গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দেড় ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে দুপক্ষ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ভাঙচুর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
এ সময় ককটেল বিস্ফোরণে আশপাশের এলাকা কেঁপে ওঠে। ভাঙচুর করা হয়েছে ৮টি মোটরসাইকেলসহ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়ার ঘটনার সময় পথচারী ও ব্যবসায়ীসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) রাত ৭টার দিকে পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদের গেটে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরে উভয় দলের নেতাকর্মীরা জড়ো হলে চৌমাথা মোড়েও সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ সময় দেশীয় অস্ত্রহাতে চৌমাথা মোড়ের রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে মহড়া দেয় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। ঘটনার খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ সময় নেতাকর্মীরা সড়ক থেকে সড়ে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মহদীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জামায়াতপন্থি রাহিদুল ইসলাম বাবুর বিরুদ্ধে পরিষদের সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের দুপক্ষের নেতাকর্মীদের বিরোধ দেখা দেয়।
আজ বুধবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মো. কামরুল হাসানের কার্যালয়ে অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে শুনানি হয়। শুনানিতে পরিষদের (সদস্য) মেম্বারদের মধ্যে কয়েকজন অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে কথা বলেন। এ নিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা জড়িয়ে পড়ে। পরে পরিষদের গেটে এলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা শুরু হয়। এ সময় দোকানসহ বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
এদিকে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় মুহূর্তেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পথচারীসহ অনেকেই ছোটাছুটি করতে থাকেন। এ সময় দ্রুত দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করেন ব্যবসায়ীরা। তবে ঘটনার সময় পুলিশকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা জানিয়ে পলাশবাড়ী থানার ওসি জুলফিকার আলী ভুট্টু জানান, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনায় কেউ আহত হয়েছেন কি না তা জানা যায়নি। তবে আহতদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। মহদীপুর ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে দুই দলের নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদারের পর থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় রাত সোয়া ৯টা পর্যন্ত কোনো দলের পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ করেনি।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পলাশবাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস ছামাদ ও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা মো. নজরুল ইসলাম লেবুকে পাওয়া যায়নি। এমনকি তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে মোবাইল ফোনে জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম লিয়াকত জানান, ঘটনার সময় তাদের পাঁচজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় একটি অফিস ও নেতাকর্মীদের ৮টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। দুটি বাইকে আগুন দেওয়া হয়। জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে অস্ত্র হাতে ধাওয়া ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
যাযাদি/ এস