স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মোঃ সায়েদুর রহমান বলেছেন, আপনারা আগের দিনেও শুনেছেন বাংলাদেশে বৈষম বিরোধী আন্দোলনে যারা আহত হয়েছেন তাদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ফাস্ট ট্র্যাক চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে।
আজ (২১ নভেম্বর) বৃহষ্পতিবার দুপুর ১ টায় জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ের সামনে জুলাই -আগষ্ট বিপ্লবে শহীদ ও আহত ছাত্র জনতার চিকিৎসা, পূনর্বাসন ও কর্মসস্থান বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আন্দোলনে আহতদের মানসিক ট্রমা বা আঘাতের বিষয়ে চিকিৎসার জন্য ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেলথে একটি কেন্দ্রীয় স্থাপনা স্থাপন করা হবে এবং দেশের সরকারি বেসরকারি যারা এ সম্বন্ধে অভিজ্ঞ আছেন তাদের এই নেটওয়ার্কের আওতায় যুক্ত করা হবে। সেখানে টেলি মেডিসিনের মাধ্যমে স্ক্রিনিং হবে এবং ইন পার্সন আহতদের কাউন্সিলিয়ের মাধ্যমে সেবা দেয়া হবে।
আহতদের বিদেশে প্রেরণ নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মোঃ সায়েদুর রহমান বলেন, এটা নিয়ে মানুষের মধ্যে কনফিউশন আছে, বিভ্রান্তি আছে। এটা আমরা স্পষ্ট করতে চাই, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আমরা স্পষ্ট করতে চাই যার যার প্রয়োজন ও উন্নত চিকিৎসা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনারা ইতিমধ্যে জেনেছেন রোগী এয়ার এম্বুলেন্সের মাধ্যমে শিফ্ট করা হয়েছে। আজকেও একজন যাবেন। গতকালও একজন গিয়েছেন। যখনই যার প্রয়োজন সেই রোগীদেরকে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত হওয়ার সাথে সাথে সুনিদিষ্ট পদ্ধতি মেনে সেই হাসপাতাল থেকে সুপারিশের ভিত্তিতে একটি বিশেষজ্ঞ টিমের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও পরিবার ও কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে তাদেরকে বিদেশে হাসপাতালে পাঠানোর সব রকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়াও দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসনে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন,ছাত্র-শ্রমিক-জনতার জুলাই-আগষ্ট অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের তালিকা প্রনয়ণের লক্ষ্যে চলমান কাজের গতি বৃদ্ধি করে যথাযথ যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অতিদ্রুত নির্ভুল ও সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করার কাজ চলছে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে চাই আহতদের এই লিস্টটা আজকে নয়, বিশ বছর পরে হলেও যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। সেজন্য সময় নিয়ে হলেও বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারদের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে আমরা ভেরিফিকেশন করছি। আমরা নভেম্বরের ভেতর চেষ্টা করব শহীদ পরিবারের যে তথ্য আছে সেটার ভেরিফিকেশন শেষ করতে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শহীদ এবং আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা আমাদের থাকবে।
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বলেন, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে আহতদের শ্রেণীকরণের উপর ভিত্তি করে প্রাথমিকভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদানের সর্বোচ্চসীমা ১ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করা হয়েছে।
গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলের দলনেতা খন্দকার জহিরুল ইসলাম (অতিরিক্ত সচিব) বলেন, আহতদের পূনর্বাসনের একটা সুনির্দিষ্ট নীতিমালা সরকার থেকে করা হবে। জুলাইয়ের আন্দোলনে অনেকে আহত হয়েছেন, যারা শারীরিকভাবে আহত হয়ে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যাতে কর্মজীবনে ফিরে আসার পথ ব্যাহত হতে পারে। এজন্য সরকার কিছু অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবে যাতে আহতদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়। যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবার এবং যারা আহত হয়ে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা সরকারের আছে।
যাযাদি/এসএস