বললেন বিস্নংকেন
ফিলিস্তিনিদের গাজা ছাড়তে চাপ নয়
পশ্চিম তীরে সহিংসতা : নিহত ১১ ফিলিস্তিনি-ইসরাইলি, ইসরাইলের হামলায় আরেক হিজবুলস্নাহ কমান্ডার নিহত
প্রকাশ | ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
অনলাইন ডেস্ক
ম যাযাদি ডেস্ক
ফিলিস্তিনিদের গাজা ছেড়ে যেতে চাপ দেওয়া যাবে না এবং শর্তসাপেক্ষে তাদের বাড়ি ফিরতে দিতে হবে। ফিলিস্তিনিদের অন্য কোথাও পুনর্বাসনের আহ্বান জানিয়ে কিছু ইসরাইলি মন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার নিন্দা জানিয়ে আমেরিকার পরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বিস্নংকেন এমন কথা জানিয়েছেন। বিস্নংকেন তার মধ্যপ্রাচ্য সফরে সর্বশেষ কাতারে ছিলেন। রোববার উত্তর গাজায় এক শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি হামলায় বেশ কিছু ফিলিস্তিনি নিহতের পর তার এই মন্তব্য আসে। এদিকে, বিস্নংকেন সতর্ক করে বলেছেন, সমবেত শান্তি প্রচেষ্টা ছাড়া গাজা যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ওই অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত একটি যুদ্ধের সম্ভাবনা এড়াতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বিস্নংকেন। এ উদ্দেশ্যে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে পাঁচ দিনের এক সফর শুরু করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তথ্যসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, আল-জাজিরা
হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ২২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বোমা বর্ষণে গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১১৩ জন নিহত হয়েছেন।
রোববার বিস্নংকেন বলেন, 'ফিলিস্তিনি বেসামরিক জনগণকে শর্তসাপেক্ষে দ্রম্নত বাড়ি ফিরে যেতে দিতে হবে এবং তাদের গাজা ছাড়তে কোনো চাপ দেয়া যাবে না।' কিন্তু এর আগে ইসরাইলের ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী ব্যাজেলেল স্মটরিচ ফিলিস্তিনিদের গাজা ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। যাতে ইসরাইলিরা 'মরুভূমিকে সাজিয়ে তুলতে পারে'। জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন ভির সমস্যার 'সমাধান' হিসেবে চলতি সপ্তাহে 'গাজার অধিবাসীদের অভিবাসনে উৎসাহিত' করার আহ্বান জানিয়েছেন। ইসরাইল সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, গাজার অধিবাসীরা ধীরে ধীরে তাদের বাড়ি ফিরে যেতে পারবে। যদিও কীভাবে বা কখন সম্ভব হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো পরিকল্পনা হয়নি।
পশ্চিম তীরে সহিংসতা : নিহত
১১ ফিলিস্তিনি-ইসরাইলি
এদিকে, অধিকৃত ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে সহিংসতায় কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৯ জন ফিলিস্তিনি ও দুইজন ইসরাইলি নাগরিক। এর মধ্যে অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত সাত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি নাগরিকদের একটি সমাবেশকে লক্ষ্য করে জেনিনে ওই বিমান হামলা চালানো হয়। ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা 'ওয়াফা' জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে চার ভাইও রয়েছেন।
ইসরাইলি পুলিশ বলেছে, জেনিনে অভিযানের সময় তাদের 'যানবাহনে... বিস্ফোরক ডিভাইস দিয়ে আঘাত করা' হলে একজন কর্মকর্তা নিহত হন। এতে আরও তিনজন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।
পৃথক ঘটনায় ইসরাইলি বাহিনী অধিকৃত পশ্চিম তীরে একটি চেকপয়েন্টে গাড়িতে থাকা একটি ফিলিস্তিনি মেয়েকে হত্যা করেছে বলে ইসরাইলি জরুরি পরিষেবাগুলো জানিয়েছে। ওয়াফা জানিয়েছে, জেরুজালেমের উত্তর-পশ্চিমে বেইট ইকসা চেকপয়েন্টে ইসরাইলি বাহিনী গুলি চালালে রুকায়া আহমেদ ওদেহ জাহালিন নামের চার বছর বয়সী ওই মেয়ে শিশু নিহত হয়।
ইসরাইলি বাহিনী বলেছে, জেরুজালেম ও রামালস্নার মধ্যে অবস্থিত চেকপয়েন্টে একজন ভ্যানচালক অফিসারদের ধাক্কা দিলে তারা গুলি চালায়। ইসরাইলি বাহিনীর দাবি, 'সন্ত্রাসীদের গুলি করার ফলে চেকপয়েন্টে অন্য গাড়িতে থাকা একটি মেয়ে আহত হয়েছে।' এ ঘটনায় অন্য কোনো হতাহতের ঘটনা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
এর আগে, রামালস্নার উত্তরে আবওয়েইন গ্রামে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে একজন ফিলিস্তিনি নিহত হন বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। রামালস্নার অন্যত্র একজন ইসরাইলি বেসামরিক নাগরিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে সেনাবাহিনীর দাবি করেছে। হামলাকারীর খোঁজ করার কথাও জানিয়েছে তারা। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রামালস্নার উত্তরে ইসরাইলের ওই ব্যক্তিকে 'ব্রিটিশ পুলিশ মোড় সংলগ্ন' এলাকায় হত্যা করা হয়।
গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় উপত্যকায় ব্যাপক আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। আর সে সময় থেকেই পশ্চিম তীরে সহিংসতা ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে। জেনিন ও এই শহর সংলগ্ন শরণার্থী শিবিরসহ পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনী নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে, এতে করে প্রায়ই ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং ইসরাইলি বাহিনীর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে থাকে।
ইসরাইলের হামলায় আরেক
হিজবুলস্নাহ কমান্ডার নিহত
এবার ইসরায়েলের হামলায় আরেক হিজবুলস্নাহ কমান্ডার নিহত হয়েছেন। বলা হয়েছে, দক্ষিণ লেবাননে ইসরাইলের ড্রোন হামলায় হিজবুলস্নাহর এলিট রাদওয়ান বাহিনীর একজন সিনিয়র কমান্ডার নিহত হয়েছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়া রোধে যখন মধ্যপ্রাচ্য সফরে রয়েছেন, তখনই এই হামলা ও নিহতের খবরও এলো। কয়েকদিন আগে লেবাননের রাজধানীতে হামলা চালিয়ে এক হামাস নেতাকে হত্যা করে ইসরাইল।