সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১

দুর্নীতিবিরোধী কর্মসূচিতে যাচ্ছে বিএনপি

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:৩১
-ফাইল ছবি

দুর্র্নীতিবিরোধী অভিযানে যাওয়ার সরকারি ঘোষণার মধ্যে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও এই ইস্যুতে কর্মসূচিতে যাচ্ছে। পাশাপাশি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি জন্য ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে চায় দলটি।

বিএনপির সূত্রমতে, আগামী সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নতুন কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে। এবারের বৈঠকের আলোচনায় সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে ‘দুর্নীতি-অনিয়ম’ ও ভারতের সঙ্গে সরকারের চুক্তি-সমাঝোতার বিষয়টি। দুর্নীতিবিরোধী ও চুক্তি-সমঝোতার প্রতিবাদে কর্মসূচি যুগপৎভাবে পালনের ভাবনা আছে দলে। তবে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন বিএনপি এককভাবেই করবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সরকারের সামনে দুর্নীতি দমনের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দৃশ্যমান হয়েছে। সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ইস্যুতে সরকার তার অবস্থান পরিষ্কার করেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানসহ অন্য কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রেও সরকারের কঠোর অবস্থানের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। অনিয়মে জড়িতদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না, সেটি পরিষ্কার হওয়ায় ‘অপরাধীরা’ স্বাভাবিকভাবেই চিন্তিত হয়েছে। এরই মধ্যে রাজপথের বিরোধী দল এই ইস্যুতে কর্মসূচিতে গেলে দুর্র্নীতি বিরোধী অভিযান আরো বেশি ফলপ্রসু হতে পারে।

বিএনপি সূত্রমতে, সম্প্র্রতি বিএনপির শীর্ষ নেতার সঙ্গে দলের যুগ্ম মহাসচিবদের বৈঠকেও দুর্নীতির ইস্যুটি প্রাধান্য পায়। যুগ্ম মহাসচিবেরা দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে এ বিষয়ে লিখিত প্রস্তাব পাঠান। যাতে বলা হয় প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে দু’দেশের মধ্যে যেসব চুক্তি ও সমঝোতা হয়েছে তা দেশবিরোধী। একই সঙ্গে সম্প্রতি গণমাধ্যমে সরকারের সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তার দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ পাওয়ার বিষয়টি দেশে দুর্নীতির বিস্তারের প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রস্তাবে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের পাশাপাশি দুর্নীতি ও চুক্তি-সমঝোতার প্রতিবাদে কর্মসূচি দেওয়ার কথাও বলা হয়।

এবিষয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের পাশাপাশি ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার অসম চুক্তি-সমাঝোতা এবং দুর্নীতিবিরোধী কর্মসূচি দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির একজন নীতিনির্ধারক জানান, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। ভারতের সঙ্গে অসম চুক্তি হল। সরকার সংশ্লিষ্টদের একের পর এক দুর্নীতির খবর বের হয়ে আসছে। এই ইস্যু নিয়ে তো মাঠে থাকতে হবে। তাছাড়া কোটাবিরোধী আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলনে মাঠের বিরোধীদল হিসেবে বিএনপি সমর্থন দিয়ে মাঠেও নামতে পারে। এই নেতা বলেন, একের পর এক ইস্যু সামনে আসছে। ফলে এসব ইস্যুতে কোন না কোনভাবে বিএনপিকে মাঠে থাকতে হবে।

বিএনপির এক সিনিয়র নেতা জানান, অন্যসব ইস্যুতে কর্মসূচি থাকবে। তবে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি আান্দোলন চরতে থাকবে ধারাবাহিকভাবে। তার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত। প্রথম দুইটি কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও জেলা পর্যায়ের সমাবেশে বাধা ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। দ্বিতীয় ধাপের কর্মসূচি জেলা ও মহানগর পর্যায়ে থাকবে না-কি উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে করা হবে সে বিষয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হবে।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের কর্মসূচি চলবে। এই কর্মসূচি থামবে না। স্থায়ী কমিটির পরবর্তী বৈঠকে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে।

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচি শেষ হয়েছে বুধবার। এক সপ্তাহে তিন দিনের কর্মসূচির বিষয়ে বিএনপি নেতাদের মূল্যায়ন হল, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর ঢাকার সমাবেশে বড় জমায়েত হয়েছে। মহানগর ও জেলা পর্যায়ের কর্মসূচিতেও নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বেড়েছে। কয়েকটি জেলায় বাধা-হামলার পরও নেতাকর্মীরা লড়াই করেছেন।

নেতারা মনে করেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের বিষয়ে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে এক ধরনের আবেগ কাজ করে। ফলে এ ইস্যুতে কর্মসূচি দিলে তাতে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণও বেশি হয়। গত ২৮ জুন খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন কর্মসূচিতে নেতাদের বেশ সক্রিয় দেখা গেছে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে