মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট ২০২৪, ১২ ভাদ্র ১৪৩১

লক্ষ্মীপুর—৪ আসনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদুন্নাহার লাইলীকে সংসদ সদস্য দেখতে চাই  

কৃষিবিদ মো. বশিরুল ইসলাম
  ২২ নভেম্বর ২০২৩, ১৪:০৩
লক্ষ্মীপুর—৪ আসনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদুন্নাহার লাইলীকে সংসদ সদস্য দেখতে চাই  

পৃথবীতে এমন কিছু মানুষ আছেন, যারা স্বপ্ন দেখেন এবং স্বপ্ন দেখাতে ভালোবাসেন। সময়ের সঙ্গে তাদের বয়স বাড়ে সত্যি, কিন্তু স্বপ্ন দেখা কিংবা দেখানো বন্ধ হয় না—এক অর্থে তারা স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। আর তাই দেহে না হলেও মনেপ্রাণে মানুষগুলো চিরনবীন থেকে যান। এমন এক স্বাপ্নিক ব্যক্তিত্ব হলেন সবার শ্রদ্ধেয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদুন্নাহার লাইলী। এই মানুষটা যত দেখছি ততই অভিভূর্ত হচ্ছি। আমি জীবনে অনেক মানুষের সংস্পর্শে এসেছি। কিন্তু লাইলী আপা মতো একজন খাঁটি দেশ প্রেমিক মানুষ আর দ্বিতীয় কাউকে দেখিনি। ‘সদা নিলোভ’ ও ‘নিরহংকারী’ শব্দ দুটো তাঁর চেয়ে আর কারও বেলায় বোধ হয় বেশি প্রযোজ্য হতে পারে না। তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন হিসেবে দলের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে চলছেন।

একজন সৎ, কর্মঠ, নিরহংকার, দক্ষ ও মানবিক নেত্রী হিসেবে ইতোমধ্যে লক্ষ্মীপুর—৪ (রামগতি ও কমলনগর) আসনে মানুষের আস্থা ও ভালোবাসার প্রতীক হয়ে উঠেছেন ফরিদুন্নাহার লাইলী। সততা ও সাহসীকতার আরেক নাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক এবং লক্ষ্মীপুর—৪ সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদুন্নাহার লাইলী। জেলাবাসীদের কাছে বিপদ—আপদে যে নামটি সবার আগে উচ্চারিত হয় তিনি হলেন লাইলী আপা। সংরক্ষিত আসনের এমপি থাকাকালে তিনি রামগতি ও কমলনগর মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। ওই সময়ে তার সহায়তায় এলাকার অনেক মানুষ সরকারি বেসরকারি চাকুরী পায়। তাতে অল্প সময়ের মধ্যে তিনি তরুণ—যুবকদের নিকট জনপ্রিয় নেত্রীয় পরিণত হন। দলের পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের আস্থা অর্জন করে চলছেন।

প্রকৃতপক্ষে, লক্ষ্মীপুর—৪ আসনের হতাশা শেষ হওয়ার দিন আসছে ৭ জানুয়ারি ২০২৪। দীর্ঘদিন যে এলাকার মানুষগুলো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের সংস্পর্শ পায়নি তারা ফরিদুন্নাহার লাইলীর নেতৃত্বে উন্নয়নের চাকা ঘুরাতে চলেছেন। ২০১৮ সালে এখানে মহাজোটের বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান সংসদ সদস্য ছিলেন। বর্তমানে বিকল্প ধারার মহাসচিব মেজর (অব.) এম এ মান্নানের স্ত্রী ও বাংলাদেশ ইন্ড্রাস্টি্রয়াল ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফসি) সাবেক পরিচালক উম্মে কুলসুম মান্নান, মেয়ে তানজিলা মান্নানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ দেখিয়ে ২১ কোটি ২১ লাখ ৬৭ হাজার ৯৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৭ সেপ্টেম্বর মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ—পরিচালক মো. আব্দুল মাজেদ। মহাজোটের থাকার অবস্থারও তিনি এলাকায় তেমন উন্নয়নে কাজ করেনি। এমনকি ভোটারদেরও মন জয় করতে পারেনি। তাই ভোটারদের মধ্যে সেই হতাশার জায়গাটায় লাইলী আপা আশার বাণী শুনিয়েছেন। তাই ভোটাররা এখন হতাশা থেকে আশার আলো দেখছেন। তারা বলছেন, এখন আমরা প্রকৃত নৌকার প্রার্থী পাচ্ছি।

ফরিদুন্নাহার লাইলী বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় তার। এসএসসি পাশ করার পর ভর্তি হন কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজে। এ কলেজের ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ও সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৯—এর গণআন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের নির্দেশে এবং পরিচালনায় মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে তিনি খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামসুন্নহার হলের ভিপি হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারী পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনার গ্রেপ্তার মুহুর্ত থেকে তাঁর মুক্তি লাভ করা পর্যন্ত প্রতিদিনই তিনি মহিলা আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে সাবজেলের সামনে অবস্থান নিয়েছিল। রাজনৈতিক কারণে তাঁকে বহুবার কারাগারে যেতে হয়েছে।

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর—৪ (রামগতি ও কমলনগর) আওয়ামী লীগের যে কয়েকজন দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন তাদের মধ্যে তৃণমূলের জনপ্রিয়তায় শীর্ষে রয়েছেন ফরিদুন্নাহার লাইলী। এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে প্রতিনিয়ত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে নিজের আদর্শ, মেধা ও দূরদর্শিতা দিয়ে লক্ষ্মীপুর—৪ আসনের উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করতে চান এই প্রার্থী। এছাড়া বিগত বছর গুলোতে ফরিদুন্নাহার লাইলী আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন, সাফল্য ও অগ্রগতির কথা তুলে ধরে এই এলাকায় ব্যাপক প্রচার— প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। জনগণের কাছে উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন। নৌকা মার্কায় ভোট চাচ্ছেন ভোটারদের কাছে।

লক্ষ্মীপুর—৪ আসনের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দলীয় কর্মকান্ডের পাশাপাশি গরিব, দুস্থ ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে এলাকায় তিনি বেশ প্রশংসনীয়। কর্মীদের যে কোনো সমস্যায় তাকেই সবার আগে পাওয়া যায়। দলের যে কোনো কর্মসূচিতে তিনিই সবাইকে সংগঠিত করেন। এলাকার কোনো সমস্যায় নেতা—কর্মীদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। করোনাকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে লক্ষ্মীপুর—৪ আসনের মানুষকে আগলে রেখেছেন। নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন খাদ্য ও বস্ত্র সহায়তা দিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নসহ এলাকাবাসীর সুখে দুঃখে পাশে থেকে আসছেন। বিশেষ করে মসজিদ—মাদ্রাসা—মন্দির—গির্জাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অর্থনৈতিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। তাই এমন নেতাকেই অভিভাবক হিসেবে দেখতে চান তারা। তাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের জয়লাভ করা অনেকটা সহজ হবে বলে তারা জানান।

ফরিদুন্নাহার লাইলী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। পূর্বে তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্বে ছিলেন।

ফরিদুন্নাহার লাইলী ১২ ডিসেম্বর ১৯৫৪ সালে নোয়াখালী জেলার নোয়ান্নই ইউনিয়নের গৌরিপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম সাইদুর রহমান এবং মাতা মরহুম মাহামুদা বেগমের তৃতীয় সন্তান। তার স্বামী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবিদ মরহুম শাহ আকবর। তার একমাত্র ছেলে এস এম আকবর জাফরী ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস শেষে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জুনিয়র কনসালটেন্ট এবং তার সহধর্মিণী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে মেজর হিসেবে কর্মরত।

লক্ষ্মীপুর—৪ আসনের নৌকার মনোনয়ন পেয়ে ফরিদুন্নাহার লাইলী জয়ী হয়ে মানুষের হিতার্থে কাজ করবেন এবং দেশপ্রেমের পরাকাষ্ঠা প্রতিষ্ঠা করবেন এটাই মানুষের প্রত্যাশা।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে