ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান শহর খান ইউনিস শহর ঘিরে ফেলেছে তাদের সেনারা। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ইসরাইলি বাহিনী বলেছে, 'সোমবার খান ইউনিসে বিস্তৃত অভিযান চালিয়েছে সেনারা। ওই সময় শহরটিকে ঘিরে ফেলে এবং সেখানে অভিযান আরও গভীর করে তারা। এই এলাকাটি হামাসের খান ইউনিস ব্রিগেডের গুরুত্বপূর্ণ দুর্গ।' আইডিএফ আরও জানিয়েছে, সেখানে তারা হামাসের যোদ্ধাদের সঙ্গে মুখোমুখি যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল। তথ্যসূত্র : গার্ডিয়ান, আল-জাজিরা, বিবিসি, এএফপি
খান ইউনিসের নিয়ন্ত্রণ নিতে গত সপ্তাহে সেখানে তীব্র হামলা চালানো শুরু করে ইসরাইল। তাদের দাবি, গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের যোদ্ধারা যে হামলা চালিয়েছিল, সেটির মূল পরিকল্পনাকারীরা খান ইউনিসে রয়েছেন।
উত্তরাঞ্চলে দখলদার ইসরাইলি সেনাদের হামলা থেকে বাঁচতে খান ইউনিসে আশ্রয় নিয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। তাদের অনেকে রাস্তার ওপর তাঁবু দিয়ে অস্থায়ী বাসস্থান তৈরি করেছেন। এসব সাধারণ ফিলিস্তিনি আবারও উচ্ছেদের শঙ্কায় পড়েছেন। তিন মাস আগে হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর আগে ইসরাইলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তারা গাজা থেকে হামাসকে পুরোপুরি নির্মূল করবে। তবে তারা তাদের সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি।
খান ইউনিসে হাসপাতালে চড়াও
ইসরাইলি বাহিনী সোমবার একটি হাসপাতালে চড়াও হয়েছে এবং আরেকটি হাসপাতাল অবরুদ্ধ করেছে। এতে ট্রমা কেয়ার থেকে আহতরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গাজার দক্ষিণের প্রধান নগরী খান ইউনিসের পশ্চিমে ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলের কাছে প্রথমবারের মতো আল-মাওয়াসি জেলায় অগ্রসর হয়েছে ইসরাইলি সেনারা। সেখানে তারা আল-খাইর হাসপাতলে ঢুকে পড়ে চিকিৎসাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে।
খান ইউনিসে প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্টের সোসাইটির (পিআরসিএস) সদর দপ্তরেও হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। সোমবারের ওই হামলায় কমপক্ষে ৬৫ জন নিহত হয়েছেন।
এক দিনে ২১ ইসরাইলি সেনা নিহত
এদিকে, ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলেছে, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে তিন মাস ধরে চলা লড়াইয়ে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার শিকার হয়েছে তাদের সেনা সদস্যরা। এতে অন্তত ২১ সেনা নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ডানিয়েল হ্যাগারি বলেন, মধ্য গাজার দুটি ভবন উড়িয়ে দিতে ইসরাইলি সেনা সদস্যরা বিস্ফোরক প্রস্তুত করছিল। এ সময় ইসরাইলি বাহিনীর একটি ট্যাংকের কাছে রকেট-চালিত গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। একসঙ্গে গ্রেনেড আর বিস্ফোরকের বিস্ফোরণে ভবন ধসে পড়ে। এতে ভবনের ভেতর থাকা সেনা সদস্যরাও ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে।