বিগত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে একপ্রকার কোনঠাসা ছিলেন বাংলা গানের যুবরাজ’খ্যাত সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর। গেল জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে স্বৈরাচারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন তিনি। ছেলেকে নিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন রাজপথে।
শেখ হাসিনার পতনের পর দেশবাসীর সঙ্গে উল্লাসে মেতে ওঠেন আসিফ নিজেও। এরপর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠিত হয় অন্তবর্তীকালীন সরকার। এই সরকারকে সাধুবাদ জানিয়ে সবাইকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান এই সংগীতশিল্পী। যার প্রমাণ মেলে তার ফেসবুকে। আর আসিফ আগেই জানিয়েছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ না হলে তাদের নিয়ে কোনো আলোচনা-সমালোচনা করবেন না।
এবার বেঁধে দেওয়া সময়ের পর মুখ খুল আসিফ। আইন ও ক্রীড়া উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মিডিয়ায় বলেছিলাম, অন্তবর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ না হলে আলোচনা-সমালোচনায় যাব না। নতুন সরকারকে ১০০ দিন সময় দেওয়া এক ধরনের সৌজন্যতা। আমার তরফ থেকে সৌজন্যতা শেষ। এখন থেকে ভালো-মন্দ লিখতে হবে, পুরোনো অভ্যাস। শুরু করতে চাই আমার জেলা কুমিল্লা নিয়ে। আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ দুজনই কুমিল্লার সন্তান, দুজনেই সরকারের প্রভাবশালী সভাসদ, আপনাদের অভিনন্দন।’
এরপর উপদেষ্টাদের কাছে ৫টি প্রশ্ন রেখেছেন তিনি। তার প্রশ্নগুলো-
১. এই মৌসুমে বিপিএল ক্রিকেটে কুমিল্লা নেই কেন! এই প্রশ্নের উত্তর তিন নম্বর আসিফ, অর্থাৎ আমার কাছে জানতে চায়, আমি নিজেও জানতে চাই। আসিফ মাহমুদ আপনি এই সহজ ব্যাখ্যাটা দিয়ে দিন প্লিজ।
২. কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি এখনো কেন দেওয়া হয়নি! কেন এখনো অনিশ্চয়তা! মূল কমিটি তাহলে কবে হবে? খেলাধুলার ইয়ার ক্যালেন্ডার কিভাবে হবে? এদিকে লোকাল খেলাধুলা বন্ধ হয়ে আছে!
৩. ঢাকার ফুটবল টিমকে কুমিল্লা স্টেডিয়াম বরাদ্দ দেওয়ার কারন কী! তারা হোম গ্রাউন্ড বানিয়ে খেলবে আর কুমিল্লার খেলোয়াড়রা থাকবে মাঠের বাইরে, এটা কোন ধরনের যুক্তি! ক্রিকেট মৌসুমী শুরু হয়ে গেছে, অথচ মাঠ দখল করেছে ঢাকার ক্লাব ফুটবল দল! কুমিল্লার খেলোয়াড় সৃষ্টিতে মহা প্রতিবন্ধক এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত কেন!
৪. পতিত স্বৈরাচার হাসিনা কুমিল্লা বিভাগ নিয়ে কলোরেক্টাল অ্যালার্জিতে ভুগে শেষমেশ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হলো। আপনারা এবার কাইন্ডলি কুমিল্লাবাসীকে জানান- কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়নে বাঁধা কোথায়! অগ্রগতি কতদূর!’
৫. কুমিল্লা, ফেনী, চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া- এই ছয় জেলায় প্রবাসী আধিক্য বেশি। কুমিল্লা এয়ারপোর্ট পুনরায় চালু করার দাবি বহু আগে থেকেই সরব, আপনাদের পদক্ষেপ কী জানতে চাই।’
সবশেষে আসিফ লিখেছেন, ‘আসলে স্বাধীনতার পরে কুমিল্লা জেলাবাসী বিরাট বিরাট নেতা-মন্ত্রী পেয়ে শুধু তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছে, মেডিকেল কলেজ আর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কুমিল্লাবাসীর পক্ষ থেকে করা এই জরুরি প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন, সুন্দর থাকুন। ভালোবাসা অবিরাম…।’
যাযাদি/ এস