নতুন বছরের প্রথম দিন তীব্র ভূমিকম্প ও সুনামির পর ফের বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে জাপান। দেশটির রাজধানী টোকিওর হানেদা বিমানবন্দরের রানওয়েতে যাত্রীবাহী বিমানের সঙ্গে সংঘর্ষে দেশটির উপকূল রক্ষীবাহিনীর একটি বিমানের সংঘর্ষে অন্তত পাঁচ আরোহী নিহত হয়েছেন। পাঁচজন নিহত হলেও এর পাইলটকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে জাপান এয়ারলাইন্সের বিমানের সঙ্গে উপকূল রক্ষীবাহিনীর বিমানের সংঘর্ষে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। তবে জাপান এয়ারলাইন্সের বিমানটি আগুনে ভস্মীভূত হলেও ওই বিমান থেকে ৩৭৯ যাত্রী ও ক্রুর সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তথ্যসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স
টোকিও পুলিশের বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচার মাধ্যম 'এনএইচকে' দুই বিমানের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রাণহানির এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। এর আগে, সন্ধ্যার দিকে হানেদা বিমানবন্দরের রানওয়েতে অবতরণ করার সময় ৩৭৯ যাত্রী-ক্রু বহনকারী জাপান এয়ারলাইন্সের বিমানে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। জাপান এয়ারলাইন্সের বিমানটি অবতরণের সময় রানওয়েতে থাকা উপকূল রক্ষীবাহিনীর বিমানের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে জাপান এয়ারলাইন্সের যাত্রীবাহী বিমানে আগুন ধরে যায়।
দেশটির উপকূল রক্ষীবাহিনী বলেছে, তাদের বোম্বার্ডিয়ার ড্যাশ-৮ বিমানে মোট ছয় কর্মকর্তা ছিলেন। তারা ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত নোটো উপদ্বীপে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিগাতা বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিলেন। তাদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া অপরজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
এনএইচকে'র প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, রানওয়েতে দাঁড়িয়ে থাকা বিমানের সঙ্গে সংঘর্ষের পরপরই জাপান এয়ারলাইন্সের বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। এ সময় বিমানের জানালা দিয়ে আগুনের লেলিহান শিখা ও ধোঁয়ার কুন্ডলী বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। এই ঘটনায় বিমানের পাশাপাশি হানেদা বিমানবন্দরের রানওয়েতেও আগুন ধরে যায়।
আগুন ধরে যাওয়া জাপান এয়ারলাইন্সের জেএএল-৫১৬ ফ্লাইটটি হোক্কাইডো বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করেছিল। পরে সেটি হানেদা বিমানবন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। হানেদা বিমানবন্দরের রানওয়েতে অবতরণ করা জাপান এয়ারলাইন্সের ওই বিমানে আগুন ছড়িয়ে পড়ার পর দীর্ঘ সময় ধরে আগুন জ্বলছিল। বিমানবন্দরের অগ্নিনিরাপত্তা কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক তৎপরতা চালান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া দুর্ঘটনার ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, যাত্রীবাহী বিমানের কেবিনের ভেতর যাত্রীরা চিৎকার করছেন। কালো ধোঁয়া কুন্ডলী পাকিয়ে উড়ছে। অনেকে বিমান থেকে বের হয়ে টার্মাক দিয়ে দৌড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা উদ্ধারকাজের দায়িত্বে থাকা সব সংস্থাকে দুর্ঘটনার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সহায়তা করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং জনগণকে এ বিষয়ে সব ধরনের তথ্য জানাতে বলেছেন। এই দুর্ঘটনার পর হানেদা বিমানবন্দরের সব রানওয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দরের একজন মুখপাত্র।