শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
কনোড়ের চায়ের নিলাম

বছর ব্যবধানে গড় দামে রেকর্ড কেজিতে ১৩০ শতাংশ বৃদ্ধি

যাযাদি ডেস্ক
  ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের পাহাড়ি জেলা কনোড় চা উৎপাদন ও বিপণনের জন্য সুপরিচিত। এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় চা নিলাম কেন্দ্র কনোড়ে অবস্থিত। করোনা মহামারি ও লকডাউনের মধ্যে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় কনোড়ের নিলামে পানীয় পণ্যটির দাম চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। এ ধারাবাহিকতায় এক বছরের ব্যবধানে কনোড়ে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ নিলামে চায়ের গড় দাম রেকর্ড ১৩০ শতাংশ বেড়েছে। কনোড় টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (সিটিটিএ) সাম্প্রতিক নিলাম প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা গেছে। খবর :বিজনেস লাইন ও ইকোনমিক টাইমস

কনোড়ে সম্প্রতি চায়ের চলতি বিপণন মৌসুমের ৩৬ নম্বর নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নিলামে প্রতি কেজি চায়ের গড় দাম দাঁড়িয়েছে ১৯৩ দশমিক ২১ রুপিতে (ভারতীয় মুদ্রা)। আগের মৌসুমের একই নিলামে কনোড়ে প্রতি কেজি চায়ের গড় দাম ছিল ৮৩ দশমিক ৮১ রুপি। সেই হিসাবে, কনোড়ের নিলামে এক বছরের ব্যবধানে চায়ের গড় দাম কেজিপ্রতি ১০৯ দশমিক ৪০ রুপি বা রেকর্ড ১৩০ শতাংশ বেড়েছে। পানীয় পণ্যটির রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে সিটিটিএর ভাইস চেয়ারম্যান এল ভিরাভন বলেন, করোনা মহামারির কারণে লকডাউনে চায়ের উৎপাদন ও সরবরাহে যে বিঘ্ন ঘটেছিল, সেটা থেকে এখনো বের হয়ে আসা সম্ভব হয়নি। একই সঙ্গে সাম্ম্প্রতিক সময়ে আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, কেরালাসহ কয়েকটি রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় চায়ের বাজারে সংকট আরও বেড়েছে। এসবের জের ধরে কনোড়ের নিলামে চায়ের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, দাম বেশি থাকলেও নিলামে চায়ের বেচাকেনা খুব একটা কমেনি। কনোড়ের সর্বশেষ নিলামে সরবরাহ করা ৯৪ শতাংশ চা বিক্রি হয়ে গেছে। মূলত উত্তরের ক্রেতারাও এখন ভালো মানের চায়ের জন্য কনোড় কিংবা নীলগিরিতে আসছেন। এ কারণে দাম বেশি হলেও কনোড়ের নিলামে চায়ের বেচাকেনা তুলনামূলক বাড়তির দিকে রয়েছে।

তবে ভারতীয় চা শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বাড়তি দামের অজুহাতে পানীয় পণ্যটি আমদানির তোড়জোড় শুরু করেছে। ফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন (এফএআইটিটিএ) জানিয়েছে, লকডাউনের শুরুর দিকে শ্রমিক সংকটে ব্যাহত হয়েছিল উৎপাদন ও পাতা সংগ্রহের কার্যক্রম। ওই সময় পরিবহণ সংকটে উৎপাদিত চা বাজারে সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। এমনকি ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কলকাতার চায়ের নিলামে চা সরবরাহ না থাকায় কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখতে হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি আগের তুলনায় কিছুটা স্বাভাবিক হলেও ওই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। কলকাতা, কনোড়, নীলগিরি- সবখানেই চায়ের দাম বাড়তির দিকে রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির মতে, একদিকে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় চা শিল্পের প্রতিষ্ঠানগুলো আগে থেকেই আর্থিক সংকটে রয়েছে। তার ওপর বাড়তি দাম থাকায় পানীয় পণ্যটির বেচাকেনা একেবারে কমে যাওয়ায় বিদ্যমান সংকট আরও জোরালো হতে শুরু করেছে। এ পরিস্থিতিতে ভারতীয় চা শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো কেনিয়া কিংবা ভিয়েতনাম থেকে চা আমদানির চিন্তাভাবনা করছে। কেননা এ দুটি দেশে পানীয় পণ্যটির সরবরাহ রয়েছে পর্যাপ্ত। দামও রয়েছে তুলনামূলক কম।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে