নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন

হুতিদের ওপর পশ্চিমা হামলা ব্যর্থ

সামরিক সক্ষমতার এখনো ৭০-৮০ শতাংশ ধরে রেখেছে হুতিরা

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ইয়েমেনের হুতিদের ওপর পশ্চিমা হামলার বেশিরভাগই ব্যর্থ হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে মার্কিন সংবামাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস। শনিবার সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, ইয়েমেনে হুতিদের কথিত অবস্থানের ওপর মার্কিন নেতৃত্বাধীন হামলা তাদের সামরিক সম্ভাবনাকে দুর্বল করতে এবং লোহিত সাগরে শিপিং রুটে আরও হামলা প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তথ্যসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স সম্প্রতি আমেরিকার নেতৃত্বে ইয়েমেনে হামলায় নির্ধারিত লক্ষ্যগুলোর ৯০ শতাংশে আঘাত করেছে বলে দাবি করা হয়। এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, এসব হামলায় হুতিদের ৬০টিরও বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার স্থান ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। তবে নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, সামরিক সক্ষমতার এখনো ৭০-৮০ শতাংশ ধরে রেখেছে হুতিরা। মার্কিন সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, হুতিদের বেশিরভাগ সামরিক সম্পদ ভ্রাম্যমাণ উপায়ে রাখা। তাই প্রয়োজনে সেগুলো তারা দ্রম্নততম সময়ের মধ্যে সরিয়ে বা লুকিয়ে ফেলতে পারে। পাশাপাশি হুতিদের অবস্থান ও স্থাপনা শনাক্ত করা ধারণার চেয়ে কঠিন প্রমাণিত হচ্ছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইল গাজায় হামলার শুরুর পর হুতিরা ইসরাইলে এবং লোহিত সাগরে জাহাজে আক্রমণ করেছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন হুতিদের ওপর হামলার ক্ষয়ক্ষতি বিশ্লেষণ করছে। এরপর আবার হুতিদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হতে পারে। অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা এবং নেদারল্যান্ডসের সমর্থনে আমেরিকা ও যুক্তরাজ্য শুক্রবার ভোরে হুতিদের বিরুদ্ধে হামলা চালায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই হামলাকে সফল বলে উলেস্নখ করেছেন। এই হামলার পর হুতি বাহিনী প্রতিশোধ নেওয়ার ও লোহিত সাগরে হামলার অব্যাহত রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এদিকে, ইয়েমেনে আমেরিকার নেতৃত্বে এই হামলার মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ এতে উদ্বেগ জানিয়েছে। রাশিয়া এই হামলাকে অবৈধ হিসেবে উলেস্নখ করেছে। রাশিয়া জানিয়েছে, এমন হামলা মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষ করে ইয়েমেন ইসু্যতে সাম্প্রতিক উন্নয়নের জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে এবং এটি পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। হুতিদের সামরিক সক্ষমতা কেমন এ নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে 'বিবিসি'। সেখানে বলা হয়েছে, লোহিত সাগরে জাহাজে হুতিদের সাম্প্রতিক হামলায় দেখা গেছে, তারা ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন (ইউএভি) ও চালকবিহীন জাহাজ (ইউএসভিস) ব্যবহার করেছে। এছাড়া শুরুর দিকে হামলায় দেখা যায়, হুতিরা ছোট ছোট নৌকা বা হেলিকপ্টার নিয়ে বড় জাহাজে উঠে পড়ছে এবং সেটা দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। ইউএভি বা তথাকথিত 'কামিকাজে ড্রোন'- যেটা হুতিরা ব্যবহার করছে, ধারণা করা হচ্ছে- এগুলো কাসেফ ড্রোন, সেই সঙ্গে আছে অনেক দূর পর্যন্ত হামলায় সক্ষম সামাদস যুদ্ধবিমান- লেজের দিকে যেটায় ভি আকৃতির পাখা থাকে। এই অস্ত্র হুতিরা ব্যবহার শুরু করে আসছে সৌদি আরবের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের সংঘাতে। 'দ্য ওয়াশিংটন ইন্সটিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসি' বলছে, বিভিন্ন ধরনের জাহাজ বিধ্বংসী ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে হুতিদের, যেগুলো ৮০ কিলোমিটার থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম। এর মধ্যে আছে সায়াদ ও সেজ্জিল মিসাইল। এই থিঙ্কট্যাংক মনে করে, হুতিদের কাছে এমন জাহাজ বিধ্বংসী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও আছে, যা ৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর অবস্থান নির্ণয় করাও কঠিন কারণ তারা খুব দ্রম্নতগতির হয় এবং মুহূর্তের মধ্যে আক্রমণ করতে পারে।