পিপিই নিয়ে মন্তব্যের জের

ভারতে চিকিৎসককে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি

প্রকাশ | ২৩ মে ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
খালি গায়ে ডা. সুধাকর রাও
২০ বছরের অভিজ্ঞ অ্যানেস্থেটিস্ট (যিনি সার্জারির আগে রোগীকে অচেতন করেন) সুধাকর রাও দুই মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় শিরোনাম হয়েছেন। 'চিকিৎসকরা হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রী পাচ্ছেন না' এমন মন্তব্যের জেরেই তোপের মুখে পড়েছেন তিনি। সংবাদসূত্র : বিবিসি তার ভাইরাল হওয়া বেশ কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম শহরের একটি মহাসড়কে রাও-এর সঙ্গে পুলিশের এক ধরনের রেষারেষির ঘটনা ঘটেছে। রাও এই শহরের বাসিন্দা এবং তিনি সেখানেই কাজ করেন। কর্তৃপক্ষ বলছে, তাকে পরে মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়। শনিবারের পর ঘটা ঘটনগুলোর যে সব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়েছে, তাতে একটি যোগসূত্র দেখতে পাওয়া যায়। ডা. রাওকে প্রথমে রাস্তার পাশে তার গাড়ির ভেতরে শার্ট ছাড়া অবস্থায় বসে বসে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে চিৎকার করতে দেখা যায়। অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন কনস্টেবল তাকে লাঠিপেটা করছে। এ সময় সঙ্গে সঙ্গে তিনি হাত পেছনে বাঁধা অবস্থায় রাস্তায় শুয়ে পড়েন। ওই কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আরেকটি ভিডিওতে পুলিশ কর্মকর্তারা উৎসুক জনতার সামনে ওই ডাক্তারকে একটি অটোরিকশায় তুলে নেয়। অটোরিকশায় ওঠার আগে ডা. রাও স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, 'পুলিশ সদস্যরা আমার গাড়ি থামিয়ে জোর করে নামিয়ে আনে। তারা আমার ফোন এবং মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়, আর আমাকে পেটায়।' এদিকে, ডাক্তারকে আটকে রাখা নিয়ে বড় ধরনের বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী এবং অন্যরা রাজ্য সরকারের ব্যাপক সমালোচনা করেছেন। বিরোধীদলগুলো পুলিশের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি রকমের ক্ষমতা প্রয়োগের অভিযোগ আনে। গত ৩ এপ্রিল একটি সরকারি হাসপাতালে কর্মরত ডা. রাও গণমাধ্যমের সামনে বলেছিলেন, ডাক্তারদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা গাউন এবং মাস্ক দেয়া হচ্ছে না। তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই বিষয়গুলো উত্থাপন করলে তাকে বৈঠক থেকে চলে যেতে বলা হয়। তিনি বলেন, 'নতুন মাস্ক চাওয়ার আগে তারা আমাদের বলেছে, একটি মাস্ক ১৫ দিন ব্যবহার করতে। আমরা কীভাবে আমাদের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলে রোগীদের চিকিৎসা দেব?' তিনি স্থানীয় টেলিভিশন সাংবাদিকদের সামনে এমন একটি বক্তব্য দিলে সেটি রাতারাতি ভাইরাল হয়। সরকার এ ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিলেও এর আগেই রাওকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের না করে তিনি জনসমক্ষে কেন বক্তব্য দিয়েছেন? তাদের দাবি, এ ধরনের বক্তব্যের কারণে অন্য স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের মনোবল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েকদিন পর, রাও একটি ভিডিও প্রকাশ করেন, যাতে দেখা যায় তিনি ক্ষমা চেয়েছেন এবং তার অব্যাহতি আদেশ বাতিল করার জন্য বলেছেন। কিন্তু সরকার তাতে সাড়া দেয়নি। তার মা কাবেরি রাও বলেন, তার ছেলের কোনও মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা নেই। সে একজন নামি ডাক্তার।