বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা শেষ হয়ে গেছে, এটা কেউ বলতে পারে না

যাযাদি ডেস্ক
  ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০
টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসাস

করোনার সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধগুলো জারি রাখার আহ্বান জানিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিস্নউএইচও) মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসাস সোমবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, মহামারি এই ভাইরাসটির প্রকোপ শেষ হয়েছে কোনো দেশই এমনটা বলতে পারে না। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, সিএনএন ভাইরাসটির সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না এনেই পুনরায় সব সচল করা হলে তা বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করে তিনি বলেন, 'ভাইরাসটির প্রকোপ শুরুর পর আট মাস ধরে বিধিনিষেধ মেনে চলতে চলতে অনেকে ক্লান্ত এবং তারা যে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে চাইছে, এটা আমরাও বুঝতে পারছি।' টেড্রোস মানুষের অনীহার কথা স্বীকার করে বলেন, 'আমরাও তো চাই শিশুরা ক্লাসে ফিরে যাক। মানুষ আবার ফিরে যাক তার কর্মস্থলে। কিন্তু আমরা দেখতে চাই, এই ফিরে যাওয়াটা যেন হয় নিরাপদ ও সুরক্ষিত।' ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'মহামারি এই ভাইরাসের প্রকোপ শেষ হয়ে গেছে কোনো দেশই আগাম এমনটা বলতে পারে না। বাস্তবতা হলো, ভাইরাসটি সহজেই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ফলে এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে না এনেই যদি সবকিছু সচল করে স্বাভাবিক করা হয়, তাহলে তা হবে ভয়াবহ একটি বিপর্যয়।' অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু এদিকে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ উদোগে তৈরি নভেল করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের শেষ ধাপের পরীক্ষা শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি 'অ্যাস্ট্রাজেনেকা'। মহামারি কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বিশ্বে তৃতীয় ভ্যাকসিন হিসেবে অক্সফোর্ডের এই ভ্যাকসিন শেষ ধাপের পরীক্ষায় পৌঁছাল। সোমবার অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছে, তারা করোনাভাইরাসের পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা যুক্তরাষ্ট্রে শুরু করেছে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের তহবিলের জোগান দিয়েছে। এরই মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী অপর দুই কোম্পানি 'মডার্না' এবং 'ফাইজার/বায়োএনটেক'র দুটি ভ্যাকসিন তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় রয়েছে। এই দুই ভ্যাকসিনে মার্কিন সরকার অর্থায়ন করেছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রে ভ্যাকসিনটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য তারা এরই মধ্যে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বের ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ করেছেন। যারা দেশটিতে বসবাসরত বিভিন্ন জাতি, বর্ণ ও ভৌগলিক গোষ্ঠীর সদস্য। এই স্বেচ্ছাসেবীদের মধ্যে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তি, এমনকি এইচআইভিতে আক্রান্তরাও রয়েছেন। এছাড়া কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে যারা রয়েছেন, সেই জনগোষ্ঠীর সদস্যদের ওপরও ভ্যাকসিনটির পরীক্ষা চালানো হবে। ব্রিটিশ এই কোম্পানি বলেছে, ভ্যাকসিনের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবীদের দুটি গ্রম্নপে বিভক্ত করে ভ্যাকসিন এবং পস্ন্যাসেবো ডোজ প্রয়োগ করা হবে। চার সপ্তাহের ব্যবধানে স্বেচ্ছাসেবীদের দেহে দুটি ডোজ দেয়া হবে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকাতেও শুরু হয়েছে। জাপান এবং রাশিয়াতেও ভ্যাকসিনটি পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে কোম্পানিটি। অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলছে, তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় বিশ্বজুড়ে ৫০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবীর দেহে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ হাজার এবং লাতিন আমেরিকা, এশিয়া, ইউরোপ এবং আফ্রিকায় বাকি স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ দেয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে