মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশটির জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহীদের সংঘর্ষ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। দেশটির কয়েকটি অঞ্চলে বিদ্রোহীদের সঙ্গে চলছে সামরিক বাহিনীর এই সংঘাত। আর সশস্ত্র জাতিগত গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যেই ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মিজোরামে পালিয়ে গেছে মিয়ানমারের প্রায় ৩০০ সেনা। বিদ্রোহীদের সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় সংঘর্ষের পর তারা ভারতে প্রবেশ করে। তথ্যসূত্র : এনডিটিভি
ভারতের কয়েকটি সূত্র জানিয়েছেন, গত বুধবার বিকালে মিয়ানমারের ২৭৬ জন সেনা তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে মিজোরাম-মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত ট্রাইজেকশনের বান্দুকবাঙ্গা গ্রামে পৌঁছেছে। পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইনে জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) যোদ্ধারা সেনাবাহিনীর শিবিরগুলো দখল করার পর সেনা সদস্যরা ভারতে আশ্রয় নেয়। তবে তাদের দ্রম্নততম সময়ে প্রত্যাবাসন করা হবে। ভারতে পালিয়ে আসা এসব সেনার আসাম রাইফেলস ক্যাম্পে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
আরাকান আর্মি ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী একটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করার কয়েকদিন পর দেশটির এত বিপুল সংখ্যক সেনার ভারতে আশ্রয় নেওয়ার খবর পাওয়া গেল। সর্বশেষ এই আগমনের সঙ্গে গত বছরের ১৩ নভেম্বর থেকে মিয়ানমার থেকে ভারতে পালিয়ে আসা সেনার সংখ্যা ৬৩৬ জনে পৌঁছেছে। অবশ্য মিয়ানমারের সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করলেও কয়েক দিনের মধ্যেই তাদের আবারও নিজেদের দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
এর আগে পালিয়ে আসা সেনাদের ভারতীয় বিমান বাহিনীর (আইএএফ) হেলিকপ্টারে করে মণিপুরের মোরেহতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে সেখান থেকে তাদেরকে মিয়ানমার সেনা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে ভারত। এছাড়া গত ২ ও ৯ জানুয়ারি আইজলের লেংপুই বিমানবন্দর থেকে মিয়ানমারের সামরিক বিমানে করে বিপুল সংখ্যক সেনাকে তাদের দেশে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
উলেস্নখ্য, গত বছরের অক্টোবরের শেষের দিকে তিনটি জাতিগত সংখ্যালঘু বাহিনী মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে। আক্রমণের পর তারা কিছু শহর ও সামরিক পোস্ট দখল করে নেয় এবং সরকারি সেনারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ২০২১ সালে সামরিক অভু্যত্থানে ক্ষমতা দখল করার পর এবারই প্রথম মিয়ানমারের জেনারেলরা সবচেয়ে বড় পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছে।