গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন
জাতিসংঘের আদালতে গণহত্যা মামলার শুনানি শুরু
শুনানির শুরুতে বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিচারমন্ত্রী, আজ বক্তব্য রাখবে ইসরাইল
প্রকাশ | ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
গাজায় অবিলম্বে গণহত্যা বন্ধ করতে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি জরুরি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার শুনানি শুরু করেছে জাতিসংঘের আদালত 'ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস' (আইসিজে)। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত জাতিসংঘের এই অঙ্গপ্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক আদালত নামেও পরিচিত। এদিকে, আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার মামলা প্রত্যাখ্যান করতে বিদেশি কূটনীতিকদের চাপ দিয়েছে ইসরাইল। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, রয়টার্স
আদালতের সময়সূচির ওপর ভিত্তি করে স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় ইসরাইলি গণহত্যার শুনানি শুরু হলে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিচারমন্ত্রী রোনাল্ড লামোনা। বৃহস্পতিবারের শুনানি তিন ঘণ্টা চলে। আজ (শুক্রবার) ইসরাইল তার বক্তব্য পেশ করবে। দুই দিনের এই শুনানিতে পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতর্ক তুলে ধরা হবে।
গাজায় ইসরাইলের কর্মকান্ডকে 'গণহত্যা' আখ্যা দিয়ে গত ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। দেশটির পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনে নৃশংস সামরিক হামলা বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ চাওয়া হয়েছে। ইসরাইলি হামলায় ২৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ১০ হাজারের বেশি শিশু রয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে জমা দেওয়া ৮৪ পাতার অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৪৮ সালের গণহত্যার যে কনভেশন, তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। ইসরাইল ও দক্ষিণ আফ্রিকা দুই দেশই জাতিসংঘের গণহত্যার কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ। এতে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আইনি সংস্থা আইসিজেতে বিরোধের নিষ্পত্তি পাওয়ার এখতিয়ার রয়েছে তাদের।
দক্ষিণ আফ্রিকার করা এই মামলায় সমর্থন দিচ্ছে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। ৫৭ সদস্যের এই সংস্থায় সৌদি আরব, ইরান, পাকিস্তান, মরক্কোর মতো দেশ গত ৩০ ডিসেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকাকে সমর্থন জানিয়েছে। ২ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে সমর্থনের কথা জানানো হয়। এ ছাড়া তুরস্ক, জর্ডান, বলিভিয়া, মালদ্বীপ, নামিবিয়া ও পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও সমর্থন জানানো হয়েছে। এর বাইরে বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে সমর্থন জানানো হয়েছে। অবশ্য এ মামলায় বিরোধিতা করছে আমেরিকা।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের ইরেজ সীমান্তে হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। অতর্কিত সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বিমান বাহিনী। ১৬ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও। গত তিন মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা। এরই মধ্যে সেখানে নিহতের সংখ্যা ২৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং আহত ছাড়িয়েছে ৬০ হাজার। এছাড়া এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ছয় হাজার ফিলিস্তিনি।