হজে থেকেও মামলার আসামি নড়িয়ার যুবদল নেতা সাগর

প্রকাশ | ০৯ মার্চ ২০২৪, ১০:৫৮

নড়িয়া (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি
ফাইল ছবি

এজাহারে উল্লেখিত তারিখের সময় ওমরাহ হজ্বে থেকেও বাংলাদেশে মামলার আসামী হয়েছেন শরীয়তপুরের এক যুবদল নেতা। 

কিন্তু যুবদল নেতার পাসপোর্টে দেখা যায় তিনি ২০২২ সালের   ১৭ ফেব্রুয়ারী সৌদি আরবে যান। পরবর্তীতে ৯ মার্চ তিনি ওমরাহ শেষ করে বাংলাদেশে আসেন। কিন্তু মামলার বাদী  এজাহারে উল্লেখ করেছেন ওই যুবদল নেতা  ওই বছরের ২০ ফেব্রুয়ারী তিনি বাংলাদেশে বসে তিনি সহ তার আরো ৩ জন সহযোগী তার ছেলের থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। 

গত বছরের মে মাসে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় মাদারীপুর রাজৈরের  মো: ইলিয়াছ আকন বাদী হয়ে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার  যুবদলের সিনিয়র  যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান সাগর সহ বিভিন্ন জেলার ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৮ থেকে ৯ জনকে অজ্ঞাত নাম  করে একটি মানব পাচার মামলা দায়ের করেন। 

তার বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে এই বিষয়ে সে কিছুই জানতেন না। তবে এই বছরের  ১৮ ফেব্রুয়ারী   রাতে সিটিটিসি কাউন্টার টেরোরিজম মোহাম্মদপুর থানার একটি মানবপাচার মামলায় গ্রেফতার করে ১দিন পরে কোর্টে তুলেন। কিন্তু ঘটনার সময় পবিত্র ওমরাহ হজে থাকায় কোর্টে পাসপোর্ট দেখে জামিন দেন এমতঅবস্তায় উক্ত থানার একটি পেন্ডিং মামলা বিস্ফোরক দব্র আইন ও অগ্নি সংযোগ - ভাঙচুরের অভিযোগের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে  দুই দিনের পুলিশ রিমান্ডে নেন। দুই দিনের রিমান্ড শেষে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরন করেন পরে ৮দিন পর  ২৭ ফেব্রুয়ারী এসি এম এম ( ACMM)  কোর্ট থেকে জামিন লাভ করেন।

এজাহারে  উল্লেখ করেন বাদী ইলিয়াছ আকনের মেজো ছেলে ইসমাইলের সাথে মামলার ১নং  আসামি হাজী আহমদ আলীর সাথে পূর্ব পরিচিত হওয়ার কারণে  তার ভাইয়ের মাধ্যমে ইতালি নেওয়ার প্রস্তাব দেয়। এই প্রস্তাবে তারা রাজি হয়ে ইতালি যাওয়ার জন্য  ১৮ লক্ষ টাকার চুক্তি করেন । চুক্তি অনুযায়ী ২০২১ সালের ১২ ডিসম্বর ৮ লাখ টাকা সে সময় দেওয়া হয় । পরবর্তীতে তার ছেলেকে বলেন ২০২২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী  তার ইতালি যাওয়ার ফ্লাইট। সেই অনুযায়ী  ৩ হাজার ইউরো নিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারী   তাদের  ঢাকার পল্টনে সাগর ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস ইস্টার্ন  অফিসে যেতে বলা হয়। তাদের কথা অনুযায়ী  সেই অফিসে তার ছেলে গেলে যুবদল নেতা মতিউর রহমান সাগর ও তার ৩ সহযোগী মো: আউয়াল,রাসেল খান ও রাশেদ সুকৌশলে এক হাজার পাঁচশ ইউরো নিয়ে নেয়। পরে ১৬ ঘন্টা বসিয়ে রেখেও তারা ইতালি যাওয়ার কোন অগ্রগতি না করে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে মামলার বাদী ইলিয়াছ আকন বলেন, আমি মতিউর রহমান সাগরকে কখনো দেখি নাই ও চিনি না। আমার বাড়ি রাজৈর তার বাড়ি শরীয়তপুরে তাকে কি ভাবে চিনবো।তার সাথে আমার লেন দেন হলে চিনতাম। আমার ছেলে ইসমাইল লিবিয়া থাকে। সে কাকে কখন কি ভাবে টাকা দিছে আমি তা জানিনা।আমার ছেলের সাথে লিবিয়া থাকে শরীয়তপুরের নুরু। সে মতিউর রহমান সাগরের নাম ছেলেকে দিয়ে বলাইছে আবার সে ও বলছে। তাই তার নাম মামলায় দিছি।

এ বিষয়ে যুবদল নেতা মতিউর রহমান সাগর বলেন, এমন অনেক মামলাই আমার জিবনে আছে। ঘটনার সময় আমি বিদেশ ছিলাম তবুও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মুলক মামলায় আমাকে জড়িয়েছে। এই মামলা গত ২ বছর আগের ঘটনার দিন আমি সৌদী আরব হজে ছিলাম। তবুও এজাহার ভুক্ত আসামি সিটিটিসি কোন সঠিক তদন্ত না করেই আমাকে গ্রেফতার করিয়া রিমান্ডে নিয়েছে। আমার দুটি মোবাইল তাদের কাছে জব্দ তালিকায় ও দেখায়নি মোবাইল চাইলে সঠিক কিছু বলেও না।এই মামলার বাদী ও অন্য আসামীরা কেউ আমাকে চিনেনা।  এসমস্ত মামলা নিয়ে অতি শিঘ্রই আমি সংবাদ সম্মেলন করব এবং উচ্চ আদালত ( হাইকোর্টে দারস্ত হবো এবং আমি  সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতা চাই

এ বিষয়ে কাউন্টার টেররিজমের তদন্ত কারি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, বাদী মামলাটি প্রথম মোহাম্মদপুর থানায় করেন। পরবর্তীতে মামলাটি কাউন্টার টেররিজমে আসলে আমি তদন্তের দায়িত্ব পাই। মতিউর রহমান সাগর ঘটনার সাথে জরিত নয় এই রকম কোন প্রমাণ দেখালে মামলা থেকে তার নাম বাধ দেওয়া হবে।

যাযাদি/ এস