শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১

দলের দু'পক্ষের সংঘর্ষে বাঘা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিহত

রাজশাহী অফিস
  ২৬ জুন ২০২৪, ২৩:০৯
আপডেট  : ২৬ জুন ২০২৪, ২৩:১৬
ছবি : যায়যায়দিন

রাজশাহীর বাঘায় পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম মারা গেছেন। বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, গত শনিবার থেকে আশরাফুল ইসলাম হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। রোববার তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। তাঁর মস্তিষ্কে ইনফেকশন হয়েছিল। পরে অক্সিজেন লেভেল কমে যায়।

উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহিনুর রহমান বলেন, আশরাফুল ইসলাম এর আগে দুবার উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। এরপর টানা দুবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন।

গত শনিবার (২২ জুন) উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৩০ নেতাকর্মী আহত হন। সেদিন সকাল ১১ থেকে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষ চলাকালে একাধিক হাত বোমার বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে গুরুতর আহত অবস্থায় উপজেলা চত্বরের ভেতর থেকে আশরাফুল ইসলামকে উদ্ধার করা হয়। তাঁর মাথায় ধারালো অস্ত্রের কোপ ছিল।

বাঘা উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয়ের অনির্বাচিত দলিল লেখক সমিতির কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের জেরে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি থেকে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। গত ১০ জুন সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয়ের দলিল লেখক সমিতির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হন। এরপর দলিল লেখক সমিতির কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে ২০ জুন মানববন্ধন করেন বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. লায়েব উদ্দিন ও পৌর মেয়র আক্কাছ আলীর সমর্থকেরা।

পাল্টা কর্মসূচী হিসেবে গত শনিবার সকাল ১১টায় পৌর মেয়র আক্কাছ আলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধনের আয়োজন করেন আশরাফুল ইসলাম ও তাঁর সমর্থকেরা। মেয়র আক্কাছ আলীর নেতৃত্বে একই সময়ে সেখানে অনির্বাচিত দলিল লেখক সমিতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। এই পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচী কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয় পক্ষ।

বাঘা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় পরদিন রোববার দুপুরে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহিনুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেছেন। তিনি দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলমের অনুসারী। মামলায় বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাছ আলী, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পাকুড়িয়া ইউপির চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলামসহ ৪৬ জনের নাম উল্লেখ করা রয়েছে। এ ছাড়া ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মেরাজুল ইসলামসহ সাতজন গ্রেপ্তার হন।

এদিকে, আশরাফুল ইসলাম বাবুলের মৃত্যুর খবর পেয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে যান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এ সময় মরহুমের ছেলেকে শান্তনা দেন ও তার প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন রাসিক মেয়র।

অপরদিকে, আশরাফুল ইসলাম বাবুল মারা যাবার খবর পেয়ে বুধবার বিকেল উপজেলা আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। এ সময় তারা রাস্তায় আগুন জালিয়ে দেয়। তারা মেয়র আক্কাছ আলীসহ ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করে শ্লোগান দেয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে