আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ: রক লিজেন্ডের অবিনশ্বর কীর্তি

প্রকাশ | ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২১

এ কে এম রেজাউল করিম
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ব্যান্ড তারকা ও গিটার লিজেন্ড আইয়ুব বাচ্চু ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তাঁর মৃত্যুর খবরটি জানার পর থেকে হৃদয়ে এক নিঃশব্দ হাহাকার শুরু হয়েছে। শুধু সংগীতের জাদুকর নয়, তিনি ছিলেন আমাদের সবার প্রিয় শিল্পী।

কিশোর বয়স থেকেই স্বপ্ন বুনেছিলেন তিনি। গানের প্রতি ঝোঁক ছিল শৈশব থেকেই। আধুনিক-লোকগীতি ও ক্লাসিক্যালের পাশাপাশি শুনতেন প্রচুর ওয়েস্টার্ন গান। তাঁর মৃত্যুর খবর শোনার পর মনের মধ্যে কেবল একটি গান বেজে উঠছে—“সেই তুমি কেন এত অচেনা হলে...” এই গানের কথাগুলি জীবন, মৃত্যু ও হারানোর যন্ত্রণার কথা ভাবতে ভাবতে, অফিসে এসে ভাবছি, কেন বুকের ভেতর হাহাকার করছে।

আইয়ুব বাচ্চুর গিটার আর তার গান ভক্তদের মধ্যে উন্মাদনা সৃষ্টিকারী। মাত্র ৫৬ বছর বয়সে চলে গেলেন তিনি, রুপালি গিটার হাতে। দেশীয় ব্যান্ড সংগীতের তিনি ছিলেন মধ্যমণি। ২৭ বছরের পথচলায় তাঁর ব্যান্ড এলআরবি দিয়েছে অসংখ্য জনপ্রিয় গান।

১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করা আইয়ুব বাচ্চু তার কৈশোর এবং তারুণ্যের দিনগুলো কাটিয়েছেন সেখানে। গায়ক হওয়ার পথে প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বন্ধুবান্ধবদের সাথে মিলিত হয়ে গড়ে তোলা ব্যান্ড “আগলি বয়েজ”-এর মাধ্যমে। এরপর ১৯৭৮ সালে পেশাদার শিল্পী হিসেবে শুরু করেন তার যাত্রা।

১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠা করেন এলআরবি। তাদের প্রথম কনসার্ট হয়েছিল ঢাকার একটি ক্লাবে, যেখানে তারা ইংরেজি গান পরিবেশন করেছিলেন। ১৯৯২ সালে এলআরবির প্রথম অ্যালবাম প্রকাশিত হয়, যা শ্রোতাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগায়। 

আইয়ুব বাচ্চুর একক অ্যালবামগুলোও ছিল স্মরণীয়। ১৯৮৬ সালে রক্ত গোলাপ এবং ১৯৯৫ সালে কষ্ট অ্যালবামটি ছিল দারুণ জনপ্রিয়। তার সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমে তিনি হাজারো শ্রোতার হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন।

আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন এক অসাধারণ সৃষ্টিশীল মানুষ, যার গানগুলো মানুষের অনুভূতির প্রতিফলন। তাঁর সৃষ্টির মধ্যে হারানোর বেদনা, প্রেম, ভালোবাসা সব কিছুই রয়েছে। তিনি যে শুধু একজন শিল্পী নন, বরং আমাদের সকলের কাছে চেনা এবং আপনজন হয়ে থাকবেন অনন্তকাল।

আজ আমরা গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি আইয়ুব বাচ্চুকে। তাঁর গানগুলো চিরকাল আমাদের মনে জীবন্ত থাকবে। বাচ্চু ভাই, আপনার অবদান আমাদের হৃদয়ে চিরকাল রয়ে যাবে।

লেখক :  কলামিষ্ট, সমাজ সেবক ও রাজনীতিবিদ।

যাযাদি/ এসএম