মহিলা লীগ নেত্রীকে যুবদল নেতা. যোগাযোগ কইরেন, দিমুনি...

প্রকাশ | ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫১

যাযাদি ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত

‘আপনে আমার সঙ্গে যোগাযোগ কইরেন, চার্জশিট থেকে আমি নাম কেটে দিমুনি।’ জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মাহবুবর আলম লাভলুর সঙ্গে বকশীগঞ্জ যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জহুরা বেগমের এমনই একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। গতকাল শনিবার দুই নেতার কথোপকথনের ২ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ফোনে জহুরা বেগম বলেন, আসসালামু আলাইকুম ভাই। লাভলু উত্তর দেন, ওয়ালাইকুম সালাম। ভালো আছেন? জহুরা বলেন, কই ভালো ভাই? শেষ পর্যন্ত থাকবার দিলেন কই। জবাবে লাভলু বলেন, আপনেগর এলাকার গামা উকিলে এগুলো করছে।

জহুরা বলেন, হ, গামা আর ইয়ে মানিক ভাই (উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মানিক সওদাগর) বলে এগুলো জানেই। লাভলু বলেন, মানিক ভাই আপনের বিষয়টা জানে না। জহুরা উত্তর দেন, মামলার তালিকা বলে না দেখে দেয় না। থানায় দেওয়ার আগে বলে তালিকা দেইখা দে। এখন আমাদের ভাইস চেয়ারম্যানি ফেরত দিব? এখন এগুলোর মধ্যে মামলা দিয়া থুইলে কেমনে কী করি! লাভলু বলেন, ঠিকই আছে। মামলার মধ্যে পইড়া থাকলে আরেক ঝামেলা।

এ সময় জহুরা জিজ্ঞেস করেন, নাম কি চার্জশিট থেকে কাটা যাব? জবাবে লাভলু বলেন, আপনে আমার সঙ্গে যোগাযোগ কইরেন, চার্জশিট থেকে আমি নাম কেটে দিমুনি।

জহুরা জানতে চান, এখন কোনো কিছু করা যাব না?

লাভলু বলেন, এখন মানিক ভাইয়ের সঙ্গে বসে কথা বলতে হবো।

জহুরা বলেন, আমি তো এখন মামলার ভয়ে বের হতে পারছি না। উপজেলা থেকে কাগজপত্র সব আইসা পরতাছে। কোর্টে যাইতে বলতাছে সমন্বয়কারীরা। সবাই রিট করব। এলাকায় যদি না থাকতে পারি, জনগণের কাজই যদি না করতে পারি, শুধু উপজেলার চেয়ারম্যান থাকব না। আর যে মেম্বাররা পলাতক, তারা থাকতে পারব না।

এ সময় লাভলু বলেন, আপনার বলে রাস্তার ঠিকাদারি কাজ চলতাছে। ওইডা আমাকে দিয়া দেন, আমি করি। জবাবে জহুরা বলেন, আমার তো নিজস্ব কোনো কাজ নাই। ওইটা আমার না। এইল্লা মানসে বাড়তি কথা কয়। মাইনসে ফেসবুকে দিছে, কোটি কোটি টাকা কামাইছি। এই করছি, সেই করছি। দয়া করে মানিক সওদাগরের সঙ্গে বইসেন তো দেখি। লাভলু বলেন, ঠিক আছে। আমি কালকে বসমু।

শেষে জহুরা বলেন, আমি তো আপনাদের সঙ্গেই কাজ করতে চাই, মিলেমিশে।

এই ফোনালাপের বিষয়ে জানতে যুব মহিলা লীগের নেত্রী জহুরা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মাহবুবুর রহমান লাভলু বলেন, ‘একটি ছেলে আমাকে ফোন ধরিয়ে দিয়ে বলে মামা উনিতো (জহুরা বেগম) পলাতক। কোনো কাজ করতে পারছে না, একটু কথা বলেন। পরে আমি কথা বলি। আমি সহজ-সরল মানুষ ভাই। তিনি ফোনে কথা বলার শুরুতেই মামলা নিয়ে কথা বলে। মামলার বিষয়ে আমার কিছুই বলার নেই। কাজের জন্য তার সঙ্গে কথা হয়েছে। সে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।’

এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মানিক সওদাগর বলেন, ‘রেকর্ড শুনেছি। এখন একজন যদি বলে যে, অমুকের কাছে গেলে মামলা শেষ হবে। কিন্তু আমার কাছে তো আসতে হবে, শুনতে হবে। মামলা আমিই করছি, আমিই শেষ করব।’

জামালপুর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সজীব খান বলেন, কল রেকর্ডটি এখনো শুনিনি। যদি এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যাযাদি/ এস