শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩০ ভাদ্র ১৪৩১

আমরা এমননেতৃত্ব চাই যারা জনগণকে নিজেদের দাস বানানোর চিন্তা করবে না: জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান

যাযাদি ডেস্ক
  ২৯ আগস্ট ২০২৪, ২১:০৩
ছবি : যায়যায়দিন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা চাই সৎ নেতৃত্ব বসুক। দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব বসুক। যারা গদিকে নিজেদের বাপ-দাদার সম্পদ মনে করবে না। আর জনগণকে নিজেদের দাস বানানোর চিন্তা করবে না। বরং জনগণের চৌকিদার হিসেবে নিজেদের মনে করবে। জনগণ শান্তিতে ঘুমাবে আর উনারা রাত জেগে জনগণকে পাহারা দেবে।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি বলেন, এখনও অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। তারা কী মারা গেছেন নাকি বেঁচে আছেন তা কেউই জানেন না। আন্দোলনের ওই রাতগুলোতে অনেক কিছু ঘটেছে, যা আরেকবার ঘটেছিল ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে। যেখানে হাজার হাজার ওলামায়ে কেরামগণ উপস্থিত হয়েছিলেন। ওই রাতে তাদের সঙ্গে যে নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে সেটা আমরা জানি। সেদিনের লাশগুলো কোথায় নেওয়া হয়েছে তা কেউ জানে না। কিন্তু আল্লাহ তো সবকিছু জানে।

জামায়াতের আমির বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে স্বজন হারানোর শোকগুলো একত্র করে আমরা শক্তিতে রূপান্তর করব এবং অঙ্গীকার নেব যে আমরা শহীদদের মর্যাদা রাখব। তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করব না। জামায়াত ইসলামী একটি ইসলামী রাজনৈতিক দল। আমরা চাই সৎ নেতৃত্ব বসুক। দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব বসুক। যারা গদিকে নিজেদের বাপ-দাদার সম্পদ মনে করবে না। আর জনগণকে নিজেদের দাস বানানোর চিন্তা করবে না। বরং জনগণের চৌকিদার হিসেবে নিজেদের মনে করবে। জনগণ শান্তিতে ঘুমাবে আর উনারা রাত জেগে জনগণকে পাহারা দেবে।

তিনি আরও বলেন, আসলে আমাদের ইতিহাস বড়ই বিচিত্র। ইতিহাসের পালা বদলে আমরা বন্ধুকে শত্রু বানাই, শত্রুকে বন্ধু বানাই। এরকম যে জাতি করে সেই জাতি কোনোদিন বিশ্বের দরবারে ও নিজের বিবেকের কাছে সম্মানিত হতে পারে না। অপসংস্কৃতির এই যন্ত্রণা থেকে এই জাতিকে বের হয়ে আসতে হবে। জাতির জন্য যার যেখানে যে অবদান এটা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বীকার করতে হবে।

জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, আমরা আজকে শহীদ পরিবারের কাছে এসেছি সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য নয় বরং আমরা এসেছি অনুপ্রেরণা নেওয়ার জন্য। তারা বড়ই সৌভাগ্যবান। শুধু শহীদদের হাশরের দিন আল্লাহ জিজ্ঞেস করবেন, তুমি তোমার জীবনের সর্বোচ্চ সম্পদ আমার জন্য দান করেছো। আজকে আমি আমার জান্নাতের সব দুয়ার তোমার জন্য খুলে দিলাম। আমার আফসোস এবারের এই যুদ্ধে আমি শহীদের পরিবারের একজন হতে পারলাম না। এ সৌভাগ্য যাদেরকে আল্লাহ দান করেছেন তাদেরকে আমার ঈর্ষা হয়। আমি যদি তাদের একজন হতাম। আমরা আজকে ঘোষণা করতে এসেছি আমরা আপনার পরিবারের সদস্য হতে চাই।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, শহীদরা তো মহা সৌভাগ্যবান। তারা চলে গেল। মায়েরা তাদের ফিরিয়ে আনার কথা বলবেন না। তারা জান্নাতের পথের অগ্রসৈনিক। বিভিন্ন হাসপাতালে বাড়িতে আহত ভাই-বোনদেরকে দেখতে গিয়েছি। কলিজা ফেটে গেছে। যখন দেখেছি যুবক ছেলে দুই চোখে গুলি লেগে অন্ধ হয়ে গেছে। আহ! সে তো আর জীবনে আলো দেখবে না। আলো নিভে গেছে তার। যতদিন বেঁচে আছে কারও সাহায্য ছাড়া একটি কদমও ফেলতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা চেষ্টা করছি সারা দেশে যারা এরকম নিহত হয়েছেন তাদের তথ্য সংগ্রহ করতে। আমাদের তথ্য সংগ্রহকারীরা হিমশিম খাচ্ছে। অনেক জায়গায় গিয়ে তারা মায়েদের বুকফাটা কান্না সহ্য করতে পারছে না। তারা বলে বাবা আমার ছেলেটা কোথায় আছে একটু বলতে পারবা? এই মায়ের কাছে এই জাতি কী জবাব দেবে?

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে