এশিয়া কাপ বাংলাদেশের জন্য অন্যরকম আবেগের জায়গা : জ্যোতি

প্রকাশ | ১৬ জুলাই ২০২৪, ১০:০৬

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ছবি-যায়যায়দিন

নারী এশিয়া কাপের আগে নিজেদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি সেরেছে বাংলাদেশ দল। প্রথমে বিকেএসপিতে, এরপর মিরপুর শেরেবাংলায়। আজ মঙ্গলবার এশিয়া কাপ খেলতে শ্রীলংকার উদ্দেশে দেশ ছাড়বে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। তার আগে নিজেদের প্রস্তুতি নিয়ে সোমবার মিরপুরে কথা বলেছেন বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি, প্রধান কোচ হাসান তিলেকারত্নে ও নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন। 

অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি নিজ দলের ক্রিকেটারদের কাছে এশিয়া কাপ নিয়ে আবেগ ও টুর্নামেন্টটি দিয়ে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সারার কথা জানিয়েছেন। 

জ্যোতি বলেন, ‘এশিয়া কাপ আমাদের মেয়েদের ক্রিকেটের জন্য অন্যরকম একটা আবেগের জায়গা। ২০১৮ সালের এশিয়া কাপ জয়ের পর বাংলাদেশের মেয়েদের ক্রিকেটে কিন্তু বড় রেভ্যুলেশন (বিপ্লব) হয়েছে। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় সুযোগ, বিশ্বকাপের আগে নিজেকে ঝালিয়ে নেওয়া যাবে এশিয়া কাপের মাধ্যমে।’ 

ঘরের মাঠে শেষ দুই সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের বিপক্ষে লড়াইয়ের মানসিকতাও দেখাতে পারেনি জ্যোতির দল। সে অবস্থা কাটিয়ে ওঠার কথাই জানালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘শেষ দুটি সিরিজ খারাপ গেছে, আমরা একটা ম্যাচও জিততে পারিনি। এরপর আমাদের একটা লম্বা বিরতি গেল, আমরা এ সময় ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছি। সেখানে যারা ভালো করেছে, তাদের আমরা দলে এনেছি। সর্বশেষ ক্যাম্পেও দেখলাম সবাই ভালো ছন্দে আছে। আমরা এখন ভালো ক্রিকেট খেলার জন্য মুখিয়ে আছি।’

বাংলাদেশের প্রাথমিক লক্ষ্য সেমিফাইনাল বলে উল্লেখ করেন জ্যোতি, ‘সর্বশেষ এশিয়া কাপে আমরা সেমিফাইনালে যেতে পারিনি। এবার স্বাভাবিকভাবেই প্রথম লক্ষ্য সেমিফাইনাল। এর জন্য আমাদের প্রথম ম্যাচটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ লম্বা সময় ধরে আমরা ভালো করছি না। কিছু ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স দেখেছি, কিন্তু দল হিসেবে ভালো করিনি। আমাদের মোমেন্টামের জন্য শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটা ভালো করে শুরু করতে চাই।’

এদিকে দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে ফিরেছেন দুই সিনিয়র ক্রিকেটার জাহানারা আলম ও রুমানা আহমেদ। তাদের ফেরা নিয়ে জ্যোতি বলেন, ‘অভিজ্ঞতা সবসময় কাজে লাগে। তারা দুজনই সর্বশেষ দুটি এশিয়া কাপে খেলেছেন। রুমানা আপু অনেকদিন পর ফিরলেন। জাহানারা আপুও। দুজনই কিন্তু সর্বশেষ ঘরোয়া টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন। এই দুজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আমার মনে হয় দলে অনেক বড় প্রভাব ফেলবে। আমরা প্রস্তুতি ম্যাচগুলোয় দেখেছি তারা তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাচ্ছে। এটা দলের জন্য সুবিধা হবে।’

গত এশিয়া কাপের আগে বাংলাদেশ নারী জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন হাসান তিলকারাত্নে। এখন আরও একটি এশিয়া কাপ সামনে। এবারের টুর্নামেন্ট হবে হাসানের দেশ শ্রীলংকায়। খেলতে যাওয়ার আগে অবশ্য খুব একটা স্বস্তিতে নেই বাংলাদেশ।  

এশিয়া কাপের আগে সবশেষ দুই সিরিজে ভালো খেলতে না পারা প্রসঙ্গে হাসান বলেন, ‘আমাদের প্রথমে মেনে নিতে হবে, আমরা সম্প্রতি ভালো ক্রিকেট খেলিনি। তবে আমার সে আত্মবিশ্বাস আছে যে তাদের মধ্যে ভালো করার দক্ষতা ও সামর্থ্য আছে।’ 

সাম্প্রতিক সিরিজগুলোয় ভালো খেলতে না পারার কারণও ব্যাখা করেছেন হাসান। জ্যোতিদের এই শ্রীলংকান কোচ জানান, ‘আমি মনে করি এটা ব্যর্থতায় ভয়। আমরা সবাই জানি ওরা প্রত্যেকেই ভিন্ন জায়গা থেকে এসেছে। ওদের আমাদের সাহস দিতে হবে। আমরা সম্প্রতি ভালো খেলছি না ঠিক আছে, তবে দলের সামর্থ্যওে আমার আস্থা আছে।’
এক বছর পর জাতীয় দলে ফিরেছেন জাহানারা আলম-রুমানা আহমেদ। সে প্রসঙ্গে প্রধান কোচ হাসানের ভাষ্য, ‘নির্বাচকরা কিন্তু কারও দরজাই বন্ধ করেননি। ওই দুজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার প্রিমিয়ার লিগে খুব ভালো করেছে। এটা প্রতিযোগিতার বিষয়। ওরা যেহেতু ভালো করেছে, তাই সুযোগ পেয়েছে।’

শ্রীলংকার মাটিতে আগামী ১৯ জুলাই পর্দা উঠছে নারী এশিয়া কাপের এবারের আসরের। নারী ক্রিকেটে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের এই লড়াই শেষ হবে ২৮ জুলাই। এশিয়া কাপের ‘এ’ গ্রুপে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শ্রীলংকা, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড। আসরের দ্বিতীয় দিনেই (২০ জুলাই) জ্যোতির দল নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক লঙ্কানদের মুখোমুখি হবে।

যাযাদি/এস