বড় ধরনের ধাক্কা

চ্যালেঞ্জের মুখে সৌদি রাজতন্ত্র আত্মপ্রকাশ বিরোধী দলের

এর আগে ২০০৭ ও ২০১১ সালেও বিরোধী দল গঠনের প্রচেষ্টা করা হয়েছিল

প্রকাশ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মানবাধিকার কর্মী ইয়াহা আসিরি
রাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বড় ধরনের ধাক্কা খেল মধ্যপ্রাচ্য তথা মুসলমান বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ সৌদি আরব। কারণ রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিরোধীদল গঠন করেছেন সৌদি ভিন্নমতাবলম্বীরা। বুধবার যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত সৌদি নাগরিকরা 'ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি পার্টি' নামে ওই দল গঠনের ঘোষণা দেন। বাদশাহ সালমানের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এটাই সে দেশে প্রথম কোনো সংগঠিত রাজনৈতিক প্রতিরোধ। সংবাদসূত্র : আল-জাজিরা, এএফপি রাষ্ট্র হিসেবে সৌদি আরব একটা নিখুঁত রাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা। কোনো ধরনের রাজনৈতিক বিরোধিতার সুযোগ নেই সেখানে। সম্প্রতি ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর দমনপীড়ন আরও বেড়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে বুধবার রাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিরোধীদল গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে ২০০৭ ও ২০১১ সালেও বিরোধীদল গঠনের প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছিল। তবে গ্রেপ্তারসহ বিভিন্ন ধরনের বলপ্রয়োগের মধ্য দিয়ে তা দমন করা হয়। এবার যারা দল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন, বুধবার তাদের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে- 'আমরা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি পার্টি নামের একটি রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য সৌদি আরবে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করা।' ঘোষিত রাজনৈতিক দলের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, দলের নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে রয়েছেন লন্ডনভিত্তিক বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী ইয়াহা আসিরি। সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষাবিদ মাদায়ি আল-রশিদ, গবেষক সাইদ বিন নাসের আল-গামদি, যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত আবদুলস্নাহ আলাউদ এবং কানাডায় থাকা ওমর আবদুল আজিজ। নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা মানেই প্রবল ক্ষমতাধর সৌদি রাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার পতন নয়। তবে তেলের দাম হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি জি-২০ বৈঠক নিয়ে ব্যস্ত সৌদি শাসকের জন্য এটি স্পষ্টত একটি চ্যালেঞ্জ আকারে হাজির হয়েছে। সৌদি আরবের সাবেক বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা ও নতুন দলের সাধারণ সম্পাদক আসিরি বলেন, 'এক চরম সংকটময় মুহূর্তে দেশকে রক্ষা করার তাগিদ থেকে আমরা এই দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া এবং শাসনকাজে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানো।' এছাড়া দলের মুখপাত্র ও যুক্তরাজ্যের শিক্ষাকর্মী এম আল-রশিদ বলেন, 'বর্তমানে ক্ষমতাসীন রাজপরিবারের বিরুদ্ধে তাদের কোনো শত্রম্নতার সম্পর্ক নেই। কিন্তু সরকারি দমন সমানে বাড়ছে। তাই এটাই দল গঠনের পক্ষে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়।' বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নতুন রাজনৈতিক দল সৌদির শাসকদের সমস্যায় ফেলে দিতে পারে। কারণ, এখন অশোধিত তেল বিক্রি করে আয় অনেকটাই কমেছে। করোনার কারণে আগের চাহিদা নেই বলে এই অবস্থা। এছাড়া আগামী বাদশাহ ও বর্তমান যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমনকে নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি তার বিরোধীদের নানা কারণ দেখিয়ে গ্রেপ্তার করেছেন। ২০১৮ সালে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যায় তার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সৌদি কর্মকর্তারা অবশ্য যুবরাজের ভূমিকার কথা অস্বীকার করেছেন।