রাহুলের ন্যায় যাত্রা :পথে নামল ঘরবন্দি মণিপুর
প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
গত বছরের জানুয়ারির শেষে 'ভারত জোড়ো যাত্রা' যখন কাশ্মীরে পৌঁছেছিল, তখন হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে এসেছিল। হাতে ছিল ভারতের জাতীয় পতাকা। রাস্তার দু'ধারে রাহুল গান্ধীর পদযাত্রা দেখতে তারা ভিড় জমিয়েছিল। শুধু রাহুল গান্ধীকে দেখতেই সেই ভিড় ছিল না। ২০১৯ সালের আগস্টে জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ ও রাজ্যের বিভাজনের পরে গোটা কাশ্মীর কার্যত ঘরবন্দি ছিল। আজ কারফিউ, কাল ইন্টারনেট বন্ধ, পরশু হরতাল- তিন-চার বছর কোনো রাজনৈতিক সমাবেশ হয়নি। রাহুলের 'ভারত জোড়ো যাত্রা' ছিল প্রথম কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি। তথ্যসূত্র : এবিপি নিউজ
গত বছরের মে মাসে মণিপুরে কুকি-মেইতেই সংঘর্ষ শুরুর পর উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে ২০০ জনের বেশি মানুষের মৃতু্য হয়েছে। প্রায় ৭০ হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়ে ত্রাণ শিবিরে। গত আট মাস ধরে মণিপুরেও আজ কারফিউ, কাল গুলিগোলা, পরশু ইন্টারনেট বন্ধ চলছে। এই আট মাস রাজনৈতিক সমাবেশ দেখেনি ইম্ফল বা মণিপুর।
আট মাস কার্যত ঘরবন্দি মণিপুরের মানুষ রোববার থৌবালে রাহুল গান্ধীর 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা'র শুরুতে জনসমাবেশে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমায়। শত শত মণিপুরি নারী সকাল থেকে বসেছিলেন থৌবালের খংজোম ওয়ার মেমোরিয়ালের ময়দানের পাশের মাঠে। শুধু রাহুলকে দেখতে নয়। অনেক দিন পর ভিড়, মেলামেশার স্বাদ নিতেও।
এই সুযোগ থেকে রাজনৈতিক ফসল ঘরে তুলতে রাহুল গান্ধী মনে করিয়ে দেন, গত মে মাস থেকে মণিপুরে সহিংসতা চললেও আজ পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মণিপুরে মানুষের চোখের পানি মোছাতে আসেননি। পিতা-মাতা, ভাই-বোন হারানো মানুষকে বুকে টেনে নিয়ে, হাত ধরতে আসেননি। রাহুল বলেন, লজ্জার কথা। বোধহয় নরেন্দ্র মোদি, বিজেপি, আরএসএসের কাছে মণিপুর ভারতের অংশ নয়।
থৌবালের ময়দানে অনেকেই এসেছিলেন মণিপুরের সহিংসতার আগুনের ছবি নিয়ে। ইম্ফলের কিছু সংগঠন মণিপুরের সংকট নিয়ে পুস্তিকা বিলি করছিলেন। মণিপুরের প্রতি যে অবিচার চলছে, তার বিচারের দাবিতে পস্ন্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই আবেগকে উসকে দিয়ে রাহুল বললেন, 'বিজেপি, আরএসএসের যে বিদ্বেষমূলক দৃষ্টিভঙ্গি, মণিপুর তার চিহ্ন। যে শান্তি, স্নেহ, ভালোবাসা মণিপুরের মানুষের কাছে বড় মূল্যবান ছিল, তা খোয়া গেছে। আমরা তা খুঁজে ফেরত আনব।' তার বক্তব্য, মণিপুরের মানুষের মধ্যে বিভাজন, বিদ্বেষ তৈরি করে অন্যায় করেছে। সেই বিভাজন ঘুচিয়ে, ন্যায়ের দাবিতে 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা' কেবল মাত্র মণিপুর থেকেই শুরু হতে পারত। আর কোথাও থেকে নয়।