২১ আগস্ট হামলা ছিল বিদেশি ষড়যন্ত্র, তারেক রহমান নির্দোষ : মির্জা আব্বাস
প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:৩৬
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা একটি বিদেশি শক্তির পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। এই হামলায় বিএনপির কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা ছিল না। বরং দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ফাঁসানোর জন্য এটি করা হয়েছিল।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে “বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার” শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “আজ বিজয়ের প্রথম দিনে একটি সুখবর আছে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সাজানো মামলার রায়ে তিনি খালাস পেয়েছেন। আদালত প্রকাশ করেছেন, তিনি দায়ী ছিলেন না।”
মির্জা আব্বাস বলেন, “গত কয়েক বছরে আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে মিথ্যা মামলা ও অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছে। কিন্তু আল্লাহতায়ালা তাকে রক্ষা করেছেন এবং খালাস দিয়েছেন। আমরা আশা করি, তিনি শীঘ্রই আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।”
তিনি ২০০৭ সালের সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তারেক রহমানের ওপর চালানো নির্যাতনের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “তাকে গ্রেপ্তার করে নির্মম অত্যাচার করা হয়েছিল। চরম অসুস্থ অবস্থায় তাকে কারাগারে ফেরত আনা হয়েছিল। তবে এখন আল্লাহর রহমতে তিনি বিদেশে মোটামুটি সুস্থ আছেন, যদিও পুরোপুরি সুস্থ হননি।”
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃতি ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মির্জা আব্বাস বলেন, “আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, ব্যাংক লুট করেছে, মানুষ গুম-খুন করেছে। আওয়ামী লীগ আর গণতন্ত্র কখনো একসঙ্গে যায় না। তারা ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা করছে।”
তিনি আরও বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। এই সত্য কখনো মুছে ফেলা যাবে না। বিএনপি ১৫ বছর ধরে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছে। আমরা স্বাধীন সংবাদমাধ্যম চাই, কিন্তু অপসাংবাদিকতা চাই না।”
আলোচনা সভায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী এ কে এম রেজাউল করিম বলেন, “বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সঠিক ইতিহাসকে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে। বিএনপি সবসময় গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার পক্ষে ছিল এবং থাকবে। আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চাই, কিন্তু ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তি ছড়ানো মেনে নেব না।”
মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেন, “বিদেশি শক্তি ও সরকারের কিছু অংশ মিলে বিএনপিকে দমন করার ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য বিদেশি শক্তি আমাদের সাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছে। আমরা এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকব।”
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, জাতীয় দলের নেতা সৈয়দ এহসানুল হুদা, এবং ঢাকা মহানগরের আরিফা সুলতানা রুমা।
সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর নেতৃত্বে এই অনুষ্ঠানে নেতৃবৃন্দ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের অধিকার রক্ষার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তারা আশা প্রকাশ করেন, তারেক রহমানের খালাস দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
যাযাদি/ এস