মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য ভঙ্গ

এবার ইসরাইলকে আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি সৌদির

আমিরাতগামী ফ্লাইটগুলোকে এ অনুমতি দেওয়া হয়েছে
যাযাদি ডেস্ক
  ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০
ইসরাইলি যাত্রীবাহী বিমান

এবার ইসরাইলকে নিজ দেশের আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে সৌদি আরব। সংযুক্ত আরব আমিরাতগামী ইসরাইলের বাণিজ্যিক ফ্লাইটগুলোকে এ অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইহুদি জামাতা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে সোমবার সৌদি কর্মকর্তাদের বৈঠকের পর এ অনুমোদন দেয় রিয়াদ। সংবাদসূত্র : রয়টার্স

এই অনুমতির ফলে এখন থেকে ইসরাইল-আমিরাত রুটে নিয়মিতভাবে সৌদি আকাশসীমা ব্যবহারের সুযোগ পাবে তেল আবিব। সোমবার ট্রাম্প প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, 'এ ইসু্যতে আমরা তাদের সমর্থন আদায়ে সমর্থ হয়েছি।'

মঙ্গলবার সকালে আমিরাতের উদ্দেশে ইসরাইলের প্রথম বাণিজ্যিক ফ্লাইট ছেড়ে যায়। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই সৌদি আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি পায় দেশটি। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।

হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা বলেন, 'ইসরাইলি বিমান সংস্থাগুলো যেন সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনে যাত্রী পরিবহন করতে পারে, সেটির ব্যবস্থা করা উচিত।' সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন ইসরাইলের সঙ্গে স্বাভাবিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করার পর থেকেই গুঞ্জন চলছে, সৌদি আরবও একই ধারবাহিকতা রক্ষা করতে যাচ্ছে কিনা।

সম্প্রতি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) সঙ্গে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর গোপন বৈঠকের খবর সামনে আসার পর সেই গুঞ্জন আরও জোরালো হয়েছে। তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম 'ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল'র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের আগে ইসরাইল-সৌদি সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের পর ইসরাইলের সঙ্গে চুক্তি করে নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করতে পারে রিয়াদ। বার্তা সংস্থা 'রয়টার্স'র এক প্রতিবেদনেও একই ধরনের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এক সময় মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে দখলদার শক্তি হিসেবে বিবেচিত হওয়া ইসরাইলের সঙ্গে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে আনুষ্ঠানিক চুক্তিতে উপনীত হয় আমিরাত ও বাহরাইন। ইসরাইলের জন্মলগ্ন থেকেই বেশিরভাগ আরব রাষ্ট্র এটিকে একটি দখলদার শক্তি হিসেবে বিবেচনা করে আসছে। ফলে স্বভাবতই এতদিন ইসরাইলকে বয়কট করে আসছিল তারা।

তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৌদিসহ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্কের নাটকীয় উন্নতি হয়েছে। ২০১৮ সালের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী 'দি আটলান্টিক'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, বহু বিষয়ে ইসরাইলের সঙ্গে সৌদি আরবের অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। একইসঙ্গে তিনি মার্কিন নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ফিলিস্তিনের ভূখন্ড দখল করে জন্ম নেওয়া ইসরাইল রাষ্ট্রের অস্তিত্বের অধিকারের পক্ষে নিজের অবস্থানের কথা জানান। এর দুই বছরের মাথায় রিয়াদের দুই মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে।

দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য অনুযায়ী, ইসরাইলগামী বা ইসরাইল থেকে ছেড়ে যাওয়া বিমানগুলোকে সৌদির আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেওয়া হতো না। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রিয়াদের এ নীতির পরিবর্তন হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে