‘কোটা বহাল রাখায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সুযোগ কমেছে, দেশ ছাড়ার প্রবণতা বাড়ছে মেধাবীদের’

প্রকাশ | ০৮ জুলাই ২০২৪, ১৯:২৫

নাইমুর রহমান
ছবি-যায়যায়দিন

গত ৫ জুন, সরকারি চাকরির নিয়োগ পরিক্ষায় কোটা পদ্ধতি বহাল রাখার রায় দেয় হাইকোর্ট। রায়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং অন্যান্য কোটা মিলিয়ে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা বহালের নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। হাইকোর্টের এমন রায়ের ফলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে দেশের সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমেছে কোটা বিরোধী আন্দোলন শিরোনামে।

দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা যখন মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি প্রাপ্তির জন্য সংগ্রাম করছেন, তখন কোটা পদ্ধতির সুবিধাভোগীদের জন্য চাকরির পথ সুগম হয়ে যাচ্ছে। চাকরিতে কোটা পদ্ধতির এই বৈষম্যের ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিযোগিতার সুযোগ কমছে।দেশে বেকারত্বের হার বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। কোটা পদ্ধতিতে নিয়োগের ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা হতাশায় ভুগছে এবং তাদের মধ্যে ক্যারিয়ার নিয়ে আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা দিচ্ছে। আর এই হতাশা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী উন্নত ভবিষ্যতের সন্ধানে বিদেশে গমনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। চাকুরীর নিশ্চয়তা ও উন্নত জীবনধারণের সুযোগ নিতে ইউরোপ কিংবা আমেরিকার মত দেশগুলোতে পাড়ি জমাচ্ছে অনেকেই। যার ফলে মেধা পাচার হওয়া ও দেশ মেধা শূন্য হয়ে পড়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। দেশের উন্নয়নে এর ভয়াবহ প্রভাবও দেখা দিতে পারে।

শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। কারন এই শিক্ষাই দক্ষ ও মেধাবী তরুণ সৃষ্টি করে। আর সেই তরুণরা দেশের একমাত্র চালিকাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। কিন্তু কোটা পদ্ধতিতে মেধা ও দক্ষতার যদি এরূপ অবমূল্যায়ন হয় এবং অযোগ্যরা যদি রাষ্ট্রযন্ত্রে এভাবে আসীন হতে থাকে তাহলে দেশের উন্নয়ন কতটুকুই বা সম্ভব সেটাই এখন প্রশ্ন। 

বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য নীতি পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। চাকরিতে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সুযোগ দেয়া হলে বেকারত্ব হ্রাস পাবে এবং মেধাবী শিক্ষার্থীরা দেশে থেকেই দেশের উন্নয়ন সাধনে ভূমিকা রাখতে পারবে। কতৃপক্ষের উচিত এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা এবং উপর্যুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

লেখক, 
নাইমুর রহমান
৩য় বর্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।