ভারতের পর এবার আরব সাগরে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে পাকিস্তান। রোববার দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর এই দেশটির নৌবাহিনীর মুখপাত্র এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছেন। সম্প্রতি আরব সাগরে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা বৃদ্ধির পর ওই অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করল পাকিস্তান। তথ্যসূত্র : এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, ডন, আল-জাজিরা
পাকিস্তানি নৌবাহিনীর জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, দুই থেকে তিনটি যুদ্ধজাহাজ পাকিস্তান অভিমুখে চলাচলকারীসহ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক জাহাজের রুট ও সংলগ্ন এলাকায় নিয়মিত টহল দেবে। এক বিবৃতিতে পাকিস্তান নৌবাহিনী জানিয়েছে, আরব সাগরে চলাচলকারী পাকিস্তানি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক জাহাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এসব যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। তাছাড়া পাকিস্তানের আওতাধীন স্থানগুলোতে আকাশ থেকেও লাগাতার নজরদারি চালানো হচ্ছে।
দেশটির নৌবাহিনীর মুখপাত্র বলেন, 'আমাদের ও আন্তর্জাতিক সমুদ্র যোগাযোগের লাইনে (সি লাইনস অব কমিউনিকেশনস) নিবিড় নজরদারি চালাতে পাকিস্তানের নৌবাহিনী আরব সাগরে নিজেদের স্থায়ী উপস্থিতি নিশ্চিত করছে।' উলেস্নখ্য, 'সি লাইনস অব কমিউনিকেশন' বলতে বন্দর ও উন্মুক্ত পানিপথের মধ্য দিয়ে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল, নৌ-চলাচল এবং অন্যান্য সামুদ্রিক কার্যকলাপের জন্য প্রতিষ্ঠিত সামুদ্রিক রুট কিংবা পথগুলোকে বোঝায়। এই রুটগুলো আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, পণ্য পরিবহণ ও নৌযান চলাচলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গত মাসে ভারতীয় উপকূলের কাছে একটি ড্রোন হামলাসহ সম্প্রতি বেশ কয়েকটি জাহাজে হামলার পর ভারতের নৌবাহিনী আরব সাগরে প্রতিরোধমূলক উপস্থিতি বজায় রাখতে তিনটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। এসব হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করছে আমেরিকা ও ইসরাইল। লোহিত সাগরে পাকিস্তানগামী পণ্যবাহী জাহাজেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দায় স্বীকার করেছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। ড্রোন দিয়ে ইসরাইলের হামলা চালানোর সময় ওই জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইল-হামাস সংঘাত শুরুর পর গাজার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে হুতি বিদ্রোহীরা। তারপর থেকেই লোহিত সাগর দিয়ে চলাচলকারী ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত জাহাজগুলোতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে তারা। এদিকে, হুতিদের ভয়ে পণ্যবাহী কোনো জাহাজ সুয়েজ খাল দিয়ে চলাচল করতে চাইছে না। আফ্রিকা ঘুরে 'কেপ অব গুড হোপ' দিয়ে চলাচল করছে জাহাজগুলো। এর ফলে খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ। আবার পণ্য পরিবহণেও সময় লাগছে অনেক বেশি। গাজায় ইসরাইলি অভিযান বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত হামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হুতি।