শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১

জামায়াত নেতৃবৃন্দ জেল-জুলুম-ফাঁসি বুকে ধারণ করে দেশেই ছিলেন, পালিয়ে যাননি : ডা. শফিকুর রহমান

যাযাদি ডেস্ক
  ২৭ আগস্ট ২০২৪, ২৩:১৯
ছবি-যায়যায়দিন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘জামায়াত কখনো ধ্বংসাত্মক কাজে জড়িত ছিল না, এখনো নেই। আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলছি, যদি কোথাও প্রমাণিত হয় যে আমাদের একজন কর্মী সন্ত্রাস করেছে তা হলে আমরা জাতির কাছে ক্ষমা চাইব এবং নিজেরা নিজেদেরকে আইনের হাতে সোপর্দ করবো।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) ইন্ডিয়ান মিডিয়া করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ইমক্যাব) সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ইমক্যাবের সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ।

ইন্ডিয়ান মিডিয়া করেসপন্ডেন্টস এসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ইমক্যাব) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, সাধারণ সম্পাদক মাছুম বিল্লাহ, সাবেক সভাপতি বাসুদেব ধর, প্রদীপ্ত নারায়ণ, সিনিয়র সাংবাদিক ফরিদ হোসেন, রাজিব খান, মিজানুর রহমান, রাশেদুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, আবু আলী, আমিনুল হক ভূইয়া, সিয়াম সরোয়ার জামিল, কাউসার আযম, তারিকুল ইসলাম, শাহীন পারভেজ, জাকির হোসেন ও মো: মনির হোসেন প্রমুখ।

আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াত সর্বদাই গণতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করেছে। জামায়াতের দু’জন মন্ত্রী সরকার পরিচালনায় ছিলেন। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি কখনো তাদের স্পর্শ করেনি। জামায়াত দেশ ও জাতির জন্য কাজ করেছে। দুঃখ, মুসিবতে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। জামায়াত কখনো ধ্বংসাত্মক কাজে জড়িত ছিল না। আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলছি যদি কোথাও প্রমাণিত হয় আমাদের একজন কর্মী সন্ত্রাস করেছে তা হলে আমরা জাতির কাছে ক্ষমা চাইব এবং নিজেরা নিজেদেরকে আইনের হাতে সোপর্দ করব। দেশের কোথাও কোনো ঘটনা ঘটলে আমাদেরকে অপবাদ দেয়া হতো। এমনকি গাইবান্ধায় যখন একজন এমপি নিহত হলেন, তখন সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী হত্যার জন্য জামায়াতকে দায়ী করলেন। পরবর্তীতে তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদেরকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জন্য দায়ী করে ১ আগস্ট অন্যায়ভাবে নির্বাহী আদেশবলে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, যা দল হিসেবে আমাদের ওপর সবচাইতে বড় জুলুম। আমরা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর, সহায়-সম্পদ, ধর্মীয় উপাসনালয় পাহারা দিয়েছি যাতে কেউ ভাঙচুর করতে না পারে। আমরা বিশ্বাস করি সকল মানুষ সমান। এখানে সংখ্যাগুরু, সংখ্যালঘুর কোনো প্রশ্ন নেই। নাগরিক হিসেবে সকলেই সমান অধিকার পাবেন এটাই স্বাভাবিক। আমরা চাই দেশে দ্রুত শান্তিশৃঙ্খলা ফিরে আসুক। দেশের সংবিধান, প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির সংস্কার হয়া দরকার। দল বা ধর্মের ভিত্তিতে কোনো বিভাজন করা যাবে না। আমরা প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা দল হিসেবে সকলের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা অসত্য, বানোয়াট অভিযোগ দিয়ে কাউকে হয়রানি করা পছন্দ করি না। জামায়াত কখনো কোনো হয়রানিমূলক কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিল না, এখনো নেই।

এক প্রশ্নের জবাবে আমিরে জামায়াত বলেন, বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। একজন প্রধান বিচারপতিকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন সিষ্টেম বলতে কিছু নেই। পুলিশ বাহিনী জনগণের বন্ধু না হয়ে শত্রুতে পরিণত হয়েছে। নির্বাচনের জন্য যৌক্তিক সময় দিতে হবে। দেশকে সংস্কার করতে হবে। এই মুহূর্তে জামায়াতের প্রধান কাজ হলো ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে নিহত, আহত ও তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল। কিন্তু তারা তাদের অর্জন ধরে রাখতে পারেনি। জনগণ আওয়ামী লীগকে কীভাবে দেখে, তার চাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো আওয়ামী লীগ নিজেদেরকে কীভাবে দেখে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ভারতে অবস্থান সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তরে আমিরে জামায়াত বলেন, সাড়ে ১৫ বছর দেশ শাসন করে লক্ষণ সেনের মতো দেশত্যাগ উনার জন্য মানানসই হয় নাই। জামায়াত নেতারা কখনো দেশ ত্যাগ করেননি। তারা মোকাবেলা করেছেন। আমাদের নেতৃবৃন্দ জেল-জুলুম বুকে ধারণ করে দেশেই ছিলেন। কখনো দেশত্যাগ করেননি।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে