জাপানে নতুন বছরের প্রথম দিনে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন ভবন ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি সড়ক ফেটে বা ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার কাজ। ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ৪৮ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। তথ্যসূত্র : রয়টার্স, বিবিসি
দেশটির উপকূলবর্তী অঞ্চল ইশিকাওয়ায় স্থানীয় সময় সোমবার বিকালে সাত দশমিক ছয় মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এরপর আরও ১৫৪ বার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের পর পশ্চিম উপকূলে সুনামি আঘাত হানে। এ সময় এক মিটার বা তিন দশমিক তিন ফুটের বেশি উচ্চতার ঢেউ উপকূলে আছড়ে পড়ে। অসংখ্য গাড়ি ও বাড়ি সমুদ্রে ভেসে গেছে। ভূমিকম্পে ভেঙে পড়েছে বহু ভবন। ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে আটকে পড়েছেন। ফাটল ধরেছে অনেক সড়কে। এ জন্য অনেক জায়গায় পৌঁছাতে পারছেন না উদ্ধারকর্মীরা।
ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের নোটো উপদ্বীপে উদ্ধার অভিযানের জন্য কয়েক হাজার সেনা সদস্য, দমকল কর্মী ও পুলিশ কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে। তবে সড়ক ভেঙে পড়ায় উদ্ধার প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্ষতির সম্পূর্ণ পরিমাণ নির্ণয় করা তাদের পক্ষে কঠিন হচ্ছে। ইশিকাওয়ায় অনেক রেল পরিষেবা, ফেরি ও ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে। রানওয়েতে ফাটলের কারণে একটি বিমানবন্দর বন্ধও ঘোষণা করা হয়েছে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা মঙ্গলবার দুর্যোগ নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন। তিনি বলেন, 'তলস্নাশি আর উদ্ধার তৎপরতা নিয়ে আমাদের সময়ের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হচ্ছে।' জাপানের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে উদ্ধারকারীরা নোটো উপদ্বীপের উত্তর প্রান্তে পৌঁছানো খুব কঠিন মনে করছেন। হেলিকপ্টার জরিপে অনেক অগ্নিকান্ড এবং ভবন ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। 'কিয়োডো' বার্তা সংস্থা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে ভূমিকম্পে ৪৮ জনের বেশি মানুষের মৃতু্যর খবর জানিয়েছে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার মতে, সোমবার প্রথম আঘাত হানার পর থেকে ১৪০টির বেশি কম্পন শনাক্ত করা হয়েছে। আগামী দিনে আরও শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত জাপানকে যে কোনো প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত আমেরিকা। এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, 'ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে, আমেরিকা ও জাপান একটি গভীর বন্ধুত্বের বন্ধন ভাগ করে, যা আমাদের জনগণকে একত্রিত করে। আমাদের চিন্তাভাবনা এই কঠিন সময়ে জাপানি জনগণের সঙ্গে রয়েছে।'