চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং, পাহাড়তলী ও হালিশহর) আসনের উপনির্বচন চলাকালে রোববার দুপুর পর্যন্ত একটি ভোট পড়েনি এমন বুথও ছিলো। এমনকি জনগণকে ভোট দিতে কেন্দ্রে যেতে মসজিদের মাইক দিয়ে আহবান জানানো হয়েছে।
সকাল থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটার সংকট ছিলো। প্রার্থীদের কর্মী সমর্করা ভোটারদের বুঝিয়েও কেন্দ্রে নিতে ব্যর্থ হয়েছে। অনেক কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে বাইরে অসংখ্য উৎসুখ মানুষ অবস্থান করলে ভোট দিতে কেন্দ্রে যাচ্ছেন না।
রবিবার সকালে শুরু হওয়া এই আসনের উপনির্বচন চলাকালে দুপুর পর্যন্ত একটি ভোট পড়েনি এমন বুথও ছিলো। অন্য দিকে ভোটারে খরা কাটাতে একটি এলাকার মসজিদের মাইক থেকে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার অনুরোধ জানাতে শুনা গেছে।
এদিকে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দক্ষিণ কাট্টলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, এ বিদ্যালয়ের দুই ভবনে দুটি মহিলা কেন্দ্র। এর মধ্যে একটির কেন্দ্র নম্বর ৪৬ অপরটি ৪৭ নম্বর। দুপুর ১২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত ৪৭ নম্বর কেন্দ্রের ছয়টি বুথে সংগ্রহ হয়েছে ৯৯ ভোট। এক নম্বর বুথে ভোট পড়েছে ৩২টি, দুই নম্বর বুথে ৩৪টি, তিন নম্বর বুথে মাত্র একটি, চার নম্বর বুথে চারটি, পাঁচ নম্বর বুথে ১১টি এবং ছয় নম্বর বুথে ১৭টি করে ভোট পড়েছে।
এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা রাফিউজ্জামান বলেন, ‘৪৭ নম্বর কেন্দ্রে দুই হাজার ৩৮৬ জন ভোটার আছে। ভোট পড়েছে ৯৫টি।
এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মঞ্জুর মোরশেদ বলেন, ‘এ কেন্দ্রে ভোটার আছে দুই হাজার ৪৬৫ জন। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ৯৪টি ভোট পড়েছে। দুপুরে নগরীর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এ বিদ্যালয় (১১৭ নম্বর মোল্লাপাড়া ভোটকেন্দ্র) কেন্দ্রটির তিন নম্বর বুথে ৩৯১টি ভোটের মধ্যে একটি ভোটও পড়েনি। এ কেন্দ্রের মোট ভোটার দুই হাজার ৩৪৬টি।
এ কেন্দ্রের তিন নম্বর বুথের সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আনসার উল্লাহ বলেন, ‘তিন নম্বর বুথে ৩৯১ জন নারী ভোটার আছেন। দুপুর পর্যন্ত কোনও ভোট পড়েনি।
এদিকে ১০ টা থেকে দুপুর বারোটা পর্যন্ত নগরীর বাদুরতলা জঙ্গি শাহ মাজার এলাকায় একটি মসজিদের মাইক থেকে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে এলাকাবাসীকে আহ্বান করতে শোনা গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন নির্বাচনের কাজে মসজিদের কোন কিছু ব্যবহার করা ঠিক নয়। মসজিদের মাইক লাগানো হয়েছে শুধু আজান ও ধর্মীয় কাজের জন্য।
এ নির্বাচনে কোন কেন্দ্রে তেমন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে কিছু কিছু কেন্দ্রের সামনে প্রার্থীর সমর্থকদের জটলা দেখা গেছে। বিপুল সংখ্যক বিজিবি, র্যাব পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করেছে।
এদিকে কেন্দ্রে ভোটার আনার জন্য আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন যানবাহন দেওয়া হয়েছে। যেগুলো এলাকা থেকে ভোটারদের কেন্দ্রে আনা নেওয়া করেছে।
গতকাল রবিবার সকাল ৮টা থেকে ১৫৬টি ভোট কেন্দ্রের এক হাজার ২৬১টি বুথে ইভিএমের মাধ্যমে চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোট কেন্দ্রগুলো মনিটরিং করার জন্য এক হাজার ৪০৭টি সিসি ক্যামেরা লাগানো ছিলো।
নির্বাচনে পাঁচ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু স্বতন্ত্র প্রার্থী মনজুরুল ইসলাম ভুঁইয়া, জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. শামসুল আলম, তৃণমূল বিএনপির দীপক কুমার পালিত ও গণমুক্তি জোটের রশিদ মিয়া।
এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৮৮ হাজার ৬৩৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৪৮ হাজার ৯৩৮ এবং নারী দুই লাখ ৩৯ হাজার ৬৭৭ জন। এ ছাড়া এ আসনে ২৩ জন ভোটার আছেন তৃতীয় লিঙ্গের।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের নির্বাচনী কর্মকর্তা ও রিটানিং অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হয়েছে। কোথাও কোন সমস্যা হয়নি। প্রতিটি কেন্দ্রে বসানো সিসি ক্যামেরা দিয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে ভোট পর্যবেক্ষণ করেছে ইসি।
যাযাদি/ এস