জিনিপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে, মানুষের আয়-ইনকাম সেভাবে কমছে : কাদের

প্রকাশ | ০৬ জুলাই ২০২৪, ২২:২৯

গাজীপুর প্রতিনিধি
ছবি : যায়যায়দিন

গাজীপুর জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, দেশের বর্তমান অবস্থা ভালো নয়, সাধারণ মানুষ অনেক কষ্টে জীবন-যাপন করছে। জিনিপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে, মানুষের আয়-ইনকাম সেভাবে কমছে। জিনপত্রের দাম বাড়ছে, মজুরীর দাম কমছে। ডলারের সঙ্গে আমাদেও টাকার মানের অবমূল্যায়ন হচ্ছে। ডলারের দাম বেড়ে গেছে। দেশে পর্যাপ্ত ডলার নেই। আমাদেও আমাদের বিভিন্ন পণ্যের আমদানি ব্যয় বাড়ছে, সঙ্গে সঙ্গে রিজার্ভও কমে যাচ্ছে। 

তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, খালি কর্মী বাহিনী যোগালেই সংগঠণ শক্তিশালী হবে না। সংগঠণকে শক্তিশালী করতে হলে আমাদের রাজনীতি দিতে হবে। জনগণ যেই রাজনীতি চায় তাদেও সেই রাজনীতি দিতে হবে। রাজনীতি করতে হলে কষ্ট করতে হয়, কষ্টের জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। যে কোন সময় যে কোন বিপদে দাঁড়াতে হবে। তাহলেই সংগঠণ এগিয়ে যাবে। তা নাপরলে জাতীয় পার্টি/সংগঠণ হবে না। তখন যে সংগঠণ হবে তা হবে অপকর্ম/কুকর্মের সংগঠণ। 


গাজীপুর মহানগরের তেলিপাড়া এলাকায় সাগর-সৈকত কনভেনশন সেন্টারে শনিবার আয়োজিত জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে জিএম কাদের ওইসব কথা বলেন।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও গাজীপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এম.পি। 

সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব অ্যাডঃ মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জাপা'র প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ জহিরুল ইসলাম জহির, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আরিফুর রহমান খান,সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোহাম্মদ রাজু,  জাপা'র ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ জসিম উদ্দিন, গাজীপুর মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মোঃ শরিফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম প্রমুখ। সম্মেলন-সভাটি পরিচালনা করেন গাজীপুর জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব আলহাজ্ব মোঃ কামরুজ্জামান মন্ডল।

জিএম কাদের ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের কোটা প্রথার আন্দোলন বিষয়ে বলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সম্মান করি। কিন্তু  তাদের ছেলে-পেলে, তাদের পরের প্রজন্ম কোটা প্রথার বিষয়ে খুব একটা নীতির মধ্যে আসে না। সবচে বড় কথা আমাদেও দেশ সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য এটা বাধা স্বরূপ হতে পারে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে যে সংবিধান আছে সেই কোটা সিস্টেম ওই সংবিধানের ২৯এর ১,২ ও ৩ নং ধারা যদি কেউ পড়েন সেখানে দেখবেন এ কোটা সম্পূর্ণ সংবিধান বিরোধী।  এটা আমার কোন কথা নয়। সবচে মজার বিষয় হচ্ছে বর্তমান সরকার এটা চাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।কিন্তু সেখানে হাত-পা বাঁধা। এ সব ধারা পরিবর্তনের ক্ষমতা এ সংবিধানে দেয়া হয়নি। সংবিধান অনুযায়ী এ কোটা প্রথা বৈধ করার কোন উপায় নেই। 

জিএম কাদের আরো বলেন, ২০১০ সালে দায়মুক্তির আইন করা হয়েছিল। দায়মুক্তিতে আওয়ামীলীগ চ্যাম্পিয়ন। বিদ্যুৎখাতে দায়মুক্তি, জ¦ালানীখাতে দায়মুক্তির কারণে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। দেশে রিজার্ভেও অবস্থা খারাপ হচ্ছে। যার কারণে আমাদেও গাড়ি চলতে পারছে না, চুলা জ¦লে না। আবার আইন হয়েছে যারা অবৈধ উপায়ে আয় করেছেন তা দায়মুক্তি দিয়ে সাদা করা যাবে। ্গুলো হলো চুরির দায়মুক্তি, অপরাধের দায়মুক্তি। এসব দায়মুক্তি দিয়ে দেশকে নর্দমায় ফেলে দেয়া ব্যবস্থা করা হয়েছে। 
জাতীয় পতাকা ও জাপা'র দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনটি উদ্বোধন করেন জিএম কাদের। 

সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়াকে জেলা জাপার সভাপতি এবং মো. কামরুজ্জামান মন্ডলকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যের কমিটি ঘোষনা করেন। তাদেরকে আগামী ১৫ দিনের পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠণ করে জমা দিলেন বলেন কাদের।  

যাযাদি/ এস