বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম সহমত পোষণ করেছেন, ‘আনসার লীগের পর অন্তর্বর্তী সরকার এবার আহত লীগের খপ্পরে পড়েছে’।
গতকাল শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাতে নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাইদুর রহমান খান নামে এটি আইডি থেকে করা পোস্ট শেয়ার করেন এই দুই সমন্বয়ক। এর মধ্যে হাসনাত ‘দুঃখজনক বাস্তবতা’ শিরোনাম দেন।
সাইদুর রহমান পোস্টে লেখেন, ‘আহতদের এক গ্রুপের দাবি হলো, ওদের এখন উপদেষ্টা বানাতে হবে। আজকালের মধ্যেই একটা গ্রুপ কাফনের কাপড় পরে রাস্তায় নামার প্রিপারেশন নিচ্ছে। এরা রাস্তায় শুইয়া পড়বে। উপদেষ্টা না করা পর্যন্ত উঠবে না।
অন্যদিকে সারা দেশে নিউজ করা হবে যে, আহতরা চিকিৎসা পাচ্ছে না। আওয়ামী লীগের এতিমসহ বিভিন্ন পেইজ থেকে অলরেডি ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হয়েছে। আরও জোরেশোরে প্রচার করার প্রিপারেশন চলতেছে। মজার ব্যাপার হলো, এদের মধ্যে অনেকেই ছাত্রলীগের লোকজন। ছাত্রদের হাতে মাইর খাইয়া আহত সেজে এখন আর হাসপাতাল ছাড়তেছে না।
বহু ‘আহত’ নেতা সারা দিন প্রোগ্রাম করেন। ব্যস্ত সময় পার করে এসে হাসপাতালে ঘুমান। ডাক্তাররা এক মাস আগেই ওদের ছুটি দিয়েছে। সুস্থ ঘোষণা করেছে। বাট এরপরও ওরা কেউ ছুটি নেয়নি। হাসপাতালে থেকেই ‘আহত’ পলিটিকস করতেছে।
এদের এখন দাবি হলো, হাসপাতালভিত্তিক নেতা নিয়োগ দিতে হবে। চিন্তা করেন। হাসপাতাল কি রাজনীতি করার জায়গা? একজন আহত মানুষের নেতা হওয়ার শখ থাকে?
আর যখন পুরো ব্যাপারটাকে আওয়ামী লীগের পালাইয়া থাকা অনলাইন অ্যাকটিভিস্টরা প্রমোট করতেছে, তখন এইটাকে কি আর নির্দোষ বলার সুযোগ আছে? আমার ধারণা পুরো রাজনীতির পেছনে দুইটা কারণ আছে:
১। এদের সঙ্গে ছাত্রলীগের শক্ত যোগাযোগ আছে। এরা এসব করাইতেছে, যাতে সাধারণ মানুষ মনে করে যে সরকার আহতদের চিকিৎসা করছে না। এতে পরেরবার কেউ যাতে রাস্তায় না নামে।
২। সরকার আহতদের টাকা আর কার্ড দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এখানে নেতা হতে পারলেই বড় অঙ্কের একটা টাকা মারা যাবে। এমনকি লিস্টে নাম ঢুকানোর বিনিময়েও টাকা খাইতে পারবে।
কথা হলো, এত সাহস এরা পাইতেসে কই?
কারণ, মানুষের সিমপ্যাথি। বেশিরভাগ অ্যাকটিভিস্ট, টকশোর লোকজন সবাই এদের ‘আহত’ বলে বলে মানুষের মধ্যে সিমপ্যাথি তৈরি করতেছে। এদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে বলতেছে।
অথচ একজন আহত মানুষ কেন উপদেষ্টা হতে চাইবে বা একজন আহত মানুষ কীভাবে সারা দিন অনুষ্ঠান করে এসে রাতে হাসপাতালে ঘুমাবে, এই প্রশ্নটা কেউই করতেছে না।
এই আবেগের ব্যবসাতে সব লাভ ঘরে তুলতেছে লীগ। পেইজে পেইজে ছড়াইয়া দিয়েছে যে আহতরা চিকিৎসা পাইতেছে না। আমার মনে হয়, সরকারের এবার কঠোর হওয়া উচিত।
আনসারদের মতো না হলে এরাও কবে বইলা নিজেদের মেরে ফেলে নিজেরাই ঐটা প্রচার করে একটা বিরাট ঝামেলা তৈরি করতে পারে। মিডিয়াগুলো দয়া করে আবেগের আয়নাটা রেখে সরেজমিন যান, দেখে তারপর নিউজ করেন।
আনসার লীগের পর এবার যে সরকার আহত লীগের খপ্পরে পড়েছে, এই ভয়ংকর ষড়যন্ত্রের কথা আপনারা মানুষকে কেন জানাচ্ছেন না এখনও?
আপনারা বারবার বলতেছেন, চিকিৎসা করেন, চিকিৎসা করেন, চিকিৎসা করেন। অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা করা যায়। বাট সুস্থ মানুষ যখন রাস্তায় শুয়ে উপদেষ্টা হওয়ার দাবি করে, সেইটার চিকিৎসা কী হবে?’
যাযাদি/ এম