বিস্ফোরণ ও সংঘাতজনিত কারণে বিশ্বজুড়ে রেকর্ডসংখ্যক বেসামরিক মানুষের মৃতু্য হয়েছে ২০২৩ সালে। যুক্তরাজ্যের অলাভজনক থিংকট্যাংক সংস্থা 'অ্যাকশন অন আর্মড ভায়োলেন্স' (আওয়াভ) সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এ তথ্য। সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে সাত হাজার ৩০৭টি বিস্ফোরণের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে; আর এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১৫ হাজার ৩০৫ জন বেসামরিক মানুষ। তথ্যসূত্র : বিবিসি
আগের বছর ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল চার হাজার ৩২২টি। সেসব ঘটনায় ওই বছর যতসংখ্যক বেসামরিক নিহত হয়েছিলেন, তার তুলনায় ২০২৩ সালে নিহতের হার বেড়েছে ১২২ শতাংশ।
আওয়াভের মতে, ২০২৩ সালে বিস্ফোরণজনিত নিহতের সংখ্যায় উলস্নম্ফনের একটি বড় কারণ হামাস-ইসরাইল সংঘাত। সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৭ অক্টোবর সংঘাত শুরুর পর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে ৯২০টি এবং এসব বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন ৯ হাজার ৩৩৪ জন বেসামরিক।
অ্যাকশন অন আর্মড ভায়োলেন্সের প্রতিবেদনে গাজায় বিস্ফোরণ ও নিহতের যে সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে, বাস্তবে সেই সংখ্যা আরও অনেক বেশি। সংস্থাটি প্রতিবেদনে সেই তথ্য স্বীকারও করেছে। সেই সঙ্গে জানিয়েছে, এই সংঘাতের প্রথম দিকের পরিস্থিতি উলেস্নখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা ছাড়াও গত বছর ইউক্রেন, সুদান, আজারবাইজান, সোমালিয়ায় বিস্ফোরণ ও সংঘাতজনিত কারণে বিপুলসংখ্যক মানুষের মৃতু্য হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে অ্যাকশন অন আর্মড ভায়োলেন্স।
২০২৩ সালে ব্যাপকভাবে উলস্নম্ফন ঘটেছে বিমান-ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হারও। আওয়াভের তথ্য অনুযায়ী, শতকরা হিসাবে আগের বছর ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে এসব হামলার হার বেড়েছে ২২৬ শতাংশ।
অ্যাকশন অন আর্মড ভায়োলেন্সের গবেষণা ও জরিপের তথ্য জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন তাদের প্রতিবেদন প্রস্তুতের সময় ব্যবহার করে। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টেও সংস্থাটির তথ্য নির্ভরযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।
অ্যাকশন অন আর্মড ভায়োলেন্সের পরিচালক ইয়ান ওভেরটন বলেন, '২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে যত বেসামরিক প্রাণহানি ঘটেছে, তার ৭৭ শতাংশের জন্য দায়ী বিস্ফোরণ। এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমরা আসলে বিভিন্ন রাষ্ট্রকে কড়া সতর্কবার্তা দিতে চেয়েছি। আমরা বলতে চেয়েছি, বিচার-বিবেচনাহীন বিস্ফোরকের ব্যবহারের কারণে বেসামরিক লোকজনকে কী পরিমাণ মূল্য দিতে হচ্ছে।'