আমাজনের গভীর জঙ্গল থেকে পুরনো এক শহরের সন্ধান পেয়েছেন একদল বিজ্ঞানী। রিমোট সেন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে সম্প্রতি এই প্রাচীন শহরের সন্ধান পান প্রত্নতাত্ত্বিকরা। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মনে করা হচ্ছে, শহরটির অস্তিত্ব ছিল তিন বছর আগে। আমাজনের বৃষ্টি অরণ্যে হারিয়ে যাওয়া শহরটির মতো প্রাচীন কোনো শহর কিংবা জনপদের অস্তিত্ব এখন পর্যন্ত ওই এলাকায় আর পাওয়া যায়নি। তথ্যসূত্র : বিবিসি
দক্ষিণ আমেরিকার বর্তমান মানচিত্র অনুযায়ী, প্রাচীন এই শহরটি ইকুয়েডরের অন্তর্ভুক্ত। প্রাচীন উপানো উপত্যকার নিকটবর্তী একটি আগ্নেয়গিরির পেছনে গবেষণা চালাতে গিয়ে বিশেষ কিছু জিনিস নজরে আসে বিজ্ঞানীদের। তারা বিশেষ রিমোট সেন্সিং প্রযুক্তি 'লিডার'র সাহায্য নেন। ত্রিমাত্রিক ছবিতে পুরনো শহরটির অস্তিত্ব টের পান বিজ্ঞানীরা। সড়কপথে ও ছোট ছোট খালের মাধ্যমে অন্য বড় শহরগুলোর সঙ্গে এই শহরটির যোগাযোগ ছিল বলে জানা গেছে।
ফ্রান্সের বিজ্ঞানীদের দলটির প্রধান স্টিফেন রস্তেঁ বলেন, 'আমরা ইউরোপের চোখ দিয়ে এত দিন সভ্যতাকে দেখে এসেছি। কিন্তু এই ধরনের আবিষ্কার সভ্যতা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আমাদের ধারণা বদলে দিচ্ছে।' বিজ্ঞানী দলের আরেক সদস্য ওই প্রাচীন শহরের বৈশিষ্ট জানিয়ে বলেন, 'সেখানকার অধিকাংশ মানুষ ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে থাকত। অধিকাংশ মানুষই অর্ধনগ্ন হয়ে ঘুরত। কুঁড়েঘরে বাস করত। বন-জঙ্গল সাফ করে কেউ কেউ চাষাবাদ করত।' প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, সেখানে মানুষ বাস করেছে এক হাজার বছর পর্যন্ত। তবে সেখানে কত মানুষের বাস ছিল তা সঠিকভাবে নির্ধারণ করা কঠিন। অবশ্য বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, সেখানে কমপক্ষে ১০ হাজার বাসিন্দা ছিল। ছয় হাজার আবাসিক এবং অনুষ্ঠানের জন্য নির্মিত ভবন ছিল এই নগরীতে। সবচেয়ে বড় রাস্তাগুলো ছিল ৩৩ ফুট চওড়া এবং ছয় থেকে ১২ মাইল পর্যন্ত প্রসারিত।
বিজ্ঞানীরা ১৯৭০-এর দশকে প্রথম এই নগরীর অস্তিত্ব থাকার প্রমাণ খুঁজে পেলেও ২৫ বছরের গবেষণার পর এবারই প্রথম সামগ্রিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ করলেন তারা।