড কার্যকরের বিষয়টি নিষ্ঠুরতা এবং অস্বাভাবিক শাস্তির সমান। তারা আরও বলেন, মাস্কের মাধ্যমে স্মিথকে যখন নাইট্রোজেন গ্যাস শুষে নিতে বলা হবে, তখন নিজের বমিতেই দমবন্ধ হয়ে যন্ত্রণাদায়ক মৃতু্য হবে তার। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংগঠনও এই মৃতু্যদন্ড কার্যকর নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল। সংস্থাটি দন্ড কার্যকর স্থগিত করার দাবিও জানায়।
১৯৮৮ সালে অপর এক সহযোগীকে নিয়ে মাত্র এক হাজার ডলারের বিনিময়ে এক নারীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন স্মিথ। এ ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর দুইজনকেই মৃতু্যদন্ড দেন আদালত। ২০১০ সালে স্মিথের সহযোগীর দন্ড কার্যকর করা হয়।
স্মিথের মৃতু্যদন্ড কার্যকর ও তার মৃতু্য কীভাবে হয়েছে সেটি দেখেছেন পাঁচজন সাংবাদিক। তাদের দন্ড কার্যকরের স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ওই সাংবাদিকদের একজন হলেন লি হেডগেপেথ। তিনি জানিয়েছেন, যে বিশেষ খাটে স্মিথকে শোয়ানো হয়েছিল, সেটিতে প্রচন্ড ছটফট করেছেন তিনি এবং সবমিলিয়ে দন্ড কার্যকরে ২৫ মিনিট সময় লেগেছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, যখন মুখে নাইট্রোজেন গ্যাসের মাস্ক পরানো হয় তখন স্মিথ উপস্থিত সবার উদ্দেশে বলেন, 'আলাবামা আজ মানবতাকে এক ধাপ পেছনে নিয়ে গেছে। আমাকে সমর্থন করার জন্য ধন্যবাদ। সবাইকে ভালোবাসি।' যখন মাস্কের মাধ্যমে নাইট্রোজেন গ্যাস তার মুখে প্রবেশ করা শুরু করে তখন স্মিথ হাসেন এবং তার পরিবারের সদস্যদের দিকে তাকিয়ে ভালোবাসার চিহ্ন দেখান বলে জানিয়েছেন এই সাংবাদিক।