শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নারীর শক্তরি প্রতীক র্দুগা

ঐন্দ্রিলা বড়–য়া
  ২৭ অক্টোবর ২০২০, ১৭:৩৫
আজ মহানবমী। নারীর শক্তির প্রতীক মা দুর্গা। চার সন্তানসহ পিতার বাড়িতে আসেন। আবার নির্দিষ্ট সময় পরে স্বামীগৃহে চলেও যান। অসুরের বিনাশকারী দেবী দুর্গাই সময়ে অসীম শক্তি ধারণ করেন। এটিই নারীর প্রকৃত রূপ। নারী বহুরূপের আধার। একই সঙ্গে শান্তি ও শক্তি, একই সঙ্গে দশভুজা ও সর্বংসহা। নারীসত্তা তাই সকল সময়ে অসুন্দরের বিরুদ্ধে জেগে ওঠে। দুর্গা যেন শাশ্বত নারীরই প্রতিবিম্ব। নারী আর দুর্গা তাই এক ও অভিন্ন।
পূজা আসার দু-এক মাস আগে থেকেই হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারীদের মনের মধ্যে শুরু হয় নিজেকে সুন্দররূপে সাজিয়ে তোলার প্রচেষ্টা। পূজা মানেই যেন লাল-সাদার আমেজ। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বড় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজা। পূজার দিন বিভিন্ন আচার-আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি পূজার বিভিন্ন দিবসের রয়েছে বৈশিষ্ট্য।
পূজার দিন ম-পে ম-পে পূজা-অর্চনা আর দেবী দর্শন করে কাটাবেন সবাই। নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী, প্রৌঢ়Ñ বাদ যাবেন না কেউ। পূজা উপলক্ষে কিন্তু নারীদের সাজ পোশাকের ক্ষেত্রে বিশেষ সাজের দিকে একটু নজর রাখতেই হয়। সবাই চায় পূজার সাজে নিজেকে সাজিয়ে তুলতে। বাঙালি নারীর সাজে শাড়ির আবেদন বহু কালের। তাই পূজাতেও নারীর পোশাকে শাড়ির প্রাধান্য সবচেয়ে বেশি। লম্বা হাতার কুঁচি দেয়া ব্লাউজ কিংবা ঘটি হাতার ব্লাউজের সঙ্গে লালপেড়ে গরদের শাড়িতে সত্যিই যেন পূজার আমেজ ফুটে ওঠে। লাল-সাদা ঢাকাই জামদানি পরলেও ভালো লাগবে। পূজাতে দেশীয় শাড়ির চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। সুতি, কাতান, বেনারসির সঙ্গে এবার চল উঠেছে সিল্কের। পিওর সিল্ক, তসর সিল্কের শাড়ির বাহার দেখতে পাওয়া যাচ্ছে দেশি ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর ফ্যাশনেও। এ সময় পূজার কাজে যেহেতু মেয়েদের ব্যস্ত থাকতে হয়, তাই আরামদায়ক শাড়ি পরাই উচিত।
বাংলা এক প্যাচের সাদা ও লাল পাড়ের শাড়ি পূজায় মেয়েদের সবচেয়ে বেশি পছন্দ। যদিও এখন লাল সাদার চেয়ে অফ হোয়াইট, হালকা গোল্ডেন জমিনের শাড়ির সঙ্গে হলুদ, কমলা, সবুজ, গোলাপি বা উজ্জ্বল রঙের পাড় লাগানো শাড়ির ফ্যাশন চলছে। এর সঙ্গে থাকতে পারে হালকা আল্পনা আঁকা, তবে পূজাতে চুমকি পুঁতির ভারী কাজের শাড়ি পরিহার করা হয়। শাড়ির সঙ্গে মানানসই ব্লাউজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুতি শাড়ির সঙ্গে সুতি কাপড়ের কোয়ার্টার হাতা বা স্টাইলিশ ঘটি হাতার ব্লাউজ পরতে পারেন। সিল্ক ও তসর সিল্ক শাড়ির সঙ্গে পরতে পারেন গোল্ডেন কালার বা কাতান ডিজাইনের ব্লাউজ। তরুণীরা নতুন স্টাইলের ব্যাক লেস ব্লাউজের সঙ্গে কোয়ার্টার বা ফুল হাতার ব্লাউজ বানিয়ে নিতে পারেন। যেহেতু একটু শীতের আমেজ এসেছে। তাই শীতের শুরুতে পূজার দিনগুলোতে নিজেকে সাজিয়ে তুলুন দেশীয় আমেজে।
সন্ধ্যে বেলায় যে কোনো পোশাক বা শাড়ির সঙ্গে হালকা খোঁপা করে একটা সাদা ফুলের মালা জড়িয়ে দিন। কপালে থাকবে একটি বড় ময়ূরকণ্ঠি টিপ। কুমকুম বা সিঁদুর পরে সিঁথির প্রান্তে একটা ছোট্ট লাল রঙের টিপ পরুন। যেহেতু সিঁদুর পরবেন সেই ক্ষেত্রে সিঁদুরটাকে কপাল থেকে লম্বা করে স্টাইলে দিতে পারেন। আজ একটু গাঢ় মেকাপ করতে পারেন। মুখ ক্লিন করে টোনিং করে নিন। ওয়াটার বেজড ফাউন্ডেশন ভালোভাবে ব্লেন্ড করে মুখে, গলায় ও ঘাড়ে লাগিয়ে নিন। এর ওপরে কম্প্যাক্টের প্রলেপ বুলিয়ে নিতে পারেন। ড্রেসের কালারের সঙ্গে মিলিয়ে বা কন্ট্রাস্ট করে চোখে শ্যাডো লাগাতে পারেন। এরপর ঘন করে মাশকারা লাগিয়ে নিন। লিপ পেন্সিল দিয়ে ঠোঁট এঁকে ডার্ক লিপস্টিক পরুন আর মানানসই ব্রোঞ্জ গ্লস দিন।
হিন্দু বিবাহিত মেয়েদের সিঁথিতে সিঁদুর থাকবে না তা তো হতেই পারে না। কারণ হিন্দু সম্প্রদায়ের বিবাহিত মেয়েদের কাছে সিঁদুর অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। খোলা চুলে চিকন করে এবং বাঁধা চুলে মোটা করে সিঁদুর পরলে ভালো লাগে। সাজসজ্জা, চেহারার ধরন, চুলের সাজ, উচ্চতাÑ সবকিছুর সঙ্গে মানায় এমনভাবেই সিঁদুর পরা ভালো দেখাবে। পূজার সাজের অন্যতম অনুষঙ্গ হলো বড় টিপ, আলতা, সিঁদুর, মেহেদি ইত্যাদি। পূজার সাজে এক প্যাঁচে পরা চওড়া পাড়ের শাড়ি, সিঁথিতে সিঁদুর, কপালে লাল টিপ, পায়ে আলতা, হাতভর্তি চুড়ির সঙ্গে শাখা এবং হাতে সাজানো পূজার থালাÑ সবমিলিয়ে পূজার সাজে পরিপূর্ণ বাঙালি নারী।
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে